
You must need to login..!
Description
শফিকুল ইসলাম, বিএমটিভি নিউজঃ শেখ কামালের ৭২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক জননেতা আফজালুর রহমান বাবু’র নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৮ টায় আবাহনী ক্লাব লিমিটেড প্রাঙ্গনে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে এবং সকাল ৯ টায় বনানী গোরস্থানে শহীদ শেখ কামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
সকাল ১০ টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরস্থ ঐতিহাসিক শহীদ শেখ কামালের কর্মময় জীবনের উপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন করেন সংগঠনের সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ। এসময় তিনি বলেন জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামাল ছিলেন অত্যন্ত চৌকস ও মেধাবী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি সাহিত্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়াঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি আবাহনী ক্লাব, স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি অভিনয় করতেন, সেতার বাজাতেন। জাতির পিতার সন্তান হয়েও অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় থাকবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। আজ তাঁর ৭২ তম জন্মবার্ষিকী। শুভ জন্মদিনে শহীদ শেখ কামালের বিদেহী আত্মার প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামালকে বিয়ে করেন। শেখ কামাল বেঁচে থাকলে বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়াঙ্গন আরও অনেক বেশি সমৃদ্ধ হতো। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল।
১৯৪৯ সালের ১৪ অক্টোবর রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু! তখন শেখ কামালের বয়স ছিল ২ মাস ১০ দিন। ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু মুক্তি পান। তখন শেখ কামাল অল্প অল্প কথা বলতে শিখেছে এমন এক সময় বড় বোন শেখ হাসিনা কে বলে হাসু আপা হাসু আপা তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলে ডাকি।
১৯৪৯ সালে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রীসভায় স্থান পান বঙ্গবন্ধু। সেই থেকে স্বপরিবারে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে সেগুনবাগিছা ডন্স কিন্ডারগার্টেন স্কুলে কেজি ১ এ ভর্তি হন শেখ কামাল ১৯৬১ সালে বিএফ শাহীন স্কুলে পঞ্চম শ্রেনীতে ভর্তি হন। সেখানে তিতুমীর হাউজে ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে এসএসসি ও ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি স্নাতক ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি।১৯৭৪ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।১৯৭৫ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অংশ নেন।১৪ আগস্ট মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। পরের দিন ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নেয় প্রতিভাবান তরুণ শেখ কামালকে!১৯৭৬ সালের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় তিনি দ্বিতীয় শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্নাতকোত্তর পাশের ফলাফল জেনে যেতে পারেননি!
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত ৯ টায় বিদায় নিয়ে চলে গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিবাহিনী ১১ টি সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করে।প্রথম ৬১ জন চৌকস মেধাবী তরুনের মধ্যে ১ জন নির্বাচিত হন এবং সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। কিছু দিন পর সেনাবাহিনীর চাকুরী ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। দেশের সাহিত্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়াঙ্গনে একটি অবিস্মরণীয় নাম শেখ কামাল। ঢাকায় যখন কোন ক্লাব ছিল না প্রথম তিনি আবাহনী সমাজ কল্যাণ সংস্থা গড়ে তোলেন।১৯৭২ সালে আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করেন।আবাহনীর অধীনে হকি,ক্রিকেট,টেবিল টেনিস দল ও গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিল গঠন করেন।
নিপুণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনিঁ । তাঁর অভিনীত নাটক গুলোর মধ্যে ম হামিদের দানব,বিজন ভট্টাচার্যের নবান্ন,আল মনসুরের রোলার ও নিহত এলএমজি এবং আমি মন্ত্রী হব অন্যতম। স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে মৃদঙ্গ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৭২ সালে স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেন। অত্যন্ত সাদামাটা সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য জ্যেষ্ঠ সন্তান শহীদ শেখ কামাল। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনও সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে শহীদ শেখ কামালের নাম। স্বেচ্ছাসেবক লীগ প্রতিবছর শহীদ শেখ কামালকে স্মরণ করে বিনম্র শ্রদ্ধা ভালোবাসায়।আলোকচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে শহীদ শেখ কামালের প্রতিভার প্রতিচ্ছবি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও মহানগর উত্তর দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ।