বৃহত্তর ময়মনসিংহে বঙ্গবন্ধু

image

You must need to login..!

Description

মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান ঃ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তাান। ময়মনসিংহ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভিন্ন কারণেই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখলকরে আছে। তাই বঙ্গবন্ধু একাধিকবার বৃহত্তর ময়মনসিংহে সফর করেছেন। তবে বঙ্গবন্ধু ঠিক কতবার ময়মনসিংহে এসেছেন তা বলা মুশকিল। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলে থাকেন বঙ্গবন্ধু ৫০ বারের অধিক ময়মনসিংহে এসেছেন। তখন ময়মনসিংহ এলাকা ছিল কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, শেরপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর ও টাঙ্গাইল জেলা নিয়ে। আজকের নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুর ময়মনসিংহের এসব জেলাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সফর তুলে ধরার প্রয়াস করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের কাগমারী সম্মেলন:
৭-১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭ সালে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের এ সম্মেলন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। উক্ত সম্মেলনে ভাসানী পাকিস্তানি শাসকদের হুশিয়ার করে বলেন, যদি পূর্ব পাকিস্তানে শোষণ অব্যাহত থাকে তবে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানকে “আসসালামু আলাইকুম ” জানাতে বাধ্য হবেন। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বঙ্গবন্ধুও অংশগ্রহণ করতে টাঙ্গাইল সফর করেন।

ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভা:
জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমান ১৬ জানুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে সার্কিট হাউস ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় ঘোষণা করেন যে, আমাদের আদর্শ চীন, রাশিয়া বা আমেরিকা হইতে আমদানি হবে না, আমাদের আদর্শ এই দেশের মাটি, সম্পদ ও জনগণের ইচ্ছার উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতা উত্তর ২২ বছরে দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, মধ্যবিত্ত তথা আপামর জনসাধারণের শোচনীয় অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক ও সামাজিক দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে দেশে এক শ্রেণীর লোক দিনের পর দিন সকল সম্পদ কুক্ষিগত করে চলেছে, অপরদিকে সাধারণ মানুষ না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য পাকিস্তানের বাইশটি পরিবারের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম।
বিগত বাইশ বৎসরে পূর্ব বাংলার সর্বনাশা বন্যা সমস্যার সমাধান না হওয়ার জন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে যদি সিন্ধু অববাহিকাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা গুরুত্বসহকারে বাস্তবায়ন করা হয় তবে পূর্ব বাংলার সর্বনাশা বন্যা নিয়ন্ত্রণ এতদিনে বাস্তবায়িত হয় নি কেন? তিনি বলেন, তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পশ্চিম পাকিস্তানের সকল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানে ১১ শত কোটি টাকা ব্যয় হয় নাই। তিনি দাবী করেন যে, এই ১১শ কোটি টাকা ব্যয় করা ব্যতীত চতুর্থ পরিকল্পনা যেন গ্রহণ করা না হয়।
শেখ মুজিবর রহমান বলেন, ছয়দফা কর্মসূচীকে যারা বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে আখ্যায়িত করেন, তাদের সমালোচনা করে শেখ মুজিব বলেন, আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদী নই এবং আলাদা হতে চাই না কারণ দেশের শতকরা ৫৬ জন নাগরিক আমরাই।

কিশোরগঞ্জের জনসভায় শেখ মুজিব:
তৎকালীন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবর রহমান ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামের জনসভায় ঘোষণা করেন, তাঁর দল ক্ষমতায় আসলে ১০ বৎসরের মধ্যে সকল ভুমিরাজস্ব মাফ করে দেওয়া হবে। তিনি জনগণের নিকট হতে মোহাজের ট্যাক্স নামে যে অর্থ আদায় করা হয়েছে তার হিসাব প্রকাশের জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার প্রতি অনুরোধ জানান। শেখ মুজিব নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, ধর্মীয় বা বিপ্লবী শ্লোগানের দ্বারা নির্বাচন বানচালের কোন ষড়যন্ত্রই সহ্য করা হবেনা।

মুক্তাগাছায় শেখ মুজিব:
শেখ মুজিবর রহমান দেশ হইতে দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের মূলোৎপাটনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে মৌলিকগণতন্ত্র পদ্ধতি বাতিলের জন্য প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহবান জানান ওই জনসভায়। তিনি ইউনিয়ন ও জেলা কাউন্সিল এবং মিউনিসিপালিটি ও টাউন কমিটির প্রত্যক্ষ নির্বাচনও দাবি করেন। দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত স্কুল, শিক্ষক ও সমাজকর্মীদের মধ্য হতে সদস্য মনোনীত করে সংস্থা গঠনের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে কাজ চালানো যায় বলে
তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, স্বায়ত্তশাসনই বাঙ্গালি, সিন্ধী, বেলুচি ও পাঠানদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক স্বকীয়তা বজায়ের নিশ্চয়তা দিতে পারে।

