‘জিয়াউর রহমান নেতা ছিলেন না, তাঁর সফলতার কারণেই তিনি নেতা হয়েছিলেন’

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ 
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তাগণ বলেছেন, জিয়াউর রহমান নেতা ছিলেন না। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর সফলতার জন্য তিনি নেতা হয়েছিলেন। তিনি কোনো দিন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো কটুবাক্য উচ্চারণ করেননি। আজ জিয়ার অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার কারো অবদানই স্বীকার করতে চায় না। জিয়াউর রহমান জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
শুক্রবার ময়মনসিংহে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে নগরীর বিএনপি কার্যালয়ের পাশে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত শহীদ জিয়ার কর্মময় জীবন ভিত্তিক বই ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড় দুঃসময়ে দেশের জন্য কাজ করেছেন শহীদ জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যখন কেউ দেশের স্বাধীনতার চিন্তা করেননি তখন তিনি সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ ঘোষণা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। যিনি এতবড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে যাঁরা মিথ্যাচার করেন, তাদের কী বলা যাবে ভাষা খোঁজে পাইনা। বর্তমান সরকার কারো অবদানই স্বীকার করতে চায় না। জিয়াউর রহমান ছিলেন সর্বোত্তম ব্যক্তি। তাঁর খেতাব বীর উত্তম কেড়ে নিতে পারেন না। ইন্দিরা গান্ধী নিজেই বলেছেন তিনি কখনো শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে শোনেননি। তারাতো ইন্দিরা গান্ধীকে সে কথা জিজ্ঞেস করলেন না। আজকে জিয়ার নাম উচ্চারণ করতে তাদের হিংসা হয়। জিয়াউর রহমান জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। জনগণ তাঁকে ভালোবাসেন। যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই জিয়ার অবদান দেখতে পাবেন। বাংলাদেশের মুল উন্নয়ন বিএনপির হাতেই হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সভাপতিত্বে নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, সাবেক ডীন অধ্যাপিকা তাজমেরী ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলাম ও উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার। ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলুসহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক বলেন, আমি বিএনপি করি না কিন্তু বিএনপিকে ভালোবাসি। জিয়াউর রহমান একবার মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং ঐতিহাসিক ৭ নবেম্বর তিনি দ্বিতীয়বার জাতীয় বীর হয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান সেদিন দেশ বাচাঁনোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলেই দেশটি বেচে যায়। তিনি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য আনসার ও ভিডিপি এবং পুলিশ বাহিনী গঠন করেছিলেন। সেনাবাহিনীর বিগ্রেড তিনি করেছিলেন। পদ্মা সেতু দেশের একমাত্র উন্নয়ন নয়। এটি নির্মাণে যত টাকা ব্যয় হয়েছে তার একটা বড় অংশ পাচার করা হয়েছে বলে মানুষের ধারণা। জিয়া কোনো দিন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো কটুবাক্য উচ্চারণ করেননি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, দেশপ্রেমের জন্য মানুষ শহীদ জিয়াকে ভালোবাসেন। জিয়া বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করে গেছেন। জিয়া নেতা ছিলেন না। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর সফলতার জন্য তিনি নেতা হয়েছিলেন। সঙ্কটের সময়ে বিশ্বের দরবারে তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। ভারতের সাথে দেশের যতগুলো চুক্তি হয়েছে তারমধ্যে গঙ্গা চুক্তি ছিল ভারসাম্যপুর্ণ। জিয়াকে রাজনৈতিক কারণে মিস আন্ডার স্ট্যান্ডিং করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. তাজমেরী ইসলাম বলেন, জিয়া ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। তিনি মাত্র ৬৩ মাসে উন্নয়নের নজীর স্থাপন করে গেছেন। ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তিনি দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষের প্রসংশা কুড়িয়েছেন। শহীদ জিয়া নারী ও শিশুদের জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। এক বছরে ১৮ শো নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। কোনো বিচার নেই। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে জনগণ মুক্তি চায়।
সামনে ক্ষমতা আর পেছনে জেল-জুলুমের কথা উল্লেখ করে ইলিয়াস খান বলেন, জিয়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভবনটিও তিনি করে দিয়েছেন। আজ জিয়ার অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক কোটি মানুষ বিদেশে পাঠিয়ে রেমিট্যান্স এনেছেন। গার্মেন্টসের পণ্য রপ্তানি করে দেশের উন্নয়নে জিয়া অবদান রেখেছেন। পদ্মা সেতুর প্রথম দিকের কাজ বেগম জিয়া করে গেছেন। যে কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেই টাকা এখন কয়েক গুণ হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত নিগৃহীত হচ্ছেন। ভুল শিখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।##