You must need to login..!
Description
স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, গণতন্ত্র ,ভোটাধিকার হরণ করে গুম-খুনের মাধ্যমে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃস্টি করে সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে ।সরকার গণতন্ত্র ,,মানবাধিকার ,নির্বাচন নিয়ে জনগণের সাথে ভাওতাবাজী ও প্রতারণা করছে।
তিনি আজ দুপুরে ময়মনসিংহ মহানগরীর নতুন বাজার এলাকায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে ময়মনসিংহ উত্তর ,দক্ষিন জেলা ও মহানগর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে মৌন মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ।গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে আজ দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেধে মৌন মিছিল করেন।
মৌন মিছিল পূর্ব সমাবেশে এমরান সালেহ প্রিন্স বাংলাদেশে গুমের শিকার সকল ব্যক্তি ও পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ শাসনামলে দেশে গুম খুনের মাধ্যমে ভীতিকর ও নৃশংস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো গুম করেছে। আজ পর্যন্ত একটি ঘটনারও ন্যায়বিচার পাওয়া যায়নি।গুম মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ।মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী,সাইফুল ইসলাম হিরু, কাউন্সিলর চৌধুরী আলমসহ বিএনপিরই অন্তত ছয় শত নেতাকর্মীকে গত ১৫ বছর গুম করা হয়েছে,এখন পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীর কোনো খোজ পাওয়া যায় নাই। অথচ সরকার তা অস্বীকার করে বলছে এগুলো সব ভাঁওতাবাজি।
কিন্তু আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো গুম সেন্টার আয়না ঘরসহ তথ্য প্রমান দিলেও সরকার এসব বিষয়ে মুখে কুলুপ এটেছে। আসলে গণতন্ত্র ,,মানবাধিকার ,নির্বাচন,আইনের শাসন নিয়ে সরকারই জনগণের সাথে ভাওতাবাজী,প্রতারনা,মিথ্যাচার করছে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ প্রতিবছর ৩০ আগস্ট গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস পালন করলেও বাংলাদেশে আওয়ামী সরকার তা পালন করে না।কারণ তারা নিজেরাই মানুষ গুম করছে।
জলজ্যান্ত মানুষগুলো নিখোজ হয়ে যাচ্ছে, তবে রেখে গিয়েছেন মর্মান্তিক ও বেদনাবিধুর বাংলাদেশ, যেখানে আমাদের অর্জিত মানবাধিকার ও মূল্যবোধ লংঘিত, লুন্ঠিত। জনসমর্থনহীন ও ভোটারবিহীন সরকার গুমকে টিকে থাকার অবলম্বন করেছে। এই নৃশংস গুমের শিকার হয়েছেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু ও চৌধুরী আলম, সুমন, জাকিরসহ অসংখ্য মানুষ। এদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, ছাত্র, যুবক, সাংবাদিকসহ ভিন্ন মতের লোকজন। আরেকটি অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে অন্য দেশে। গুম হওয়া মানুষদের বেদনার্ত পরিবাররা এখনও পথ চেয়ে বসে আছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়। মানবতাহীন এক নিষ্ঠুর সমাজ কায়েম করেছে সরকার। তিনি অবিলম্বে গুমের শিকার সব ব্যক্তিকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন কেবলমাত্র একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলেই গুম, অপহরণ ও বিচার বহিভূর্ত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জন—জীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে”।
ব্রিকস,ড.ইউনুসকে নিয়ে গতকাল প্রধনমন্ত্রীর বক্তব্য সত্যের অপলাপ উল্লেখ করে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ,দমন,নিপীড়ন আড়াল করতে সরকার মিথ্যাচার করছে। এগুলো করতে গিয়ে সরকার দেশকে বিশ্বের বুকে হেয় করছে,বন্ধুহীন করে ফেলেছে। তারা গণতন্ত্র,মানবাধিকার ও ভোটাধিকার হরণ করবে, সম্মানিত ব্যক্তিদের অসম্মান করবে আর দেশ-বিদেশে সবাই নিশ্চুপ থাকবে,এমনটা মনে করে থাকলে সরকার বোকার স্বর্গে বাস করছে।তিনি বলেন,এক দফা আন্দোলনের ধারাবাহিক কর্মসূচি আসছে, সকল বাধা অতিক্রম করে দাবি আদায় করতে হবে।
ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায়
অনুষ্ঠিত সমাবেশে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম,যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী ,,দক্ষিন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শুক্কুর মাহমুদ ববি বক্তব্য রাখেন ।
পরে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেধে মৌন মিছিল করে নতুন বাজার পর্যন্ত গেলে সেখানে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।দীর্ঘক্ষণ বাক বিতন্ডতার পর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মৌন মিছিলের সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিএনপি র সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
পরে এমরান সালেহ প্রিন্স এর নেতৃত্বে জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ ডিআইজি কার্যালয়ে গিয়ে মৌন মিছিলে বাধা প্রদান করায় প্রতিবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা না দেয়ার আহ্বান জানান।নেতৃবৃন্দ বিনা ওয়ারেন্টে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ,হয়রানীরও প্রতিবাদ জানিয়ে তা বন্ধ করার আহ্বান জানান।ডিআইজির পক্ষ থেকে তার স্টাফ অফিসার সিনিয়র এস পি ফারুক আহমেদ নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শোনেন ।
এসময় ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম,উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম,,মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার উপস্থিত ছিলেন ।