ব্রহ্মপুত্র নদের খনন কাজ শেষ হলেও ৫বছর পর্যন্ত ড্রেজিং কাযক্রম চালু থাকবে-প্রকল্প পরিচালক

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ ব্রহ্মপুত্র নদ খনন প্রকল্পের পরিচালক ও বিআইডব্লিউটিএ এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার বলেছেন, ময়মনসিংহ অংশের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে খননকৃত নদের  ৭ কিলোমিটার এলাকায় চর জেগে উঠেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের সম্পূর্ণ খনন শেষ হলে আর চর জেগে উঠবে না। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও ৫বছর পর্যন্ত ড্রেজিং কাযক্রম চালু থাকবে। তিনি আরো বলেন দেশের নদীগুলো ধীরে ধীরে নাব্যতা হারানোর কারণে পানি প্রবাহ হ্রাস, ক্রস বাউন্ডারী প্রবাহ হ্রাস, পলি প্রবাহ বৃদ্ধি এবং জোয়ারের প্রবাহ কমায় নৌপথ কমে গেছে। নাব্যতা রক্ষা ও আভ্যন্তরীণ নৌপথ পুনরুদ্ধারে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রয়োজন। রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে ব্রহ্মপুত্র নদ খনন সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদটি যমুনা নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শুকিয়ে যায়। ঐ সময়ে উজান থেকে কোন পানি আসেনা। এতে কৃষি বিপর্যয়, মৎস্য চাষে হ্রাস, নৌচলাচল বন্ধ এবং পরিবেশ মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

ভুগর্ভস্থ পানির স্তর স্বাভাবিক রাখা, পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, নদীর গভীরতা বৃদ্ধি, নদীর পানির প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে নদী হতে পুর্বের ন্যায় পরিবেশগত ও প্রকৃতিগত সুবিধালাভে, নদী হতে মৎস্য সম্পদ উৎপাদন ও সেচ সুবিধা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দুরীকরণে সারাবছর নৌচলাচলের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করে পরিবহন ব্যবস্থায় ইতিবাচক করতে নদী খনন জরুরী। এই অবস্থায় অতীতে কোন সরকার পদক্ষেপ নেননি।

বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নদীর নাব্যতা রক্ষা ও আভ্যন্তরীণ নৌপথ পুনরুদ্ধারে যুগোপযোগী বিশাল পদক্ষেপ নিয়েছেন। যা দেশের জন্য ইতিহাস বলেই তিনি দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। বিআইডব্লিটিএ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে, ৪৩২১ কোটি টাকা। যার মধ্যে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের জন্য ২৭৬৩ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। ৬ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পটি ১/৯/২০১৮ তারিখে শুরু হয়েছে।

ব্রহ্মপুত্র নদ খনন সম্পর্কে তিনি বলেন, উৎসমুখ থেকে নদীটির দৈর্ঘ্য টোক হয়ে ভৈরব পর্যন্ত উন্নয়ন করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় উৎসমুখ (জামালপুরের পুল্লীকান্ডি) হতে টোক পর্যন্ত ২২৭ কিলোমিটার ধরা হয়েছে। ১০০ মিটার প্রশস্ততায় এবং শুস্ক মৌসুমে মার্চ মাসে ১০ ফুট পানির গভীরতা রক্ষায় খনন কাজ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজের গতি অনেকটা কমে গেছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বর্তমানে পুরোদমে কাজ চলছে।

নদী খননের মাধ্যমে তলদেশ থেকে উত্তোলিত বালু ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তিনি বলেন, এই ক্যাপিটাল ড্রেজিং পরবর্তী ড্রেজ করা বালি রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ৬৪টি স্থানে ৭০৫ হেক্টর জমি চিহিৃত করা হয়েছে। এর মাঝে ৩১টি স্থান ভরে গেছে। এই বালু সরানো না হলে খনন কাজ করা বিলম্বিত হয়ে পরবে। স্থানীয় প্রশাসন এই বালু ব্যবস্থাপনা করছেন। বিআইডব্লিটিএ এই কমিটির সদস্য মাত্র।

এ সময় প্রকল্পের কনসালটেন্ট শরাফত হোসেন খান, নির্বাহী প্রকৌশলী দিদার আলম, বিআইডব্লিটিএ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা সাথে ছিলেন।

মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের মধ্যে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এজেডএম ইমাম উদ্দিন মুক্তা, সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ নওয়াব আলী, সাধারন সম্পাদক বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আতাউল করিম খোকন, সাংবাদিক এ এইচ এম মোতালেব, আবুল হাসিম, নিয়ামুল কবির সজল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার