You must need to login..!
Description
শফিকুল ইসলাম,বিএমটিভি নিউজঃ ময়মনসিংহের সীমান্তর্বতী পাহাড় ঘেষাঁ ধোবাউড়া উপজেলার ঘোষগাঁও ইউনিয়নের সিদলীপাড়া গ্রামের প্রায় অধিকাংশ হিন্দু পরিবারের বসবাস । এই ছোট্ট গ্রামটিতেই প্রায় সকল পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে বাশেঁর পণ্য তৈরী করে ।
বাঁশের তৈরি পণ্য বাঙালির পুরোনো ঐতিহ্য। পুরোনো এই ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু পূর্ব পুরুষের এই পেশাকে এখনো ধরে রেখেছেন ধোবাউড়া উপজেলার ঘোষগাঁও ইউনিয়নের সিদলীপাড়া গ্রামের পরিবারগুলো। পূর্ব পুরুষদের এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে ও জীবিকা পরিচালনা করতে তারা এখানো তৈরি করছেন ঝুঁড়ি, ডালা, কুলা, চালুনি, হাতপাখাসহ নানা পণ্য।
সরেজমিনে দেখা যায় নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে নানা রকমের বাঁশের তৈরি পণ্য। নানা বয়সের মানুষ গুলো তৈরী করছে এই বাঁশে তৈরী পণ্যগুলো ।
এ সময় তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বাঁশের তৈরি পণ্যসামগ্রীর তৈরী করেই জীবন যাপন করছে । কারণ প্রতিটি সদস্য এই কাজটি করতে পারে ।
গ্রামের সাধু বিশ্বাস জানান, আমাদের কোনো কৃষি জমি নেই বসবাস করার মতো শুধু বসতবাড়িটি আছে তাই ইচ্ছে করলেও আমরা অন্য কোন কাজ করতে পারি না । তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই এই পণ্যগুলো তৈরী করে থাকি ।
মিলন রানী ক্ষত্রিয়র কাছে জানতে চাইলে জানান,একজনে প্রায় আট থেকে দেশটি কোলা, চালুন তৈরী করতে পারি । প্রতিটির কোলা,চালুন সর্বোচ্চ ৬০টাকা করে বিক্রি করতে পারি । যা দিয়ে মোটামোটি আমাদের সংসার চলছে ।
নবম শ্রেণীতে পড়োয়া তমা দেবনাথ জানান, আমি পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে এই বাঁশের পণ্যগুলো তৈরী করি । ছোট থেকে আমি এইগুলো তৈরী দেখতে দেখতে এখন আমিও তৈরী করতে পাড়ি ।
পাইকার মনোরঞ্জন জানান, আমার পরিবারের সকল সদস্য এই বাঁশের পণ্যগুলো তৈরী করতে পারে এমনকি আমার স্কুল পড়োয়া ছেলে মেয়েরা সবাই এই কাজ করে ।
এছাড়াও আমি পাইকারি এই পণ্যগুলো ক্রয় করে বিভিন্ন এলাকার বাজারে বাজারে বিক্রি করি । কোলা,চালুন প্রতি পিস ৫০/৬০ টাকা করে ক্রয় করে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি তবে সিজনের সয়ম দাম ও চাহিদা বাড়ে ।
বিশ্ববিদ্যলয়ে পড়োয়া রুপক জানান, প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন তা হারিয়ে যেতে বসেছে। সরকারি ও বে-সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে সহায়তা পেলে বাঁশ শিল্পের সোনালি দিন ফিরিয়ে আসতো ।
ঘোষগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ হারুন-অর-রসিদ বলেন,এটি একটি অলাভজনক পেশা। বাঁশ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে এই পেশার সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে আমাদের সকলের পরিকল্পনা গ্রহন করা দরকার। সরকারি ও বে-সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে সহায়তার মাধ্যমে দেশের ঐতিহ্যকে আমাদের ধরে রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব কারন এই সব শিল্পের সাথে আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য জড়িত ।