টাঙ্গাইলে কাদের সিদ্দিকীর অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু:
টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাক আসে, কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তারা বঙ্গবন্ধুর পায়ের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করবেন। কাদেরিয়া বাহিনীর ডাকে হাজার হাজার যোদ্ধার কাছ থেকে অস্ত্র গ্রহণের জন্য ওই সময় বঙ্গবন্ধুর সশরীরে টাঙ্গাইলে যাওয়া কঠিন ছিল। তবুও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব বাধা পেরিয়ে নিজের পুত্রসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি কাদেরিয়া বাহিনীর হাজার হাজার সদস্য দ্বারা সৃষ্ট নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে লাখো জনতার সঙ্গে মিশে সেদিন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কাছ থেকে অস্ত্র গ্রহণ করেন। টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী বয়েজ স্কুল মাঠে বঙ্গবীর নিজের ব্যবহূত একটি অস্ত্র বঙ্গবন্ধুর পায়ে সঁপে দিয়ে অস্ত্র জমাদানের সূচনা করেন। বিন্দুবাসিনী স্কুলের মাঠে অস্ত্র সমর্পণের অনুষ্ঠান হয়।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের জনসভায় বঙ্গবন্ধু:
নির্বাচনী গণসংযোগ সফরের প্রথম দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩ তারিখে ঈশ্বরগঞ্জে জনসভায় ঘোষণা করেন, বাংলাদেশের মাটিতেই যুদ্ধবন্দীদের বিচার হবে। মআটক বাঙ্গালীদের ফিরিয়ে আনা হবে। বঙ্গবন্ধু বলেন, কোন কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে ভরাডুবি নিশ্চিত জেনে নির্বাচন বর্জনের উছিলা খুঁজছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রধান উল্লেখযোগ্য ছিল নির্বাচন ও জাতীয় পুনর্গঠন। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়া বলেন যে, বাংলাদেশের মাটিতে কোন বিদেশী সৈন্য নেই। বঙ্গবন্ধু বলেন, সোনার বাংলার স¦প্ন দেখার অপরাধে আমার জন্য ফাঁসির দড়ি ঝুলেছিল। কিন্তু সে অবস্থাতেও আমি আমার মাথা নত করি নি। বাংলার জনসাধারণ অনুরূপভাবে পাকিস্তানী বর্বরদের নিকট মাথা নত করে নি। তিনি উল্লেখ করেন, তিনি বিগত নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হইতে পারতেন। কিন্তু জনগণ এবং ভবিষ্যৎ বংশধরনের স¦ার্থে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন নি।

জামালপুরে বঙ্গবন্ধু:
বঙ্গবন্ধু জামালপুরে বক্তৃতার প্রসঙ্গে মুজিবরনগর সরকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি ভারতের জনসাধারণ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সাহায্য ব্যতিরেকে এবং ভারতে এক কোটি শরনার্থী আশ্রয় না পেলে স¦াধীনতা অর্জন করা সহজ হতো না। স¦াধীনতার পর সরকারের কার্যক্রমের উল্লেখ করে তিনি বলেন, স¦াধীনতার পর ৫০ লক্ষ লোক লোক প্রাণ হারাবে বলিয়া আশংকা প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার কাউকেও অনাহারে থাকতে দেয় নি এবং সেই আশংকাকে অমূলক বলে প্রমাণ করেছে।

নেত্রকোনায় বঙ্গবন্ধু:
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩ তারিখে নেত্রকোনার স্থানীয় কলেজ ময়দানের জনসভায় ঘোষণা করেন যে, বাংলাদেশ জাতীয় মর্যাদা এবং স¦াধীনতার বিনিময়ে বৈদেশিক সাহায্য গ্রহণ করবে না। বক্তৃতায় বলেন, দেশ পুনর্গঠনের জন্য আমরা বৈদেশিক সাহায্য গ্রহণ করব বটে, তবে তা জাতীয় মান মর্যাদা এবং স¦াধীনতার বিনিময়ে নয়।
বঙ্গবন্ধু বলেন, তিনি কখনো কারো কাছে শির নত করেন নি। আইয়ুব ইয়াহিয়ার মত ডিক্টেটরদের কাছেও তিনি নতি স¦ীকার করেন নি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় স¦ার্থে বিজ্ঞতার সাথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইচ্ছা করলে ক্ষমতার অধিষ্ঠিত থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি জনগণকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দানের জন্য নির্বাচন দিয়েছেন।

ময়মনসিংহে বঙ্গবন্ধু:
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বন্যায় ক্ষেতের ফসল, আশ্রয় আর সহায়সম্পদ হারানো দুর্গত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্যে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান এ সফরে। ময়মনসিংহ, পাবনা ও রংপুর জেলার বন্যা প্লাবিত এলাকাসমূহে ব্যাপক সফরের পর ৩০ শে জুন, ১৯৭৩ তারিখে রাজশাহীর নাটোরে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু বলেন বর্তমানে দেশের সত্তর লক্ষ মানুষ সর্বনাশা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ক্ষেতের ফসল, বাড়িঘর আর সহায়-সম্পদ হারানো এইসব মানুষের জন্যে অবিলম্বে সাহায্য ও আশ্রয়ের প্রয়োজন। দুঃখ দুর্দশা লাঘবের জন্যে সরকার সম্ভাব্য সব রকমের ব্যবস্থা নেবেন বলে বঙ্গবন্ধু দৃঢ় আশ্বাস দেন।

