বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ গণতন্ত্র চাইলে এবং ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য সহিংসতার পথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আসার জন্য বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।রোববার (২৯ অক্টোবর) ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি গণতন্ত্র চান, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিকল্প নেই। ক্ষমতা পরিবর্তনে নির্বাচনের বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ। যদি কেউ ভাবে সহিংসতা, অপকর্ম করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভণ্ডুল করবেন, সেটা করতে দেওয়া হবে না।দেশে গণতান্ত্রিক ধারাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিএনপি জামায়াত তাদের চিরাচরিত রূপে নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।তিনি বলেন, তাদের তথাকথিত সমাবেশের নামে জনমনে যে আতঙ্ক ছিল, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তা আজ সত্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় বলে এ ধরনের বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। নৃশংস হামলা চালিয়ে নিষ্ঠুরভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে।
কাদের বলেন, বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবেই একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। কানাডার ফেডারেল আদালতে এ পর্যন্ত ৬ বার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে রায় দিয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ভণ্ডুল করতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পথ বেছে নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি, বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা বলে, আসলে তারা তাদের রাজনীতির সন্ত্রাসী ধারা বাস্তবায়নের জন্য গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের ভয়ংকর রাজনীতির পুরোনো চেহারায় ফিরে আসার সময় নিচ্ছিল, সময়মতো তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ বেছে নিয়েছে।
শনিবারের বিএনপির সহিংসতাকে ক্যাপিটাল হিলের সঙ্গে তুলনা করে কাদের বলেন, বিএনপির শনিবারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল হিল দখলের আগ্রাসীকে তুলনা করা যায়। আন্দোলনের নামে তারা সবই করেছে। ৩০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছে। ঘটনা দেখে শুনে সত্যটা লিখতে গিয়ে তারাও রোষানলে পড়েছে। একজন পুলিশকে হত্যা করে লাশের ওপর আবারও হামলা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার মতো নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। হাসপাতালে প্রবেশ করে রোগীদের ওপর হামলা গাজায় ইসরায়েলিদের হামলার ঘটনা মনে করিয়ে দেয়।
সামনে আওয়ামী লীগের অবস্থান কী থাকবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা গায়ে পড়ে কারও সঙ্গে লাগতে যাব না, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। এখন কেউ আমাদের ওপর হামলা করলে পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেব। সবাই সতর্ক অবস্থানে থাকব।
এই পরিস্থিতিতে সরকার বিরোধীদের সঙ্গে কোনো সংলাপে আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা (সরকারবিরোধীরা) পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে, আর তাদের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজন নেই। আমরা আগ বাড়িয়ে সংলাপের দিকে কোনো কথা বলব না।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুস রাজ্জাক, শাহজাহান খান, লে. কর্নেল (অব) মো. ফারুক খান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, দেলোয়ার হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন, সানজিদা খানম প্রমুখ।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।