কুকুরে কামড়ানো অসহায় বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ালো “ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি”

image

You must need to login..!

Description

আজহারুল ইসলাম, ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধিঃ  “মানবতার কল্যাণই হোক আমাদের অঙ্গীকার” এই স্লোগানকে সামনে রেখে কুকুরের কামড়ে আহত মহিলা হালিমা বেগম (৬০) এর পাশে দাড়িয়েছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে ধোবাউড়া উপজেলার ৪নং পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের দুধনই গ্রামের মোছাঃ হালিমা বেগম (৬০) নিজ বাড়ির সামনে পারিবারিক কাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় কুকুরের কামড়ে আহত হন তিনি। বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে দারিদ্র্যতার কারনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। ফলে টাকার অভাবে ভ্যকসিন নিতে পারছিলেন না। এমন একটি সংবাদ ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটির এক সদস্যের মাধ্যমে সংগঠনের সমন্বয়কদের কাছে আসলে ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি’র পক্ষ থেকে বুধবার ৮/৯/২১ ইং প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এই অসহায় বৃদ্ধাকে কিছু খাদ্য সামগ্রীও দেওয়া হয়। এসময় ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সমন্বয়ক হাবিব উল্লাহ হাবিব, আল মামুন আজাদ রানা, সোহেল সরকার, জহিরুল ইসলাম সাদ্দাম, ইউনুস আলী, তোফায়েল আলম প্রমূখ। প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করে হালিমা বেগম ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি সংগঠনের কল্যাণ কামনা করে বলেন, আল্লাহ আপনাদেরকে আরও বেশি মানুষের সেবা করার তাওফিক দান করুক।

সংগঠনের সমন্বয়ক আল মামুন আজাদ রানা বলেন- আমরা সব সময় অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। ইনশাআল্লাহ, মানবতার কল্যাণে আমরা সব সময় পাশে থাকবো। গত ২৫ শে আগষ্ট ধোবাউড়া উপজেলার “মা” বাবা হারানো এতিম ছোট্ট শিশু মোঃ সাবিতের পাশে দাঁড়িয়েছে ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি পরিবার। স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের মোঃ সাবিত, যার আনুমানিক বয়স ৩.৫ বছর। দুঃখী সাবিতকে তার মায়ের গর্ভে ৭ মাস বয়সের রেখেই পিতা মোশাররফ হোসেন (ধোবাউড়া সদর ইউনিয়নের দেবাল গ্রামের) দ্বিতীয় বিয়ে করে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। মায়ের গর্ভে থেকেই শুরু হয় সাবিতের দুঃখের কাহিনী। জন্মের পর থেকে নানার বাড়ীতে মায়ের সাথেই চলছিল লালনপালন “মা” শাহানা নিজে কষ্ট করেও কলিজার টুকরো মোঃ সাবিত কে বেশ সুখেই রাখার চেষ্টা করতেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি তার কপালে। গত ৩/৪ মাস পূর্বে সাবিতের জনম দুঃখিনী “মা” দুনিয়া ছেড়ে চলে যান। (আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুণ) দুঃখী সাবিতের হারিয়ে যায় জীবনের একমাত্র আশ্রয়স্থল মায়ের কোল। আগে সাবিতের পিতা জীবিত থেকেও হারিয়ে যাওয়ায় পিতৃহীন ছিলো, এখন “মা” দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ায় হয়ে যায় পিতৃ-মাতৃহীন এতীম। এমতাবস্থায় সাবিতের লালনপালনের দায়িত্ব ভার এসে পরে ঘোষগাঁও ইউনিয়নের বালিগাঁও গ্রামের খেটে খাওয়া দিনমজুর বৃদ্ধ নানা আকবর আলীর উপর। যানা যায়, তিনিও খুব কষ্ট করেই জীবনযাপন করছেন। এককথায় নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো। তারপরও দিনমজুর বৃদ্ধ নানা আকবর আলী সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করছেন মেয়ের রেখে যাওয়া শেষ সৃতি অসহায়-এতিম নাতীকে মানুষ করার জন্য। একদিন ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি’র সমন্বয়ক শেখ শাহীন আহমেদের মাধ্যমে খবরটি পৌছে ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি পরিবারের সদস্যদের নিকট। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন আমরাও আমাদের সাধ্যানুযায়ী ছোট্ট এতিম শিশুটির সাথে আমাদের ভালোবাসা শেয়ার করবো, যেন সাবিতের বৃদ্ধ নানা আকবর আলীর কষ্ট কিছুটা হলেও কমাতে পারি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার দিন বিকেলে ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি পরিবার কিছু সদস্য বালিগাঁও গ্রামে গিয়ে মোঃ সাবিত ও তার বৃদ্ধ নানা আকবর আলীর সাথে দেখা করে তাদের ভালোবাসা ( কিছু পোশাক-পরিচ্ছদ, কিছু খাবার) শেয়ার করে আসেন। সেই সাথে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দিয়ে আাসেন সাবিতের পড়াশোনাসহ আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি পরিবার পূরণের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। এবিষয়ে ধোবাউড়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি’র একজন সমন্বয়ক জানান, আমরা চেষ্টা করছি সমাজের অসহায় দুঃখী দের পাশে থাকতে, পাশাপাশি আমরা প্রত্যাশা রাখি প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমাজের অবহেলিত অসহায়দের পাশে দাঁড়াবেন।