You must need to login..!
Description
বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়ার পর অধিকাংশ রোগীর শরীরেই পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা তাদেরকে আবারও করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কিন্তু এই অ্যান্টিবডি কতদিন সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে তা সম্পর্কে চিকিৎসকেরা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। তবে ইতোমধ্যে ভাইরাসটিতে পুনরায় সংক্রমিত হয়েছেন এমনকিছু রোগী পাওয়া গেছে।
গবেষকদের মতে, দুই ধরনের লোক পুনরায় সংক্রণের ঝুঁকিতে থাকতে পারে: বয়স্ক মানুষ এবং যারা কোভিড-১৯ থেকে নিরাময়ের পর যথেষ্ট প্রতিরোধী ব্যবস্থার মধ্যে নেই। তাই নিরাপদ থাকতে করোনার সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ, যেমন- ফেস মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। এর পাশাপাশি ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এখানে কোভিড-১৯ থেকে নিরাময়ের পর কিছু করণীয় দেয়া হলো।
* নিয়মিত শরীরচর্চা: করোনার সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পরপরই শরীরচর্চাকে কঠিন মনে হতে পারে। কারণ এসময় শরীর দুর্বল থাকে। তাই যথাসম্ভব ভালো ভালো খাবার খেয়ে শরীরচর্চায় অভ্যস্ত হতে হবে। ধীরে ধীরে প্রতিদিন শরীরচর্চা করলে শরীর ও মন উভয়েই উপকৃত হবে। এসময় কঠিন ব্যায়াম দিয়ে শরীরচর্চা শুরু করবেন না, এমন ব্যায়ামে অভ্যস্ত হোন যা আপনার কাছে সহনীয় মনে হয়।
* পুষ্টিকর খাবার: স্বাস্থ্যকে সমৃদ্ধ করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চর্চা হলো, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। করোনাভাইরাস শরীরে অনেকগুলো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সংক্রমণের সময় যেসব ওষুধ সেবন করা হয় সেগুলোও শরীরকে রুগ্ন করে তোলে। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সত্য হলো, করোনার সংক্রমণে কিছু লোকের ওজন কমে যায়। এর বিপরীতে কারো কারো ওজন বেড়ে যায়। তাই স্বাস্থ্যকে পুনরুদ্ধার করতে খাদ্যতালিকাকে পুষ্টিকর বা স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে ঢেলে সাজাতে হবে।খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ডিম ও পোল্ট্রির মাংস সংযোজন করুন। ঘরে রান্নাকৃত খাবার খান। এমন খাবার খাবেন না যা শরীর সহজে হজম করতে পারে না। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাবার খাবেন না।
* স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির চর্চা: গবেষকদের মতে, করোনার সংক্রমণে স্মৃতি কোষসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যারা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের অনেকেই মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় কার্যক্ষমতা কমে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাই কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়ার পর স্মৃতি, মনোযোগ ও চিন্তাভাবনার স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে পাজলস ও মেমোরি গেমস খেলতে পারেন। এছাড়া সৃজনশীল চিন্তাভাবনাকে উদ্দীপ্ত করে এমন কাজেও যুক্ত হতে পারেন। নিয়মিত বইও পড়তে পারেন।সারকথা হলো, মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় অংশ প্রভাবিত হয় এমন যেকোনো কাজই করতে পারেন। এমনকি পর্যাপ্ত ঘুমও মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় কার্যক্রমের স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার করতে পারে।
* ধৈর্যধারণ: হাসপাতাল থেকে ঘরে ফিরেই অথবা পুনরায় করোনা টেস্টে নেগেটিভ রেজাল্ট পাওয়ামাত্রই স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে তাড়াহুড়ো করবেন না। ধীরে ধীরে দৈনন্দিন কাজগুলোতে আবারও অভ্যস্ত হোন। মনে রাখবেন, এমন একটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ে সুস্থ হয়েছেন যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেছিল। তাই সুস্থ হওয়া মাত্রই বিরামহীন একের পর এক কাজ করতে থাকলে ইমিউন সিস্টেম বিপর্যস্ত হতে পারে। কোভিড-১৯ থেকে নিরাময়ের পর যাই করেন না কেন, ধীরেসুস্থে করুন। অযথা মানসিক চাপ বাড়াবেন না।
* অপরের সাহায্য: করোনার সংক্রমণে যখন কেউ অসুস্থ হন তখন তাকে অপরের সাহায্য নিতে হয়। এসময় যারা পাশে থাকেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। এমনকি আরোগ্যলাভের পরও তাদের সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন হতে পারে। কারণ নিরাময়ের পর কারও কারও পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন হতে পারে অথবা শরীর দুর্বল থেকে যেতে পারে। দুর্বল শরীর নিয়ে খাবার প্রস্তুত অথবা নিজের অন্যান্য কাজ করতে গেলে স্বাস্থ্য ভেঙে পড়তে পারে। তাই নিজেকে সতেজ বা সজীব মনে না হওয়া পর্যন্ত অন্যের সাহায্য নিতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না।
* উদ্বেগজনক লক্ষণ দেখলে চিকিৎসককে জানান: কোভিড-১৯ থেকে নিরাময়ের মানে এই নয় যে, অবধারিতভাবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছেন। করোনা টেস্টে নেগেটিভ রেজাল্ট আসার পরও মাথাব্যথা করতে পারে অথবা ক্লান্তি লাগতে পারে। এছাড়া করোনার সংক্রমণ থেকে আরোগ্যলাভের পর অন্যান্য উদ্বেগজনক লক্ষণেও ভুগতে পারেন। এ বিষয়ে চিকিৎসককে জানাতে হবে, তিনি যেমন পরামর্শ দেবেন তা মেনে চলতে হবে