স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় নিখোঁজের তিনদিন পর লাল মিয়া (৫০) নামের এক দাদন ব্যবসায়ীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের নলদিঘী পূর্বপাড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।নিহত লাল মিয়া ওই গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, লাল মিয়া দাদন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি সুদে এলাকার মানুষকে টাকা দিতেন। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে ও তার নম্বরে কল দিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা তারাকান্দা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে লাল মিয়ার মোবাইল থেকে তার ছেলের নম্বরে কল করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা দিলে লাল মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
এ ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় একই এলাকার সোহেল মিয়া (৩২) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর সোহেলের দেওয়া তথ্যমতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত একই এলাকার শাহীন খান (৪৫) ও আব্দুল বারেক (৩৫) নামের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে ওই এলাকার একটি পুকুর থেকে লাল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।গ্রেফতার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তারাকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রায়হানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, লাল মিয়া সোহেল মিয়া ও আব্দুল বারেকের কাছে সাড়ে ছয় লাখ টাকা পেতেন। তবে, শাহীনের সঙ্গে কোনো লেনদেন ছিল না। শাহীন মিয়া বিভিন্ন অপকর্মের কারণে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত। তাদের ধারণা ছিল লাল মিয়ার কাছে নগদ টাকা আছে। এ ভেবে শাহীন মিয়া গ্রেফতার অপর দুই আসামিকে নিয়ে লাল মিয়াকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী লাল মিয়াকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর চীনে ফেলায় লাল মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করেন তারা। হত্যার পরদিন লাল মিয়ার নম্বর থেকে তার ছেলের নম্বরে ফোন করে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
ওসি আবুল খায়ের জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছেন কি না জানতে তদন্ত চলছে।