You must need to login..!
Description
শফিকুল ইসলাম ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী কমিটি পাঁচ দিনে তিন বার অনুমোদন দিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য- গত ২৩ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের কম্পিউটারে লেখা কয়েকটি নাম হাতে কেটে চুড়ান্ত করে কার্যকরী কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। এ কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় বিভিন্ন মহলের নানা মন্তব্য চলাবস্থায় ২৬ অক্টোবর আরেকটি কমিটি আংশিক সংশোধন করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই কমিটিতে ২৩ তারিখে অনুমোদন দেয় কমিটিতে অনেকের নাম বাদ দিয়ে। যারা কমিটিতে যুক্ত হয়েছিলেন তারা অনেকেই শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন আবার যারা বাদ পড়েছেন তারা নানাভাবে ক্ষুভ প্রকাশ করেছে। ২৬ তারিখের কমিটির নেতৃবৃন্দ নিয়ে যখন উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসে মতবিনিময় চলছিল ঠিক ওষ ঐ সময় ২৭ অক্টোবর উপজেলা কমিটি চুড়ান্ত ভাবে অনুমোদন করে জেলা আওয়ামী লীগ। এই অনুমোদিত কমিটির সংবাদ পেয়ে ২৬তারিখের অনুমোদিত কমিটির নেতৃবৃন্দ হতভম্ভ হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে। সর্বশেষ চুড়ান্ত কমিটিতে বাদ পড়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে পূর্বের দুই কমিটি বাতিলপূর্বক অনুমোদন দেয়া হয়নি। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এবিএম আনিছুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য এড, জালাল উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়ায়ুল হক সবুজ, ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন আকন্দ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান, সাবেক উপেজলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আবুল কালাম ওরফে গুরু কালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন আর রশিদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রুকন উদ্দিন খোকন সহ কয়েক ডজন আওয়ামী লীগের ত্যাগী জনপ্রিয় নেতারা। বিষয়টি নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন আকন্দ বলেন, ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামলীগের ৩ টি কমিটি করেছে ঠিক করেনাই আমি এটা আশা করিনি এরা নেকামী বোকামী করেছে এই অবস্থায় উপজেলা আওয়ামীলীগ কমিটি চলতে পারে না।
পরে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন কমিটির বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সস্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি একরকম কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন এবং তিনি বলেন আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি দলের ক্লান্তি লগ্নে আমি সম্পদ বিক্রি করে দল চালিয়েছি আমি আওয়ামীলীগের ৭১নাম্বার সদস্য হয়ে মরতে চাই ,ওরা আমাকে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামলীগের কমিটিতে সদস্য পর্যন্ত করে নাই মেয়র সহ জনপ্রিয় কিছু পরিচিত নেতার নাম কেটে কমিটি অনুমোদন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে এটা দলের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। এই মনগড়া কমিটি অনুমোদন নিয়ে উপজেলা আওয়মী লীগের সাবেক আহবায়ক আবুল কালাম ওরফে গুরু কালাম বলেন, ১৯৬৬ সাল থেকে ত্রিশাল আওয়ামী লীগের হাল ধরেছে আমার পরিবার আমার বড় ভাই মরহুম আব্দুল হেকিম সরকার উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য ছিলেন আরেক বড় ভাই বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আবুল হোসেন চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন,৷ আমি উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক ছিলাম আমার ভাতিজা মেয়র এবিএম আনিছুজ্জামান বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য, সে ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন ২২ বছর আমার আরেক ভাতিজা ছাত্রলীগ যুগ্ম আহবায়ক ছিল আমার আরেক ভাতিজা নজরুল কলেজ ছাত্র সংসদ ছাত্রলীগের নেতা ছিল কিন্ত কষ্ট দায়ক বিষয় উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে আমার পরিবারের কাউকে কোন সদস্য হিসেবে রাখে নাই এই প্রথম ত্রিশাল আওয়ামীলীগের দূর্গে আঘাত হেনেছে। পাঁচ দিনে তিন কমিটি অনুমোদন এমন নজির আমি কোথাও দেখিনি এটা ত্রিশাল আওয়ামীলীগের জন্য অবশ্যই ক্ষতির কারণ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান মাহমুদা খানম রুমা বলেন, আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান আমার পিতা আমিরাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন, আমি উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য ছিলাম এমতাবস্থায় পাঁচ দিনে ত্রিশালে কাঁটাছেড়া আমার নামসহ তিনটি কমিটির অনুমোদন দিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত। এখানে আমি কারো কাছে পদের জন্য দৌড়যাপ করিনি কেন আমাকে একবার নাম দিয়ে নাম কেটে আবার দিয়ে আবার কাটাকাটি হয়েছে যাদের সাথে এমন করা হয়েছে সকলের সম্মান ক্ষুন্ন করা হয়েছে। ত্রিশাল আওয়ামীলীগের ২৩ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত কমিটির সহ সভাপতি হারুন আর রশিদ এর নাম কলমে কেটে অন্য নাম বসিয়ে কমিটির অনূমোদন দেওয়ায় তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন যে, ছাত্রলীগ করেছি উপজেলা যুবলীগ করেছি আওয়ামীলীগ সদস্য ছিলাম দীর্ঘ ৩৮ বছরের আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যুক্ত রয়েছি কোন প্রকার বিরতি আমার ছিল না। আজ কোন এক অদৃশ্য কারণে আমাকে উপজেলা আওয়ামীলীগ কমিটি থেকে নাম কেটে দিয়েছে।
ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগ ২৬ তারিখ অনুমোদিত কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে কমিটিতে স্থান পেয়েছিলেন কামাল হোসেন এরপর ২৭ তারিখ সে কমিটিতে নেই এবিষয়ে তিনি বলেন, পাঁচ দিনে তিন কমিটি এটা ন্যাক্কারজনক দুঃখজনক, আমাকে আপনি আপনারা সম্মান না করেন কিন্তু অসম্মান করার অধিকার আপনার আপনাদের নেই।
ত্রিশাল উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতিকে ২৬ তারিখ সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে জেলা আওয়ামীলীগ স্বাক্ষরিত ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামীলীগ কমিটি অনুমোদন করেন ২৭ তারিখের অনুমোদিত কমিটিতে সে নেই বিষয়টি নিয়ে তার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, প্রস্তাবিত কমিটিতে আমার নাম ছিল এবং জেলা কমিটি অনুমোদনও দিয়েছে সর্বশেষ আমার নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ত্রিশালে জনপ্রিয় নেতা ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য তার নামও কেটে দেওয়া হয়েছে বিষয়টি ত্রিশাল আওয়ামীলীগের জন্য ক্ষতির কারণ। পরে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন এর বাসায় গেলে সে দ্বিতীয় তলায় অবস্থান করেন তার সহযোগীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন যে সে ঘুমানোর জন্য ২য় তলায় রয়েছেন পরে তার সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে ফোন বন্ধ পাওয়া যআয়।বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কালাম শামসুদ্দিন বলেন, আমি এ বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করতে রাজি নই তবে ২৬ তারিখ অনুমোদিত কমিটির বিষয়ে অবগত রয়েছি।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এহতেশামুল আলমকে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগ দপ্তর সস্পাদক যে কমিটি পাঠিয়েছেন সেটাই চূরান্ত কে বা কারা আমাদের সরলতার সুযোগে কমিটির ছবি নিয়ে ফেইসবুকে ছেড়ে দিয়েছে।এব্যপারে আমার জানা নেই।