হালুয়াঘাটে দুইটি ইউনিয়নে সীমানা জটিলতায় ১২ বছর ধরে নির্বাচন নেইঃ নাগরিকরা সেবা পেতে হয়রানি

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
বাংলাদেশ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা। নানা সমস্যায় জর্জরিত এই উপজেলার মধ্যে দুইটি ইউনিয়নে সীমানা জটিলতায় ১২ বছর ধরে নির্বাচন নেই। ফলে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নাগরিকদের বিভিন্ন সেবা পেতে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ইউনিয়ন ২টি সদর ও কৈচাপুর।  জেলার  হালুয়াঘাট ১৩টি উপজেলার মধ্যে এই উপজেলাটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া তেমন একটা লাগেনি।

উপজেলার সদর ও কৈচাপুর ইউনিয়ন ২টিতে প্রায় এক লাখ মানুষের বসবাস।  দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না হওয়ায় নির্বাচিত চেয়ারম্যানও নেই। এরই মধ্যে দুটি ইউপির কয়েকজন সদস্য মারা গেছেন। ফলে ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না নাগরিকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৯ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন কৈচাপুর ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর আলম এবং সদর ইউনিয়নে সালেহ আহম্মেদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হালুয়াঘাট পৌরসভা গঠন করা হয়। সে সময় হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর, আকনপাড়া, কালিয়ানীকান্দা গ্রাম এবং কৈচাপুর ইউনিয়নের নলুয়া, ইসলামপুর, হালুয়াঘাট বাজার পূর্ব ও মনিকুড়া গ্রাম পৌরসভার সীমানায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৬ সালে সদর ও কৈচাপুর ইউনিয়ন ছাড়া উপজেলার বাকী ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালেহ আহম্মেদ তাঁর পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে পৌর নির্বাচনে অংশ নেন। এরপর ইউপি সদস্য ইকরামুল হাসানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এদিকে কৈচাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম গত ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। বর্তমানে এই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইজ্জত আলীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে ভোট না হওয়ায় দুই ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা একক আধিপত্য বিস্তার করে চলছেন। আবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানরাসহ সদস্যরা ঠিকমতো পরিষদে আসেন না। নির্বাচিত চেয়ারম্যান না থাকায় কোনো জবাবদিহি নেই। উন্নয়নের ছোঁয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। নাগরিকদের বিভিন্ন সেবা পেতে নিয়মিত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে কৈচাপুর ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা খোরশেদ আলম বলেন, নির্বাচন না থাকায় জনপ্রতিনিধি থাইক্কাও (থেকেও) নাই। পরিষদে গেলে তাদের পাইনা। আশপাশের ইউনিয়নগুলোর অনেক রাস্তা পাক্কা (পাকা) হইলেও আমগোর ইউনিয়নে শুধু কাঁচা মাটির রাস্তা।
সদর ইউনিয়নের  স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে উন্নয়ন হলেও আমাদের ইউনিয়নে কোনো উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি দীর্ঘদিন যাবত। ইতিমধ্যে কয়েকজন ইউপি সদস্য মারা গেছেন।পাঁচজন সদস্য দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে সদর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। তারাও ঠিকমতো পরিষদে আসেন না।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য (বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) ইকরামুল হাসান বলেন,মূলত: সীমানা জটিলতায় নির্বাচন আটকে আছে। আমি নিয়মিত পরিষদে আসি। তবে দীর্ঘদিন যাবত নির্বাচন না হওয়ায় মানুষের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। আমিও চাই, দ্রুত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হোক।

কৈচাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) ইজ্জত আলী বলেন, ঠিকমতো নাগরিকদের সেবা দিতে আমার চেষ্টার কমতি নেই। আমি কাউকে হয়রানি করেছি, এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত, দ্রুত একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া

এ বিষয়ে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রাজিবুল করিম বলেন, সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি প্রায় সমাপ্ত। উর্ধতন কর্মকর্তাদের এটি জানানো হয়েছে। নির্দেশনা এলে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে।##

এনায়েতুর রহমান

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার