কর্মবিরতিতে মাধ্যমিক শিক্ষকরা, বার্ষিক পরীক্ষাও বন্ধঃ উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা

কর্মবিরতিতে মাধ্যমিক শিক্ষকরা, বার্ষিক পরীক্ষাও বন্ধঃ উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা

BMTV Desk No Comments

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ

দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও দাবি পূরণে সরকারের সাড়া না পেয়ে কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সহকারী শিক্ষক পদটি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত করাসহ ৪,দফা দাবিতে আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন শিক্ষকরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে তারা চলমান বার্ষিক পরীক্ষাও বন্ধ রেখেছেন। ২৪ নভেম্বর থেকে এই বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে।সোমবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিভিন্ন স্কুলে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলেই নোটিশ দিয়ে আজকের পরীক্ষা স্থগিত করার কথা জানানো হয়েছে।এর আগে গতকাল রোববার শিক্ষা ভবনের সামনে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচি থেকে তারা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে তাতে টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের।

তাদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি এক বিজ্ঞপ্তিতে কঠোর কর্মসূচির কথা জানায়।

আন্দোলনকারী মাধ্যমিক শিক্ষকরা বলছেন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, শিক্ষিকাদের দীর্ঘদিনের অধিকার ও বঞ্চনার প্রেক্ষিতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেডভিত্তিক (ক্যাডার) করার দাবি আমরা জানিয়ে আসছি। আমাদের অধিকার আদায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ৪ দফা দাবি জানিয়েছি।৪দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য ঘোষিত যৌথ কর্মসূচির অংশ হিসেবে- নো এনক্যাডারমেন্ট নো ওয়ার্ক। নো গেজেট অব সেকেন্ডারি নো ওয়ার্ক। নো টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড অ্যান্ড অ্যাডভান্স ইনক্রিমেন্ট নো ওয়ার্ক। নো প্রমোশন নো ওয়ার্ক কর্মসূচি পালন করে আসছি।

কিন্তু সরকারের তরফে এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই দাবি আদায়ে সোমবার থেকে আমরা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করছি।

আন্দোলনকারী ময়মনসিংহের শিক্ষকরা বলেন, আমাদের কর্মসূচির কারণে বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলের কাছে আমরা গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। সরকার আমাদের ৪ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করলে আমরা পরবর্তীতে সমন্বয় করে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবো।

তাদের চারটি দাবি হলো—এক. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক‍্যাডারভুক্ত করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ এর গেজেট প্রকাশ। দুই. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর করা। তিন. সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া। চার. ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের ২ থেকে ৩টি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন–সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।শিক্ষকদের এই কর্মসূচি মাধ্যমিকের আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষাকে অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে। এতে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
তবে বার্ষিক পরীক্ষার আগে আগে শিক্ষকদের এমন কঠোর কর্মসূচির বিপরীতে সরকারও কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে সব সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের উপস্থিতি জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা দেয়। অপরদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বার্ষিক, টেস্ট ও বৃত্তি পরীক্ষা সময়মতো গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। এই পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষকদের শৈথিল্য পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে প্রাথমিকের আন্দোলনকারী সহকারী শিক্ষকদেরকে কড়া বার্তা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।সমিতির একজন শিক্ষক নেতা বলেছেন, সরকার যদি তাদের দাবি পূরণ করে তাহলে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো নেবেন এবং ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করবেন। কিন্তু দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতি চলবে।###

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *