খাবারের জন্য বানরদের এই হাহাকার যেন ‌‘অরণ্যের নীরব আর্তনাদ’

খাবারের জন্য বানরদের এই হাহাকার যেন ‌‘অরণ্যের নীরব আর্তনাদ’

BMTV Desk No Comments

মো. কামরুজ্জামান মিন্টু
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সন্তোষপুর বনাঞ্চলের বানরদের জীবন এখন চরম সংকটে। খাবারের সন্ধানে দলবেঁধে তারা বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে আসছে। খাবারের জন্য বানরদের এই হাহাকার যেন ‌‘অরণ্যের নীরব আর্তনাদ’। দর্শনার্থীরা যা দিচ্ছে, তাই খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছে বনে থাকা প্রায় চার শতাধিক বানর।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বনে খাবার খুঁজে না পেয়ে বানররা মাঝেমাঝেই আশপাশের ফসলি জমিতে প্রবেশ করে পেঁপে, কলাসহ বিভিন্ন ফল ও সবজি খেয়ে ফেলে। এতে কৃষকদের ক্ষণস্থায়ী ক্ষতি হলেও বারবার এই ঘটনা ঘটায় তাদের ফসলের নিরাপত্তায় উদ্বেগ বাড়ছে। খাদ্যের জন্য মাঝেমধ্যে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে বানর। ফলে এলাকায় শিশু, বৃদ্ধ ও পথচারীরা বানরের ওপর মাঝেমধ্যে হামলার ঘটনাও ঘটাচ্ছে।স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এই শালবনে হরিণ, ভালুক, মেছোবাঘ, বাঘডাস, হনুমান, শিয়াল, সজারো, খরগোশ ও বানরসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ছিল। ধীরে ধীরে বনদস্যুরা অবাধে অসংখ্য গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ায় বানর ছাড়া হারিয়ে যায় অন্যসব বন্যপ্রাণী। প্রাকৃতিক বনায়ন ধ্বংস করা হয়েছে বহু বছর আগেই। বনাঞ্চলের ভেতরে ফলদ গাছ নেই বললেই চলে। বনের দক্ষিণে কিছু ফলদ গাছ থাকলেও ফল নেই। ফলে দর্শনার্থীদের দেখলেই বনে থাকা বানরগুলো কাছে আসে। দর্শনার্থীদের দেওয়া কলা, মুড়ি, বাদাম, চানাচুর, বিস্কুট ও রুটি খেয়ে বেচে আছে বনে থাকা চার শতাধিক বানর।

স্বপন আহমেদ নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, কয়েক মাস ধরে পর্যটক ও দর্শনার্থীর আগমন অনেক কম। তারা আগে বনাঞ্চলে গিয়ে খাবার দিত; কিন্তু এখন দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম থাকায় বানররা খাবারের বিকল্প উৎস খোঁজার জন্য আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বনে ফল না থাকায় বানরগুলো খাদ্যের অভাবে হাহাকার করছে। বানর রক্ষায় সরকারিভাবে তদারকি বাড়ানো না হলে বানরগুলোও একসময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *