১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টার মাইন্ড ছিলেন জেনারেল জিয়া-গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ 
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সমকালীন বিশ্বের বিস্ময়কর নেতৃত্বের অধিকারী ছিলেন বিধায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শোষিত মানুষের মুক্তিতে তাঁর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের এ ইতিহাস জানানোর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে জাতির পিতাকে হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান। সে দলটির নেতারা আজ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি আইন পাস করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করে দিয়ে সংবিধানকে কলংকিত করেছেন। এসময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট চান।
আজ ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন আয়োজিত এডভোকেট তারেক স্মৃতি মিলনায়তনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ একথা বলেন ।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহ্‌তেশামুল আলম, সাধার সম্পাদক এড.মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান। স্বাগত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও দেশপ্রেম বাঙালির ইতিহাসকে মহিমান্বিত করেছে।

সভাপতি বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলার প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়ে আজীবন থাকবেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের মত কোন হত্যাকাণ্ড আমরা দেখতে চাই না। শেখ মুজিব ও বাংলাদেশের পতাকা বুকে ধারণ করার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি রেঞ্জ ডিআইজি (এডিশনাল আইজিপি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, যে মানুষটি বিশ্বদরবারে আমাদের আত্মপরিচয় দিয়েছেন তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা ইতিহাসের দুর্ভাগ্যজনক কলংক। নতুন প্রজন্মকে জাতিসত্তার ইতিহাস জানাতে হবে। তিনি বলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান বঙ্গবন্ধুকে তথা রাষ্ট্রপ্রধানকে রক্ষার জন্য যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি।

পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা বলেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাঙালি প্রথম স্বাধীনতা লাভ করে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ আলী পাঠান বলেন, নমিনেশন বাণিজ্য করার জন্য বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি এসেছিল।
আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেন বিশ্বের নিপীড়িত মানুষ বঙ্গবন্ধুর কাছে মুক্তির ঠিকানা খুঁজে পেয়েছিল। শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করেছিলেন যেখানে সকল স্তনের মানুষ সদস্য পদ গ্রহণ করেছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, পাকিস্তানের পরাজিত শত্রুরা ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে।
অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের জনগণ, মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা কর্মচারীগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর পূর্বে ১৫ আগস্ট সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা
অর্ধনমিত করে উত্তোলন করা হয়। সকাল ৭:৩০টায় সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে স্থাপিত ‘ময়মনসিংহে বঙ্গবন্ধু’ ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ মনিরা সুলতানা, বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞাসহ সকল সরকারি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধাগণ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
ময়মনসিংহে নানান কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
১৫ আগস্ট এদিনে ৭৫ এর কালোরাতে বাঙালির অধ্যায়ে সংগঠিত হয়েছিল একটি বর্বর হত্যাকান্ড। ১৯৭৫ সালের এদিনে কাকডাকা ভোরে ধানমন্ডির ৩২নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে কতিপয় কুলাঙ্গার সেনা সদস্য। বাঙালি জাতির ললাটে এঁটে দেয় কলঙ্কের তিলক।
দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী জেলা পর্যায়ে আয়োজিত রচনা ও চিত্রাংকন, হামদ-নাত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। বাদ জোহর বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্ট নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।

জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শহরের মোড়ে মোড়ে পোস্টার স্থাপন করা হয়। আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভাগীয় ও জেলার পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের  কর্মকর্তা  কর্মচারীগণ, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ,  সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে সকল সরকারি আধা সরকারি স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাসব্যাপী প্রদর্শনের জন্য ড্রপডাউন ব্যানার স্থাপন করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলার উপজেলাগুলোতেও অনুরূপ আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে।

গফরগাঁওয়ে জাতীয় শোক দিবস পালিত
গফরগাঁও(ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ শোকাবহ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে মঙ্গলবার দিনভর দিয়ে গফরগাঁও উপজেলা ১৫আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস (৪৮তম) নানান কর্মসুচীর মধ্যে দিয়ে পালিত হয়েছে । সকল সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন , কালো পতাকা উত্তোলন , আলোচনা সভা , গণভোজ , বিশেষ মোনাজাত , মিলাদ মাহফিল , জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পন, শোকর‌্যালী ও প্রায় সাড়ে তিনশত স্কুল ,কলেজ ও মাদ্রাসায় দোয়া ,কোরআনখানী ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে । সকালে গফরগাঁও উপজেলা আঃ লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পন করেন ময়মনসিংহ- ১০ (গফরগাঁও) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল । উপজেলা শাখা আঃলীগের সভাপতি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপির সভাপতিত্বে বিশাল আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফ উদ্দিন (বাদল) ও উপজেলা শাখা আঃলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল কাশেম প্রমুখ । অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠিত হয় ।এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি ।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার