You must need to login..!
Description
বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ“যুদ্ধ চাই না!” বৃহস্পতিবার রাতে সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রধান রাস্তা নেভস্কি প্রসপেক্টে জড়ো হয়ে এই স্লোগান তুললেন বেশিরভাগ তরুণ রাশিয়ান। কিয়েভ এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের সাথে কয়েক মাস উত্তেজনা চলার পর বৃহস্পতিবার সকালে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে “সামরিক অভিযান” এর ডাক দেন। হামলা শুরু হওয়ার আগে একটি বক্তৃতায় পুতিন দাবি করেছিলেন যে ইউক্রেন আক্রমণ করা ছাড়া তার কাছে অন্য কোনো বিকল্প নেই। রাশিয়ান বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের সংঘাত-প্রবণ অঞ্চলগুলির বাইরেও আক্রমণ করেছে, যেখানে মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বাধীন হিসাবে স্বীকৃত এলাকাগুলি চালায়। সেখানে খারকিভ এবং তার বাইরের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকগুলিতেও বিমান হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাতের মধ্যে, ইউক্রেনীয়রা তাদের দেশ থেকে পালাতে শুরু করেছে ,পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাশিয়ায় যেকোনো রকমের প্রতিবাদ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনীয় সীমান্তে রাশিয়ার সামরিক গঠন নিয়ে পূর্ব-পশ্চিমে বিরোধ বৃদ্ধি পেলেও, বিশ্বের বৃহত্তম দেশটির মধ্যে মতবিরোধ খুব বেশি ছড়িয়ে পড়েনি , নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আসলে রাশিয়ার খুব কম লোকই বিশ্বাস করেছিল যে যুদ্ধ হতে পারে।
কিন্তু পুতিন সবাইকে চমকে দিয়ে যেভাবে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন তার পর থেকে ভিন্নমত পোষণ করতে শুরু করেছে দেশের নাগরিকদের একটা বড় অংশ। সেন্ট পিটার্সবার্গের সমাবেশে একজন তরুণী আল জাজিরাকে বলেন, “এবিষয়ে বলার জন্য আমার কাছে কোনো শব্দ নেই, বিষয়টি অত্যন্ত ঘৃণ্য। আমরা যন্ত্রনা অনুভব করছি।” বেশ কয়েকটি শহর জুড়ে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাশিয়ানদের মধ্যে ছিলেন ওই তরুণী।
বিক্ষোভ দমনে শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।এর আগে বৃহস্পতিবার, কয়েক ডজন সাংবাদিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, বিবিসি, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের নিন্দা জানিয়ে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছিলেন। মস্কো, সেন্ট পিটার্সবার্গ, সামারা, রিয়াজান এবং অন্যান্য শহর থেকে শতাধিক মিউনিসিপ্যাল ডেপুটি রাশিয়ার নাগরিকদের কাছে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন , যেখানে তাঁরা বলেছেন “আমরা, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত ডেপুটিরা, ইউক্রেনে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর হামলার নিন্দা জানাই। এটি একটি অতুলনীয় নৃশংসতা যার কোনো বর্ণনা চলে না ।” সেন্ট পিটার্সবার্গে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় ঐতিহাসিক গোস্টিনি ডভোর শপিং আর্কেডের বাইরে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে শুরু করে। পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতির মধ্যে কিছু মানুষের কান্নার শব্দে গোটা পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছিল। এক মহিলা ইউক্রেনের পতাকার রঙে বেলুনের তোড়া হাতে তুলে নিয়েছিলেন। বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হলে পুলিশ তা দমন করতে বর্ম, হেলমেট এবং লাঠিসোঁটা হাতে প্রস্তুত ছিল। তবে আক্রমণের পরিবর্তে পুলিশকে লাউডস্পিকার হাতে বলতে শোনা গেছে , ‘এটি একটি অননুমোদিত বিক্ষোভ এবং কেউ এতে অংশ নিলে গ্রেফতারের ঝুঁকি রয়েছে।’ তবে জনতার মধ্যে থেকে স্লোগান উঠতে থাকে ইউক্রেন আমাদের শত্রু নয়। রাশিয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে। সমাবেশের আকার পরিমাপ করা কঠিন ছিল, তবে কমপক্ষে কয়েকশ লোক সেখানে ছিল বলে অনুমান। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ বলে ওঠেন ”পুতিন একজন খুনি! পুতিন রাশিয়ার লজ্জা!” প্রতিবাদীরা উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে যুদ্ধ কতদিন চলবে।