You must need to login..!
Description
স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার কৈলাগ গ্রামের রাবেয়া বেগম (৪০)এর লাশ ত্রিশাল থানার চকরামপুর এলাকায় বাঁশঝাড় থেকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ত্রিশাল থানার মামলা নং-১৯, তারিখ, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু করা হয়। মামলাটি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভুইয়া ডিবিকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করে।
ডিবি পুলিশ তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যার ঘটনায় সরাসরি হত্যাকান্ডে জড়িত ত্রিশাল থানার বাবুপুর, গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে ইসমাইল (৩৮) ও পিতা-মৃত অয়েজ উদ্দিন, আযাহার আলী (৩৮)কে গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বিকাল ৫টায় নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত আসামীদ্বয়কে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, ৩নং আমলী আদালতে সোর্পদ করা হলে, উক্ত আসামীদ্বয় লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
ডিবির অফিসার ইনচার্জ ফারুক হোসেন জানান , আসামিরা ঘটনার বর্নণা দিয়ে জানায় রাবেয়া গাজীপুর টঙ্গী এলাকায় থেকে বাসা বাড়ীতে ঝি এর কাজ করত। মোঃ ইসমাইল গফরগাঁওয়ের একজনের মাধ্যমে প্রায় ৬/৭ মাস পূবে ভিকটিম রাবেয়া বেগমের সাথে পরিচয় হয়। সে সুবাদে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ মোবাইলে কথাবার্তার মাধ্যমে একপর্যায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। নিহত রাবেয়া বেগম কিছুদিন থেকে ইসমাইলকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। বিয়ে না করলে ইসমাইল এর বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় মামলা করবে বলে হুমকি দেয়। তখন আসামি ইসমাইল মামলার ভয়ে আতংকে থাকে এবং কিভাবে রাবেয়া বেগমকে শিক্ষা দেওয়া যায় সে বিষয়ে তার বন্ধু আযাহার ও পলাতক আসামি রফিকের সাথে পরিকল্পনা করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ ইসমাইল ডিশিষ্ট রাবেয়াকে পূর্বেই মোবাইল ফোনে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা হতে ময়মনসিংহের গফরগাঁও আসতে বলে। ইসমাইল এর কথা মতে, ভিকটিম টঙ্গী হতে ট্রেনে রওনা করে গফরগাঁও রেল ষ্টেশনে এসে পৌঁছায়। পরে গফরগাঁও রেল ষ্টেশনে ইসমাইল, আযাহার ও রফিক একত্রে রেল ষ্টেশনে গিয়ে ভিকটিম রাবেয়ার সাথে সাক্ষাৎ করে। রেল স্টেশন থেকে একটি অপরিচিত সিএনজি নিয়ে ডিসিস্ট রাবেয়াকে সহ ত্রিশাল থানার ধলা বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করে ধলা বাজারে পৌঁছায়। ধলা বাজারে একটি ছোট হোটেলে একত্রে সবাই টেবিলে বসে খাওয়া দাওয়া করে । এক পর্যায়ে রাবেয়া আসামি ইসমাইলকে বলে, আমার পেটে তোমার বাচ্চা, তুমি আমাকে বিয়ে কর, না হলে আমি তোমার বিরুদ্ধে মামলা করবো। তখন বাচ্চার বিষয়টি ইসমাইল অস্বীকার করে রাবেয়াকে খাবার টেবিলে রেখে ইসমাইল তার সহযোগী আযাহার ও রফিককে ডেকে হোটেলের বা্ইরে গিয়ে দাড়ায় এবং ভিকটিম রাবেয়া বেগমকে হত্যার করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে হত্যাকারীরা নিহত রাবেয়াকে বিয়ে করবে বলে ত্রিশাল থানার চকরামপুর এলাকার উদ্দেশ্যে সিএনজি যোগে রওনা দেয়। পরে একই তারিখ রাত্রে অনুমান ১০ টায় ঘটনাস্থলে বাঁশঝাড়ের ভিতরে ভিকটিম এর ওড়না দিয়া পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং ওড়নার একপ্রান্ত গলায় ও অপরপ্রান্ত বাঁশের সাথে বেধে রেখে ঘটনাস্থল হতে দ্রুত হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ত্রিশাল থানার চকরামপুর এলাকায় বাঁশঝাড়ের ভিতর রাবেয়া বেগম (৪০) লাশ পাওয়া যায়। ভিকটিম রাবেয়া বেগম এর পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, রাবেয়া গাজীপুর টঙ্গী এলাকায় থেকে বাসা বাড়ীতে ঝি এর কাজ করত। গত ২১সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ বিকাল অনুমান সাড়ে ৩টায় ত্রিশাল থানা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন ত্রিশাল থানার চকরামপুর সাকিনে বাদীর বড় বোন ভিকটিম রাবেয়া বেগম এর লাশ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ত্রিশাল থানার মামলা নং-১৯, তারিখ-২১/০৯/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু করা হয়।
মামলাটি তদন্তাধীন।