You must need to login..!
Description
মাহমুদুল হাসান মিলন, বিএমটিভি নিউজঃ চাল-ডালে খিচুড়ি হয়। প্রচলিত খাবার। কিন্তু চাল-ডালে জিলাপি হয়- এ কথা শুনলে অনেকেই ভ্রু কুঁচকে তাকাবেন। হবেন বিস্মিত। কিন্তু সেই বিস্ময়কর চাল-ডালের তৈরি জিলাপি প্রায় ৩০ বছর ধরে বিক্রি হচ্ছে হোটেল মেহেরবানে।
ময়মনসিংহ নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে এই হোটেলের অবস্থান। ছোট্ট একটি ফেস্টুনে শুধু লেখা ‘হোটেল মেহেরবান’। এ ছাড়া নেই কোনো সুদৃশ্য সাইনবোর্ড বা এই অভিনব রেসিপি প্রচারের ব্যবস্থা। কিন্তু তারপরও রসনাবিলাসী নগরবাসীর মুখে মুখে ফেরে এই হোটেলের নাম। এবং বলাবাহুল্য সারাবছর বিক্রি হলেও রোজায় চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। জিলাপি কিনতে বিকাল থেকেই বাড়তে থাকে ক্রেতার সংখ্যা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে হোটেলে শুরু হয় জিলাপি তৈরির প্রস্তুতি। যদিও রোজার কারণে এ সময় হোটেলের সামনে চাদর টানানো থাকে। এই রেসিপির আবিষ্কারক জাকির হোসেন (৬০)। তিনি বলেন, ‘ত্রিশ বছর ধরে আমি জিলাপি তৈরির কারিগর হিসেবে কাজ করছি। আগে ময়দা, আটা, ডাল ও বেসন দিয়ে নিয়মিত জিলাপি বানাতাম। এ ধরনের জিলাপি সবাই বানায়। একদিন চিন্তা করলাম, ডাল-চালের গুঁড়ো দিয়ে জিলাপি বানালে কেমন হয়? সাহস করে বানিয়ে ফেললাম। ক্রেতাও লুফে নিলো। ধীরে ধীরে বাড়তে লাগলো এর চাহিদা।’জাকির হোসেনকে এ কাজে সহায়তা করেন কয়েকজন কারিগর।
রোজায় চাহিদা বেড়ে যায় বলে কারিগরের সংখ্যাও বাড়ানো হয়। বর্তমানে ২৭জন কারিগর কাজ করছেন বলে জানান তিনি। শুধু তাই নয়, মান ধরে রাখার চেষ্টা করেন জাকির। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতিবার জিলাপি ভাজতে নতুন তেল ব্যবহার করি। একবার ব্যবহার করা তেল দ্বিতীয়বার ব্যবহার করি না। তাছাড়া এখানে ক্ষতিকর কোনো কেমিক্যাল পাবেন না। যে কারণে স্বাদ ভালো হয়।’
১৬০ টাকা থেকে ২৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় চাল-ডালের জিলাপি। প্রতিদিন গড়ে আড়াইশ থেকে তিনশ কেজি বিক্রি হয় বলে জানান জাকির হোসেন।
নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতা হোটেল মেহেরবানে জিলাপি কিনতে আসেন। কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাদে টক মিষ্টি এই জিলাপি ময়মনসিংহের ইফতারের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে গেছে। এবং শহরের কোথাও এই জিলাপি তৈরি হয় না।