উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি : পাবনার সাঁথিয়ায় অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্যর জমি ভাড়া নিয়ে স্কুল চালানোর নাম করে এখন জমি দখল করার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ভূক্তভোগী অব. পুলিশ সদস্য আব্দুল জলিল খাঁন শনিবার (৮ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার বনগ্রাম বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অব. পুলিশ সদস্য আব্দুল জলিল খাঁন বলেন, বামনডাঙ্গা গ্রামে তার নিজ নামীয় একটি সম্পত্তি রয়েছে। ওই জায়গা ১০ বছরের জন্য ভাড়া স্থানীয় কলেজ শিক্ষক আ: লতিফ তার অপর দুই সহযোগী আব্দুল করিম ও ব্যবসায়ি হারুনর রশীদ কে সাথে নিয়ে এলকেএইচ মডেল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নাম দিয়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রæয়ারি উভয় পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে স্কুলের মূল উদ্যোক্তা প্রভাষক আব্দুল লতিফ এবং আব্দুল করিম স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে চুক্তি বাতিল করেন। তারা জানান, তারা স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে জানিয়ে দেন, স্কুল ভাড়ার ৩নং পার্টনার হারুনর রশীদের নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারণে তারা চুক্তি বাতিল করে চলে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় স্কুল ভাড়ার ৩নং পার্টনার হারুনার রশীদ জায়গা অবমুক্ত করে চলে না গিয়ে স্কুলের নামই অবৈধভাবে বদল করে ফেলেন। তিনি এলকেএইচ মডেল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নাম বদল করে নিজের বাবার নামে শমসের আলী টেকনিক্যাল স্কুল কলেজ নামকরণ করেন। পুলিশ সদস্য আব্দুল জলিল খাঁন বলেন শমসের আলী টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নামের প্রতিষ্ঠানের সাথে তার কোন চুক্তি ছিল না। আর প্রতিষ্ঠাসেনর মূল উদ্যোক্তা চুক্তি বাতিল করায় সে চুক্তির কার্যকারিতাও নেই।
লিখিত বক্তব্যে অব. পুলিশ সদস্য আব্দুল জলিল খাঁন বলেন চুক্তি বাতিল হওয়ার পরও হারুনর রশীদ তার কথিত কলেজ সরিয়ে না নেওয়ায় তিনি কলেজের পরিচালক হারুনর রশীদকে কয়েক মাস আগে একটি নোটিস দেন। ওই নোটিসে ১ জানুয়ারি ২০২৩ এর মধ্যে চুক্তি ভঙ্গের দায়ে প্রতিষ্ঠানটির আসবাবপত্র নিজ খরচে সরিয়ে নেয়ার জন্য লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ( হারুনর রশীদ) তা করেননি। তিনি ৫ মাসের ভাড়াও দিচ্ছেন না। এ অবস্থায় তার অবৈধ প্রচারণা ও ভাড়া না দেওয়ার কারণ জানতে অব. পুলিশ সদস্য তার ছেলেসহ চুক্তিপত্রে তার সাক্ষীদের নিয়ে ১ জানুয়ারি ২০২৩ সালে হারুনর রশীদদের কাছে যান। এ সময় হারুনর রশীদের সাথে কয়েকজন মিলে ‘শমসের আলী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ’ এর নামে নতুন চুক্তিপত্র লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। বাক-বিতন্ডা চলাকালীন অনেক উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। এ সময় হারুন অর রশীদ অবরুদ্ধ বলে বিভিন্ন স্থানে ফোন করে জানান। তিনি আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতে বই বিতরণ কাজ ব্যাহত করার অভিযোগও তোলেন। তিনি থানায় একটি মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়।
অব. পুলিশ সদস্য আব্দুল জলিল খাঁন আরো বলেন বেশ কিছু লোকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি হারুনর রশীদ প্রচার করছেন, তিনি এ প্রতিষ্ঠানের জায়গা কিনে নিয়েছেন তাই জায়গার ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না। অব. পুলিশ সদস্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার নামে তার নিজস্ব সম্পত্তি বেদখল হওয়ার আশংকায় শংকিত বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ওঠা অভিযোগ সম্বন্ধে কলেজ পরিচালনাকারী ভাড়াটিয়া হারুনর রশীদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রভাষক আ: লতিফ, স্থানীয় ইউপি মেম্বার ফিরোজ মোল্লা, সাবেক ইউপি মেম্বার হায়দার আলী সেখ, আলহাজ আব্দুল কাদের শেখ, আলহাজ আব্দুল গফুর খাঁন, আব্দুল মান্নান খাঁন,ইউনুছ আলী মোল্লা প্রমুখ।