ময়মনসিংহে অধিকারের র‌্যালি ও মানববন্ধন মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্বের আহ্বান

ময়মনসিংহে অধিকারের র‌্যালি ও মানববন্ধন মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্বের আহ্বান

BMTV Desk No Comments

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহ: মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর আহ্বানের মাধ্যমে ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন করেছে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার।
বুধবার সকালে ময়মনসিংহ নগরীর সিকে ঘোষ রোডে র‌্যালি শেষে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অধিকার ময়মনসিংহ নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী সাংবাদিক আব্দুল কাইয়ুমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণ তাদের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার পুনরুদ্ধারের সুযোগ পেয়েছে। তবে বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে সংঘটিত গুম বন্ধ হলেও বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে নির্যাতন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নাগরিক নির্যাতনের অভিযোগ এখনও উঠে আসছে। বক্তাদের মতে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য ও চলমান সহিংসতা নির্বাচনী পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক সহিংসতায় বহু মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে, যা গভীর উদ্বেগের।
মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নূরুল হক বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল এবং দেশে ভীতির রাজত্ব কায়েম ছিল। মানুষ সর্বদাই গুম হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটিয়েছে। অতীতের মতো যেন ভবিষ্যতে আর কোনো সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করার সাহস না পায়-এমনটি তিনি আশা করেন।
জামায়াতে ইসলামীর ময়মনসিংহ মহানগর সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, শেখ হাসিনা মানবাধিকার লঙ্ঘনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং গণতন্ত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অপরিহার্য। সে লক্ষ্য পূরণে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের সময়ে অধিকার-এর মানববন্ধনে দাঁড়াতে মানুষ ভয় পেত। যারা দাঁড়াতেন, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানির শিকার হতেন। তিনি বলেন, এখন দেশের মানুষ ফ্যাসিস্টমুক্ত পরিবেশে শ্বাস নিতে পারছে। একইসঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে কোনো ব্যক্তি বা দল যেন মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত না হয়।
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, অনলাইনসহ নানা মাধ্যমে নারীরা এখনো হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রত্যাশিত উন্নতি করতে না পারায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হচ্ছে। তারা জানান, অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে গণপিটুনির ঘটনা বেড়েছে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার মানবাধিকার সুরক্ষায় কার্যকর জাতীয় প্রতিরক্ষামূলক মেকানিজম প্রতিষ্ঠা করবে।
মানববন্ধন ও র‌্যালিতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক একে এম মাহবুবুল আলম, জামায়াতে ইসলামীর মহানগর যুব বিভাগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারী, এখন টিভির ব্যুরো ইনচার্জ ও বিশেষ প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ, কালের কণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার নিয়ামুল কবীর সজল, নয়া দিগন্ত প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল, আমাদের ময়মনসিংহের সম্পাদক কামরুল হাসান, আমার দেশ প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম। এছাড়াও অধিকার ময়মনসিংহ নেটওয়ার্কের মানবাধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *