You must need to login..!
Description
মতিউল আলম,ঃ
বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, বরেণ্য আইনজীবী, ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়নে প্রধান পূরোধা, ময়মনসিংহ বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ পরিষদ, জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সর্বজন শ্রদ্বেয় বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোঃ আনিসুর রহমান খান (৮৫) বুধবার বিকেল ৫টায় নিজ বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।) মৃত্যুকালের তিনি স্ত্রী, ৫পূত্র ও এক কণ্যা, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও ভক্ত রেখে গেছেন। তিনি ময়মনসিংহ শহরের মনমোহন নিয়োগী রোড পন্ডিত পাড়াস্থ ‘ফেরদৌস’ নামীয় বাড়িতে বসবাস করেন।
বৃহস্পতিবার ১১.৩০ জেলা আইনহজীবী সমিতিতে প্রথম নামাজে জানাজা, দুপুুুর ১২টায় জুবলীঘাটে জেলা নাগরিক আন্দোলন অফিসে শ্রদ্ধা নিবেদন জানানোর জন্য তার লাশ রাখা হবে। বৃহস্পতিবার বাদ জো হর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে ঈদগাহ গুলকিবাড়ি কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে।
অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান ১৯৩৫ সালের ১ লা নভেম্বর নেত্রকেণার মেদনী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্ম গ্রহন করেন। নেত্রকোণা আঞ্জুমান হ্ইা স্কুলের হেলাল উদ্দিন আহম্মদ তার অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খানের পিতা এবং মাতা নাম সায়দাতুন্নেসা খানম ।
অ্যাডভোকেট মোঃ আনিসুর রহমান খােেনর মৃত্যুতে বাংলাদেশ বিমানের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি, জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান, জেলা নাগরকি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমীন কালাম,
বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশন, ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ হরিশংকর দাস ও সাধারণ সম্পাদক ডাঃ এইচ. এ. গোলন্দাজ তারা, ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এফ. এম এ সালাম ও মো. নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক শোক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদবনা জানিয়েছেন এবং মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন।
মোঃ আনিসুর রহমান খান ১৯৪৪ সালে কোলকাতা খিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণীতে পড়াকালীন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে বিমান হামলার আশংকায় নেত্রকেণার আটপাড়ার বানিয়াজান সিটি হ্ইাস্কুলের ভর্তি হয়ে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। পরে ১৯৫২ সালে ঈশ্বগঞ্জের আঠারবাড়ি এম.সি হাইস্কুলে ১০ম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ১৯৫৩ সালে মেট্রিকুলেশন পাস করেন এবং ১৯৫৫ সালে নেত্রকোণা কলেজ কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ১৯৫৯ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে বিএ পাস করে ওই বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। সার্জেন্ট জহুরুল হক হল (তৎকালীন ইকবাল হল) হলে আবাসিক ছাত্র হিসেবে ১৯৬২ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬৩ সালের ৮ জানুয়ারি ময়মনসিংহ বারে আইন পেশায় যোগ দেন।
১৯৭৮ সালে মোমেনশাহী ‘ল’ কলেজে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন অ্যাডভোকেট মোঃ আনিসুর রহমান খান। ১৯৮৯ সালে একই কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি পেয়ে ২০০৯ সালে কলেজ থেকে অবসর গ্রহন করেন। ১৯৭৯ সালে প্রথম ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এছাড়াও একাধিকবার সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ ও ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন এবং একাধারে ৬বছর বার কাউন্সিলের ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের প্রথম মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলামের সান্নিধ্যে এসে ১৯৬৩ সালের আওয়ামীলীগে যোগদান করেন অ্যাডভোকেট মোঃ আনিসুর রহমান খান। ১৯৬৪ সালের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের ট্রেজারার নির্বাচিত হন। তখন সভাপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ভাষা সৈনিক রফিক উদ্দিন ভূইয়া। মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে গারোহিল ডিষ্ট্রিক্ট মহাদেও ইয়ুথ ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই ক্যাম্প থেকে ৪ হাজার যুবককে রিক্রুট করে সশস্ত্র ট্রেনিংএর জন্য বিভিন্ন ক্রাম্পে পাঠানো হয়। পেশাগত কাজের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দেন।
অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমানকে আহবায়ক করে ১৯৮৯ সালের ১৬ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন ও উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ। তিনি মৃত্যুর আগপর্যন্ত এই সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় পরিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন।