You must need to login..!
Description
স্টাফ রির্পোটার,বিএমটিভি নিউজঃ শিশু সঙ্গীতশিল্পী ঈশান দে সম্প্রতি আরটিভিতে প্রচারিত বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন এবং টফি আয়োজিত স্টার সার্চ ট্যালেন্ট হান্ট রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করে সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন বিষয়ের ট্যালেন্টদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ফাস্ট রানার্সআপ অর্থাৎ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। মাত্র ১১ বছর ৪ মাস বয়সী ঈশান দে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়ার এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে তার জন্মগ্রহণ করে। পিতা স্বাধীন দে একটি স্থানীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এবং মাতা শর্মিলা রানী সিংহ একটি কলেজের প্রভাষক। টফি স্টার সার্চ ট্যালেন্ট হান্ট রিয়েলিটি শোতে তার যাত্রা শুরু হয় ৯ ডিসেম্বর থেকে এবং চুড়ান্ত অনুষ্ঠান হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি।
গান, নাচ আবৃত্তি ,অভিনয়, ফুটবল স্কিলিং, বাদ্যযন্ত্র বাদকসহ অসংখ্য প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সঙ্গীত বিষয়ে সর্বকনিষ্ঠ প্রতিযোগী ঈশান দে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী এবং রিয়েলিটি শো-এ বিজয়ীদের সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হয়। ৩০ জন মেধাবী প্রতিযোগী নিয়ে শুরু হওয়া সরাসরি স্টুডিও রাউন্ডে ঈশান দে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে বিচারক, আয়োজকসহ সকলের মন জয় করে নেয়। প্রতিযোগিতা চলাকালীন ঈশান প্রচন্ডভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও দিনে চার বার নেবুলাইজ চালু রেখেও এগিয়ে যায় সে। অদম্য ঈশান ঠিক করে নিয়েছিল তাকে সমস্ত বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। একে একে উপমহাদেশের বিখ্যাত শিল্পীদের জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে সে দর্শক-মনে সহজেই জায়গা করে নেয়। ঈশান দের আত্মপ্রকাশ ঘটে করোনা মহামারীর মাঝামাঝি সময়ে ঘরে বসে মোবাইলে রেকর্ড করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের মাধ্যমে। তার গানে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বব্যাপী চালু হওয়া বিভিন্ন পেইজের লাইভে গান গাওয়ার প্রস্তাব আসে। ঈশান বিভিন্ন পেইজ থেকে ভাইরালও হয় বিখ্যাত সমস্ত গান গেয়ে। ক্ষুদে শিল্পী ঈশান সব ধরনের গান গাইতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তবে সেমি ক্লাসিক্যাল গান গুলো তার বেশি পছন্দের। ঈশান দে উপমহাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী মান্না দে,র গান গেয়ে দর্শকদের কাছে ক্ষুদে মান্না দে হিসেবেও আখ্যায়িত হয় । অল্প বয়সের এই ঈশানকে অনেকে সংগীতের বিস্ময়বালক হিসেবেও আখ্যা দেয়। টফি স্টার সার্চ প্রতিযোগিতায় তার ফার্স্ট রানারআপ হওয়াকে কেন্দ্র করে অনেকের ভিতরেই তাকে নিয়ে জন্ম নিয়েছে নতুন আগ্রহ। তার জন্য সকলের কাছে শুভকামনা চান তার পিতা-মাতা। তার পিতা বলেন :’ঈশানের পথচলা সঙ্গীতের সাথেই থাকুক এই আমার আশা। অল্প
বয়সে তার এ অর্জন আমাদেরকে আরো বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার আলো দেখিয়েছে। যারা তার গানকে ভালোবাসে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং তার জন্য সকলের আশির্বাদ প্রার্থনা করছি।
২০১৫ সালে ঈশানের সংগীত শিক্ষা শুরু হয় শ্রদ্ধেয় ওস্তাদ চয়ন সেন এর হাতে, পরবর্তী সময় সুযোগ্য ওস্তাদ মামুনুল ইসলাম রনি স্যারের নিকট শাস্রীয় সঙ্গীত শিক্ষা অর্জন শুরু করে ঈশান। যদিও পারিবারিকভাবেই তার সঙ্গীত প্রতিভা বুঝতে পেরে প্রথমে ঈশানের
পিশিমনি সাথী দাস ওকে হারমনি ধরাতে শুরু করেন। সঙ্গীতগুরুদ্বয়ের দক্ষ নির্দেশনায় ঈশান সঙ্গীতে এগিয়ে যাচ্ছে।এছাড়াও ময়মনসিংহ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সংগীত বিভাগের প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণের শিক্ষাও গ্রহণ করছে ঈশান।
ঈশানের সঙ্গীতগুরু মামুনুল ইসলাম বলেন : ‘বয়সে ছোট হলেও খুব সহজেই ঈশান কঠিন বিষয়কেও আয়ত্ত্বে নিয়ে নিতে পারে। সঙ্গীতে তার মগ্নতা এবং পরিশ্রম আজকের এ অর্জন এনে দিয়েছে। একাগ্রচিত্তে চর্চা করে গেলে সে একজন আলোকিত মানুষ হয়ে উঠবে সঙ্গীত জগতে। তার সঙ্গীত প্রতিভা অসামান্য। ‘
ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ঈশান উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণ করে ইতোমধ্যেই প্রায় ত্রিশটি পদক ও সনদ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে। সে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা আয়োজিত জাতীয় শিশু কিশোর পদক ২০১৯ ইং এ সারা বাংলাদেশ এ (২য় স্থান) জাতীয় পুরষ্কার অর্জন করে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে জয়নুল আবেদীনের কথা ও সুরে ঈশানের ‘হৃদস্পন্দনে মুজিব ‘ শিরোনামে একটি মৌলিক গান প্রকাশ হয়। এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জন্য জেলা শিল্পকলা একাডেমি ঈশানের দুটি মৌলিক গান রেকর্ড করে। আরো কিছু মৌলিক গান প্রকাশের কাজ চলছে ঈশানের। টফির আয়োজনে বিজয়ের অনুভূতি জানতে চাইলে ঈশান জানায় : ‘আমি খুবই আনন্দিত এই বিজয়ে। আমার পিতা -মাতা এবং শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আরটিভি, টফি এবং আয়োজনের বিচারকদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আমার জন্য আশির্বাদ করবেন যাতে আমি সবসময়ই আপনাদের গান শোনাতে পারি।