অজ্ঞান না করেই অস্ত্রোপচারের অভিযোগঃ প্রাণ গেল যমজ সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বার

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ  

ময়মনসিংহে কিডনিতে পাথর অস্ত্রোপচারের পর রেখা আক্তার (২৫) নামের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে । তিনি যমজ সন্তানের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গৃহবধু ও গর্ভের যমজ ২সন্তানের মৃত্যুর প্রতিবাদে স্বজনরা হাসপাতালে গেইটে লাশ রেখে প্রতিবাদ জানালে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তালা বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে যায়। স্বজনদের অভিযোগ, অজ্ঞান না করেই ওই নারীকে অস্ত্রোপচার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১টার দিকে নগরীর চর ব্রাহ্মপল্লী এলাকার পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। রেখা আক্তার জেলার ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া এলাকার মাহবুল আলমের স্ত্রী। তিনি ১৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
রেখার স্বামী মাহবুল আলম বলেন, ‘আমার স্ত্রীর গর্ভে দুটি সন্তান ছিল। সম্প্রতি পরীক্ষা করে তার কিডনিতে পাথর ধরা পড়ে। পরে একজনের পরামর্শে পেশেন্ট হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, পেটে বাচ্চা রেখেই অস্ত্রোপচার করা। এতে কোনো সমস্যা হবে না।

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে রেখাকে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথমে রাত ৮টায় অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। পরে ১০টায় করা হবে বলে জানানো হয়। তবে রাত ১০টায় অস্ত্রোপচার না করে ১টার দিকে করা হয়। অস্ত্রোপচার শুরুর পর ওটির (অস্ত্রোপচার কক্ষ) ভেতর থেকে চিৎকার শুনতে পাই। এর কারণ জানতে চাইলে একজন নার্স বলেন, অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। তাই, এমন চিৎকার করছেন। এরপর আমরা আরও অনেকবার ওটির ভেতর থেকে চিৎকার শুনতে পাই। অস্ত্রোপচার শেষে রোগীকে পোস্ট-অপারেটিভ রুমে রেখে সবাই চলে যান।’

স্বজনদের অভিযোগ, বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালের চারপাশে লোকজন জড়ো হন। এসময় ক্লিনিক মালিক ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতালে তালা লাগিয়ে চলে যান। পরে পুলিশ এসে মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

রেখার বড় ভাই আব্দুল জব্বার বলেন, ‘অজ্ঞান করা ছাড়াই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পরে অবস্থা খারাপ হলে আরেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। নেওয়ার পথে আমার বোন মারা গেছেন। তার পেটের দুটি সন্তানও মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।’এ বিষয়ে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ‘অস্ত্রোপচার কোন চিকিৎসক করেছেন আমার নেই। রোগীর লোকজন বিষয়টি বলতে পারবেন। আমি ঢাকায় আছি। সেখান থেকে ফিরে বিস্তারিত জানানো যাবে।’ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, নিহতের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার যমজ সন্তান ছিল। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কোনো অস্ত্রোপচার করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা নারীর অবস্থা যদি খারাপ হয়, তাহলে অস্ত্রোপচার করা যাবে। তা নাহলে অস্ত্রোপচার করার সুযোগ নেই।’

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার