
You must need to login..!
Description
এফ আই সুমন, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
দেড়শো বছরের একটি পুরোনো শ্মশান ভেঙে বালু ভরাট করে সেখানে গো-হাট তৈরি করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদুল আহমেদ এর নির্দেশে করা হচ্ছে বলে শ্মশান সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় হিন্দুসম্প্রদায়ের অভিযোগ। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে এ ঘটনাটি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় ইউএনওর বিচার এবং অপসারণের দাবিতে মানববন্ধনের পাশাপাশি ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পূজা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, মন্দির কমিটির সভাপতি-সম্পাদক, শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ হিন্দুসম্প্রদায়ের লোকজন এতে অংশ নেয়। রবিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১২ টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখলে দু’পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে তীব্র ভোগান্তিতে পড়ে যান পথচারীরা। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসাইনের আশ্বস্ততায় অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধরা। তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইউএনওর অপসারণ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষুব্ধরা।
তাঁদের এই স্মৃতিচিহ্ন মুছে দিতে ইউএনও যে পরিকল্পনা করেছে, জীবন থাকতে তা কখনোই বাস্তবায়ন হবেনা। তাঁরা আরো বলেন, ” দফা এক দাবি এক, ইউএনওর পদত্যাগ”, দ্রুত সময়ের মধ্যে ইউএনওকে অপসারণ করা না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি গড়ে তুলবো।
উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আবেদীন খান সেলিম বলেন, শ্মশানটি অনেক পুরোনো। আমি চাই শ্মশানের জায়গায় শ্মশান থাকুক, সেটি উচ্ছেদ না হোক। পাশাপাশি গো-হাটের জায়গায় গো-হাট থাকুক। ইতোমধ্যে গো-হাটের অনেকটা বেদখলিও জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে, প্রয়োজনে আরো উদ্ধার করা হোক। তবুও শ্মশান স্থানান্তর না হোক।
এদিকে মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান,
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসাইন।
এ প্রসঙ্গে এসিল্যান্ড বলেন, শ্মশানের বিষয়টি নিয়ে গতকাল রাতেই ইউএনও স্যার শ্মশান সংশ্লিষ্টসহ স্থানীয় হিন্দুসম্প্রদায়দের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে আসে। ওই আলোচনায় আজকে যারা মানববন্ধন, বিক্ষোভ করছেন তাঁরা ছিলেন না। সেটাই তাদের আক্ষেপ। কারণ তাঁদের ছাড়াই সিদ্ধান্ত
হয়েছে। আমি তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেছি আপনারা একটা তারিখ এবং তালিকা দেন আপনাদের সঙ্গেও বসা হবে। এরপর আপনারা যেই সিদ্ধান্ত দেন সেটাই মানা হবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদুল আহমেদ বলেন, শ্মশানের কোনকিছুতেই হাত দেওয়া হয়নি। এটা এক ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। উচাখিলা বাজারের গো-হাটের ইজারা হচ্ছিলনা, সরকারের রাজস্ব আয়ের স্বার্থে উদ্ধারকৃত (শ্মশানের পাশেই) সরকারি খাস জমিটি বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। বালু ভরাটের সময় নির্মাণাধীন মন্দিরের ৩ টি পিলার ভেঙে যায়। বিষয়টি আমি জানতে পেরে গতকাল রাতেই শ্মশান সংশ্লিষ্টসহ স্থানীয় হিন্দুসম্প্রদায়দের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে আসি। এ ছাড়া আপাতত কাজ বন্ধ রেখে সোমবার সরেজমিনে ফের পরিদর্শন করে শ্মশান, মন্দির, স্নানঘর অক্ষত রেখে একটি স্থায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এতে উপস্থিত শ্মশান সংশ্লিষ্টসহ স্থানীয় হিন্দুসম্প্রদায়দের লোকজন রাজি হয়। এমন ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তের পরও একটি পক্ষ ভুলবোঝাবুঝির মাধ্যমে বিক্ষোভ করেছে। তাদের সাথেও আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’