You must need to login..!
Description
বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ
ঢাকার উত্তরায় ফ্লাইওভারের গার্ডার দুর্ঘটনায় নিহত আইয়ুব হোসেন রুবেলের মরদেহ নিতে গতকাল তার একাধিক স্ত্রী ও সন্তানরা হাজির হন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের সামনে। লাশ হস্তান্তর নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। মর্গের সামনে হাজির হওয়া পাঁচ স্ত্রীর কেউ কাউকে চিনতেন না। অবশেষে স্ত্রীদের মধ্যে হয় সমঝোতা। প্রথম স্ত্রী রেহানা ও সন্তান হৃদয়ের কাছেই হস্তান্তর করা হয় রুবেলের মরদেহ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগরে পৌঁছায় রুবেলের লাশবাহী এম্বুলেন্স। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজনগর দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তার দ্বিতীয় জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য, সোমবার প্রথম স্ত্রীর সন্তান হৃদয়ের বৌভাত শেষে ছেলে ও পুত্রবধূকে নিয়ে প্রাইভেট কারে রওনা দেন রুবেল। এ সময় তিনি প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন। পরে উত্তরার নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারে গার্ডার দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে রুবেলসহ পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন তার ছেলে ও পুত্রবধূ।
এরপর গতকাল ময়নাতদন্তের জন্য রুবেলের মরদেহ নেয়া হয় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে। সেখানে হাজির হন একাধিক স্ত্রী ও সন্তানরা। লাশের দাবিতে একে একে পাঁচজন স্ত্রী হাজির হন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের সামনে। তারা সবাই নিহত রুবেলের স্ত্রী দাবি করছেন। শেষ পর্যন্ত রুবেলের সাতজন স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়।
নিহত রুবেলের স্ত্রীদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রুবেলের প্রথম স্ত্রীর নাম রেহানা। তার সঙ্গে বিয়ে হয় ৩০ বছর আগে। সেই ঘরের প্রথম ছেলেসন্তান হৃদয় সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরেন। প্রথম স্ত্রী রেহানার ভগ্নিপতি রহমত জানান, আমরা শরীয়তপুরে থাকি। আমাদের রুবেল বায়িং হাউজের ব্যবসা করতেন বলে জানতাম। আমরা তেমন একটা ঢাকায় আসতাম না। মৃত্যুর খবর শুনে আসলাম। শুনেছিলাম সে দ্বিতীয় আরেকটা বিয়ে করেছেন।
এদিকে রুবেলের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম শাহেদা। তার ঘরে রত্না নামে ১৪ বছরের একটি মেয়ে আছে। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ সিংগাইর এলাকায়। ঢাকায় উত্তরা থাকেন। তবে দ্বিতীয় স্ত্রী শাহেদা নিজেকে প্রথম স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে ১৯৯৯ সালে বিয়ে হয়েছে। আমিই প্রথম। আমাকে সে কখনো বলেনি তার আরেকজন স্ত্রী আছে।
রুবেলের তৃতীয় স্ত্রী দাবি করা আরেক নারীর নাম সালমা আক্তার পুতুল। মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় থাকেন তিনি। ঘরে বসে সেলাই মেশিনের কাজ করেন। ২০১৪ সালে রুবেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। রুবেলের সম্পর্কে তিনি জানতেন সে একজন ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী। পুতুল জানান, একাধিক বিয়ের অভিযোগে রুবেলের বিরুদ্ধে তিনি মামলাও করেন। গত ১১ই আগস্ট রুবেলের সঙ্গে তার সর্বশেষ দেখা হয়েছিল। তার কাছ থেকে রুবেল জমি কেনার কথা বলে ১১ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে দাবি করেন এই নারী।
এছাড়া খন্দকার বিউটি নামে আরেক নারী রুবেলের স্ত্রীর দাবি নিয়ে মর্গে আসেন। এই নারীর দাবি, গাড়ি কেনার কথা বলে রুবেল তার কাছ থেকে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা নিয়েছিলেন।
অন্যদিকে নিপা আকতার নামে এক নারী দাবি করেন, রুবেল তার বাবা। আর তার মা নার্গিস বেগম অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করছেন। রুবেলের সন্তান দাবি করা গৃহবধূ নিপা তার বাবার সাতটি বিয়ের খবর দেন। তিনি বলেন, বাবা অন্তত সাতটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী টিপু আকতার সন্তান জন্ম দেয়ার সময় মারা গেছেন। পারভীন পুষ্পা নামে টঙ্গীতে বাবার আরেক স্ত্রী আছে।