১৯ অক্টোবর ভার্চুয়্যালি ময়মনসিংহ বিভাগের যে ৪০টি সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ

আগামী ১৯ অক্টোবর ২০২৩ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী ভার্চুয়্যালি ১৫০টি সেতু ও ১৪টি ওভারপাসসহ অন্যান্য উন্নয়নকাজের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে মোট ৪০টি সেতুর উদ্বোধন করা হবে। বিভাগের সেতুগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলাতে ২৩টি, নেত্রকোনায় ১২টি ও জামালপুর জেলার ০৫টি সেতু রয়েছে। সেতুগুলোর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭০০ মিটার ও ব্যয় হয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। কয়েকটি সেতুর সাথে সীমান্ত সড়কের সংযোগ থাকায় দেশীয় প্রেক্ষাপটে এ অবকাঠামোর গুরুত্ব অনেক।

নির্মিত সেতুর স্থানগুলোর সঙ্গে স্থলবন্দরের অবস্থান থাকায় সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। সীমান্ত সংলগ্ন সেতুগুলো সীমান্তের সাথে যোগাযোগ সহজ করে তুলবে। এরমধ্যে নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা থেকে কলমাকান্দা উপজেলা পর্যন্ত ৭টি ব্রিজ রয়েছে। আবার জামালপুরের ধানুয়া হয়ে রৌমারী পর্যন্ত রয়েছে ৫টি ব্রিজ।

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের উপর কেওয়াটখালি সেতু ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। কেওয়াটখালী সেতু হবে স্টিল আর্চ সেতু। সেতুর স্টিল আর্চ অংশের দৈর্ঘ্য ৩২০ মিটারসহ সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ১১০০ মিটার ও মূল সেতুর প্রস্থ হবে ৪২.১৫ মিটার। রহমতপুর সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হবে ১৪৭১.৬৫৫ মিটার ও মূল সেতুর প্রস্থ হবে ১৩.৪০ মিটার। এ দুটি সেতু নির্মিত হলে ময়মনসিংহ জেলা সদরসহ নেত্রকোনা জেলার বিজয়পুর, শেরপুর জেলার নাকুগাঁও, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট, জামালপুর জেলার ধানুয়া-কামালপুর এর মত গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরগুলোর সাথে রাজধানী ঢাকার নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চলের সাথে মূল সড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হবে। ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর এ দুটি সেতু ময়মনসিংহের পুরো উত্তরাংশের সাথে যোগাযোগ সহজ করে তুলবে। স্থলবন্দরগুলোর সাথেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের উন্নয়ন ঘটবে। রহমতপুর ব্রিজ নির্মিত হলে যানবাহন রহমতপুর হয়ে সরাসরি ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েতে চলে যাবে।

এ সকল সেতুর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ প্রসারিত হবে। নাগরিক সুবিধাদি স্বাভাবিক কারণেই বৃদ্ধি পাবে। নগরবাসীর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। আঞ্চলিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে। দেশের অন্যান্য অংশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের বৃদ্ধি ও অগ্রগতি হবে। নগরায়নের প্রভাবে গ্রামাঞ্চলগুলো উন্নয়নের ছোঁয়া পাবে।

ময়মনসিংহ জেলার সেতুগুলো হলো- জয়রামপাড়া সেতু, বগাঝড়া সেতু, মাইজপাড়া সেতু, রানীপুর সেতু, বাকপাড়া সেতু, রাংসিনপুর সেতু, কড়ইগড়া সেতু, নয়াপাড়া সেতু, পশ্চিম নয়াপাড়া সেতু, দীঘলবাগ সেতু, গলুইভাঙ্গা সেতু, কান্দাপাড়া সেতু, বোরাক সেতু, কচুয়াকুড়া সেতু, গোবরাকুরা সেতু, তেলিখালী সেতু, গুমুরিয়া সেতু, বুড়াঘাট সেতু, মুচিরঘাট সেতু, কোদালধর সেতু, তারাকান্দা সেতু, ফুলপুর সেতু ও মনতলা সেতু।

নেত্রকোনা জেলার সেতুগুলো হলো- মহিষখলা সেতু, বাউসি সেতু, নিশ্চিন্তপুর সেতু, তেঘরিয়া সেতু, গুমাই সেতু, আশারানী সেতু, বাবনি সেতু, ছোট বাবনি সেতু, বাহাদুরকান্দা সেতু, জিঞ্জিনিয়া সেতু, বিশিউরা সেতু ও দুর্গাপুর সেতু।

জামালপুর জেলার সেতুগুলো হলো – ফুলকারচর সেতু, কামালপুর সেতু, ধানুয়া সেতু, ডিগ্রীরচর সেতু ও কদমতলা সেতু।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগের সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জনাব মোঃ শওকত আলী বলেন, গত কয়েকদিন আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী শতসেতু উদ্বোধন করেছেন। ১৯ তারিখে তিনি ১৫০টি নতুন সেতু উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে ৪০টি সেতু রয়েছে। এগুলো উদ্বোধন হলে এ এলাকার স্থলবন্দর, সীমান্ত যোগাযোগসহ পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হবে। মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন হবে।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের মহাস্বর্গে নিয়ে যাচ্ছেন। ১৯ অক্টোবর ময়মনসিংহ বিভাগে ৪০টি সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা ময়মনসিংহবাসী সৌভাগ্যবান। কেবল ময়মনসিংহ জেলা বা বিভাগ নয়, সারা বাংলাদেশে আজকে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মেট্রোরেল, পদ্মা-সেতু, কর্ণফুলী টানেল, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্প সারা পৃথিবীতে আজ তাক লাগিয়ে দিয়েছে। চল্লিশটি সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহবাসীর অনেক প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অমিত রায় বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪০টি সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহবাসীর আর্থসামাজিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব পরিবর্তন হবে। কেওয়াটখালী ও রহমতপুরে দুটি বড় ব্রিজ নির্মাণের উদ্বোধন হবে, বিষয়টিতে ময়মনসিংহবাসী গর্বিত। ব্রিজগুলোর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে সফলতা আসবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় সার্থক, অভূতপূর্ব পরিবর্তন সাধিত হবে।

মোঃ ওমর ইসলাম, ছাত্র, আনন্দমোহন কলেজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহের যে ৪০টি ব্রিজ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন ময়মনসিংহবাসী তাতে আনন্দিত এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এজন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরো উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশন করে দিয়েছেন।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার