এনায়েতুর রহমান ফুলবাড়ীয়া থেকে : ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নে মিথ্যা মামলা দিয়ে পিতা-পুত্রকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে জনৈক মো. কালামের বিরুদ্ধে। থানায় অভিযোগের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই প্রধান আসামী সাইফুল ইসলাম কে বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করে পুলিশ। সাজানো এই ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৬ বছরের এক স্কুল ছাত্রকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল ইসলামের নিকট হতে ১বছরের জন্য একটা লেবুর বাগান চুক্তিমুল্যে নেয় মো: কালাম মিয়া।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সেখানে এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটে নাই। কালাম মূলত একজন শ্রমিক। সে গাড়ীতে লেবুর বস্তা উঠায় সেই হিসাবে কালাম একজন দিনমজুর। ঐদিন রাত ৯টা পর্যন্ত কালাম লেবুর বস্তা গাড়িতে উঠায় বলে জানান, লেবার সর্দার চান মিয়া। নাম না প্রকাশে অনেকেই জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী বুলবুল এনায়েতপুর ইউনিয়ন এর কর্তৃত্ব চায়, এই জন্য তার ইন্ধনে এমন হচ্ছে।
শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. মকবুল হোসেন বলেন, এখানে এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। আমরা সব সময় এনায়েতপুর বাজারে থাকি। কেউ বলতে পারবে না, কালাম ও সাইফুলের মধ্যে কোন কথা কাটাকাটি হয়েছে। ৬ তারিখ ও ৭ তারিখ দুইদিনই কালাম লেবারের কাজ করছে। তাহলে কোন সময় মারামারি হল আবার হাসপাতালে গেল? এটার পেছনে অন্য কোন রহস্য থাকতে পারে।
শ্রমিক ইউনিয়নের চাঁদা তুলা নিয়া দুই গ্রুপের মধ্যে একটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর জের হিসাবে মিথ্যা ঘটনা সাজানো হয়ে থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।
বিবাদী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার সাথে তাদের শত্রুতা থাকতে পারে, তাই বলে আমার সহজ সরল স্কুল পড়ুয়া ছাত্রকে মামলার আসামী করে ওরা কাজটা মোটেও ঠিক করে নাই। আমার ছেলে নিয়নের মতো একটা ভদ্র ছেলে অত্র এলাকায় নাই। আমি জেলা মটর শ্রমিকের ইউনিয়নের নির্দেশে কাজ করি, তারা যখন যে নির্দেশনা দিবেন সেই অনুযায়ী কাজ হবে। আমার সাথে বড় ঈদের পরে কালামের সরাসরি দেখা হয় নাই।
হাসপাতালের রোগী রেজি: খাতায় দেখা যায়, এনায়েতপুর থেকে আবুল কালাম নামের একজন ৬তারিখ ভর্তি হয়ে ৭তারিখ ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছেন। কিন্তু তিনি ঐরকম কোন রোগী না। অথচ মামলায় অন্য ধারার পাশাপাশি ৩২৬ এর ধারা দেওয়া হয়েছে।
রাত ১০.১০মিনিটে মামলা রুজু হওয়ার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ.এইচ.এম মোকতাদেরুল হাসান রাত ২.৩৫মিনিটে সাইফুলের নিজ বাড়ী এনায়েতপুর থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত সাইফুল কে কোর্টে প্রেরণকালে তদন্ত কর্মকর্তা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর উল্লেখ করেন, বাদীকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করে কুপ মেরে মাথার ডানপাশে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। প্রাথমিক তদন্তকালে গ্রেফতারকৃত ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। মামলাটি তদন্তাধীন আছে। মামলাটি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত বিবাদীকে জেল হাজতে রাখার প্রার্থনা করেন।
অথচ ৭তারিখ কোর্টে প্রেরণের পর আইনজীবির মাধ্যমে হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে কোর্টে হাজির হলে বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসামীর জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার ২নং স্বাক্ষী মো. আ. জব্বার বলেন, আমি কিছুই জানি না। রাত ৩টার সময় হুনি সাইফুল রে ধইরা নিছে গা।
ঘটনাটি মুলত এনায়েতপুর বাজারে শ্রমিক ইউনিয়নের চাঁদা উত্তোলন নিয়ে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে মাত্র।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ.এইচ.এম মোকতাদেরুল হাসান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আরও তদন্ত করা হবে।