ভৈরব সেতু উদ্বোধনকালে বঙ্গবন্ধু:
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৭শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে ভৈরব সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে রেলওয়ে ময়দানে আয়োজিত জনসভায় ঘোষণা করেন, সমাজবিরোধী ও দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানা হবে। সে আঘাত হানার এখন সময় এসেছে। বঙ্গবন্ধু বলেন, দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি, ঘুষখোর কর্মচারী, রিলিফ চোর, দুস্কৃতিকারীরা অমানুষ ও পশু। তিনি বলেন এদের ধ্বংস করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন যে, পাকবাহিনী যে ৩শটি পুল সেতু বিনষ্ট করেছে আজ থেকে সবকটি পুননির্মাণ ও মেরামত সমাপ্ত হলো। তিনি বলেন, পাকবাহিনী যে ব্যাপক ধ্বংস সাধন করেছে তা এক দিনে ঠিক করে ফেলা সম্ভব নয়। সময় লাগবে। তিনি বলেন, আমরা শত্রুদের ৫০ লাখ লোকের না খেয়ে মরার হিসাবকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছি। ২০ মাসে ৩৮ লাখ টন খাদ্য জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রায় সোয়া’শ কোটি বৈদেশিক মুদ্রাও খরচ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি স্মরণ করেন যে,
স্বাধীনতার পর আমাদের কোন বৈদেশিক মুদ্রা ও গুদামে খাবার ছিলো না। এ প্রসঙ্গে তিনি ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ ও কলকারখানা থেকে পুঁজিপতিদের উৎখাতের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর কোনদিন দেশবাসীর সাথে বেঈমানী করে নাই। ইয়াহিয়ার সাথে ফাঁসিরকাষ্ঠ আমাকে বিচলিত করতে পারেনি। আমি যতদিন বাঁচি জনতার সাথে আছি, থাকবো। আপনাদের ভালোবাসা নিয়েই যেনো আমি মরতে পারি, দোয়া করবেন।

কাগমারী মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজের হস্তান্তরের ফলক উন্মোচনকালে বঙ্গবন্ধু:
বাঁচার সংগ্রামে লিপ্ত অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের সংগ্রামে নিয়োজিত দুখী মানুষের মুখে আকাংক্ষিত হাসি ফুটাবার জন্য বঙ্গবন্ধু ৮ মার্চ, ১৯৭৫ তারিখে কাগমারীর বিশাল জনসভায় ভাষণদানকালে সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করেন। অগণিত মানুষের অভুতপূর্ব আন্তরিক ও স্বতঃস্ফুর্ত সম্বর্ধনায় সিক্ত ৬ মাইল বিস্তৃত ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়ক দীর্ঘ ৬ ঘন্টায় অতিক্রমের পর বঙ্গবন্ধু অনুষ্ঠানস্থলে পৌছেন।
অভিভাবকদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেন, আপনারা সোনার মানুষ গড়ে তোলেন, আপনাদের ছেলেমেয়েদের মানুষ করে তুলুন। তিনি বলেন, দুর্নীতির মধ্যে যাহারা মাথা ডুবাইয়া আছে, তাহারা যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, তখন লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে যায়। মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমি আজ খুশী হয়েছি। কারণ, মওলানা সাহেব আামাকে কলেজটি সরকারি করার জন্য চিঠি লিখেছিলেন। কাজেই মাওলানা সাহেবকে খুশী করতে পারায় আমি খুশী হয়েছি। বঙ্গবন্ধু বলেন, তাঁকে (মওলানাকে) সন্তুষ্ট করা আমার কর্তব্য।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু অনেকবার ময়মনসিংহে এসেছেন। ময়মনসিংহ সফরকালে বঙ্গবন্ধু যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তার কিছুটা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো। এর থেকে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাবে বলে আমার বিশ্বাস।

এর বাইরেও বঙ্গবন্ধু অনেকবার বৃহত্তর ময়মনসিংহে ভ্রমণ করেছেন। তৎসময়ের পত্রপত্রিকার আলোকে উপর্যুক্ত তথ্য থেকে ময়মনসিংহের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কিছু জানতে পারলে এ লেখা সার্থক হবে।
তথ্যসূত্র: এ লেখা ও তথ্যগুলো ওই সময়ে প্রকাশিত দৈনিক বাংলা, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক আজাদ, দৈনিক অবজারভার পত্রিকা থেকে নেওয়া হয়েছে।

লেখক: উপপ্রধান তথ্য অফিসার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, ময়মনসিংহ।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার