মনোনয়ন পাইয়ে দিতে ২০০-৩০০ কোটি টাকা দাবি করতো প্রতারক আবু হানিফ

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে মনোনয়ন পাইয়ে দিতে তাদের কাছে ২০০-৩০০ কোটি টাকা দাবি করতো প্রতারক আবু হানিফ তুষার ওরফে হানিফ মিয়া। নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে যারা খানিকটা দুর্বল তাদেরকে টার্গেট করে চলতো এ প্রতারণা। তার ফাঁদে পড়েছেন ডজনখানেকের বেশি ব্যক্তি। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট আত্মীয়ের মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করেছেন।সংস্থাটির গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের নিকটাত্মীয়, মিথ্যা পরিচয় দিয়ে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য কারও কাছে ৫০ কোটি, কারও কাছে ১০০ কোটি, কারও কাছে ৩০০ কোটি টাকা দাবি করতেন। আর তাদের কারও সঙ্গে দামী গাড়ীতে করে দামী হোটেলে সাক্ষাৎ করতেন। ইতোমধ্যে মনোনয়ন পেতে ১০ থেকে ১১ জন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন বা পদোন্নতির আশ্বাস দিয়ে সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে বিপুল অংকের অর্থ দাবী করত। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেয়া, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পদ পাইয়ে দেয়া, নানান প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎসহ প্রতারণার মাধ্যমে ৩০ জনের বেশি ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার অধিক অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১ এর অভিযানে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা আবু হানিফ তুষার ওরফে হানিফ মিয়া নামের ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দামি গাড়ী ও বিভিন্ন ভিডিও এবং এডিট করা ছবি উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ি বাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এলাকায়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আবু হানিফ দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের নিকটাত্মীয় হিসেবে মিথ্যা পরিচয় ও সুসম্পর্কের কথা বলে বিভিন্ন ধরণের প্রতারণা করে আসছিল।আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে মনোনয়ন প্রাপ্তির মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবী করে আসছিল। এছাড়াও আবু হানিফ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন ও পদোন্নতি, সরকারি চাকুরীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করে। প্রতারণা করার জন্য বিভিন্ন সময় নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করতো। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দেয়া, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবারের সদস্যদের নামে মোবাইলে সেভ করতো।
মঈন বলেন, আবু হানিফ এইচএসসি পাস হলেও তিনি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছে বলে মিথ্যা পরিচয় দিতো। ২০০৮ সালে মটরপার্টসের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়। পরিবহণ সেক্টরে দেশের বিভিন্ন রুটে তুষার এন্টারপ্রাইজ পরিবহন নামে তার বেশ কয়েকটি বাস ও নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রাইভেট কার রয়েছে। ঢাকার নাখালপাড়া এবং ধানমন্ডি এলাকায় দলীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে বলে মিথ্যা প্রচার- প্রচারণা চালাতো।

র‍্যাব জানায়, ২০১৪ সালের পর থেকে একজন সুপরিচিত রাজনীতিবিদের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণার কার্যক্রম শুরু করে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কৌশলে রাজনীতিবিদ, উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে নিজের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে পরিচিত হয়। পরে সুসম্পর্ক তৈরি করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অফিস বা কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে ঘনিষ্ঠ ছবি তুলে এবং প্রতারণার কাজে এই ছবিগুলো ব্যবহার করতো। ২০১৫ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক একাউন্ট খুলে। বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে, অনুষ্ঠান, সেমিনারে অংশগ্রহণ এবং দেশের বাহিরে বিভিন্ন সময় ভ্রমণ করে ছবি তুলে তা ফেসবুকে আপলোডের মাধ্যমে তার ফেসবুক একাউন্টের পরিচিতি ও দেশে-বিদেশে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করে।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার