You must need to login..!
Description
স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজ ঃ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভালো কাজ করলে মানুষ প্রশংসা করবেই। আর খারাপ করলে নিন্দা করবে। গত মাসে হুইপ আতিউর রহমান আতিক একটি সড়কের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সচিবকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলাম। তিনি প্রকৌশলীদের হুশিয়ারি ও সতর্ক করে বলেন, কোনো অনিয়ম কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া হবে না।
মন্ত্রী বলেন মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিন থেকে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) ও সহকারী প্রকৌশলীর (এই) ঘাটতি রয়েছে। শুনেছি অর্গানোগ্রাম হালনাগাদের কাজ চলছে।
‘সওজ’র জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি এগুচ্ছেনা কেন’ প্রশ্ন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর। তিনি বলেন ‘আমি নিজে জনপ্রশাসনের মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীকেও বলেছি। এটিতো সওজের বিষয় নয় এটা মন্ত্রণালয়ের বিষয়। সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখা এটি জনপ্রশাসনসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি আদায়ে এপর্যন্ত কী কাজ করছেন। মাসের পর মাস ঘুরতে হবে কেন।
সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন করতে হলে বিআরটিএ এর জনবল বৃদ্ধিও জরুরি। যেখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার। বিআরটিসির সমস্যাও নতুন নয়। উত্তরণে মন্ত্রণালয়ের বিআরটিসি শাখা কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে। যেখানে কথা বলা দরকার সেখানে কথা বলার জন্য সচিবকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
এরপর সম্ভব না হলে মন্ত্রী নিজে সহযোগীতা করবেন বলে আশ্বাস দেন। মন্ত্রলালয়ের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে যে কারো সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত বলে জানান মন্ত্রী। কিন্তু জনবল বৃদ্ধির ফাইল ঝুলে থাকবে কেন।
‘দেশের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ার ফলে দিন দিন যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে সেবার চাপ। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মানুষের দীর্ঘ অপেক্ষা আমাকেও পীড়া দেয়’।
দ্রুততম সময়ে কাজ সম্পন্ন করে লাইসেন্স প্রদানের কাজ শুরু করতে বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। পাশাপাশি বিষয়টি তদারকির অনুরোধ করেন মন্ত্রী। মন্ত্রলালয়ে যিনি তদারক করেন তাকেও এই নির্দেশ দেন।
সোমবার ১০ আগষ্ট ময়মনসিংহ সড়ক জোন, বিআরটিএ ও বিআরটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন তিনি।
এ সময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন, সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চন্দন কুমার দে, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মনির হোসেন পাঠান, ময়মনসিংহ সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, ময়মনসিংহ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ.কে এম আজাদ রহমান, জামালপুর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীরণ রায়, ময়মনসিংহ ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ওয়াহিদুজ্জামান, জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামান, শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার শরীফুল ইসলাম, নেত্রকোণার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হামিদুল ইসলাম ও কিশোগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাশেদুল আলম, বিআরটিএ সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল খালেক, সওজ ময়মনসিংহ সদরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আজহারুল ইসলাম, বিআরটিসি ময়মনসিংহ ডিপো ম্যানেজার (অপারেশন) মোঃ কামরুজ্জামান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কারখানা বিভাগ মোঃ আশরাফুল আলমসহ প্রকৌশলী, ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম খান ও সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মতিউল আলম, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএইচ এম মোতালেবসহ বিআরটিসি ও বিআরটিএ’র কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ইতিমধ্যেই সকল সড়ক জোনের সাথে মতবিনিময় শুরু হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় ১০আগষ্ট ময়মনসিংহ সড়ক জোনের সাথে মতবিনিময় হয়। মন্ত্রী বলেন প্রতিটি সভায় গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরছি। তা হলে সড়ক নির্মাণে গুণগত মান। এ বিষয়টিকে আর অবহেলা করা যায় না। এক শ্রেণীর ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর যোগসাজসের ফলে সড়কের খারাপ মানের হচ্ছে। প্রকল্পের নির্মাণ কাজে ব্যববহৃত নি¤œমানের এবং চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করায় অল্প সময়ের মধ্যেই সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে এক পসলা বৃষ্টিতেই সড়ক বেহাল হয়ে যাচ্ছে।
প্রকৌশলীরা সড়ক নির্মাণকালীন নিবিড় তদারকি করলে ঠিকাদাররা নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের সুযোগ পেতেন না। জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে এমন অপব্যহার কখনও মেনে নেয়া যায় না।
সড়ক নির্মাণের পর নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার আগেই সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হলে তার দায়-দায়িত্ব ঠিকাদার এবং নির্মাণকালের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীসহ সকলকেই নিতে হবে। এবিষয়ে করণী নির্ধারণে সওজ এবং মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
অনেক সময় দেখা যায় দরপত্র আহবান থেকে কার্যাদেশ প্রদান পর্যন্ত প্রকৌশলীগণ যতটা এ্যাক্টিভ থাকেন ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ উঠিয়ে নেয়ার বিষয়ে ততটুকু এ্যাক্টিভ থাকেন না। নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্পের কাজ কেন শেষ হবে না বলে প্রশ্ন করেন মন্ত্রী।
যৌক্তিক কারণ ব্যতিত যেসব ঠিকাদার চুক্তিকৃত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করবে না, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রকৌশলীদের নির্দেশ প্রদান করেন মন্ত্রী।
মাঠ পর্যায়ের কাজ মূলত তদারকির কাজ, তা দপ্তরে বসে করার কাজ নয়। অফিস থেকে মনিটরিং এ বেশী সময় নিতে হবে আমাদের। এ নিয়ে ডিওলেটার বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে।
তরুণ প্রকৌশলীরা যেমন মাঠ পর্যায়ে রয়েছেন অপরদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক অবকাঠামমো উন্নয়ন প্রকল্পে মন্ত্রণালয়কে পর্যাপ্ত বরাদ্দও দিচ্ছেন। তাহলে কেন আপনারা কাজে অবহেলা করবেন। কেন সড়কের মান খারাপ হবে এবং কেন সঠিক সময়ে কাজ শেষ হবে না বলে প্রকৌশলীদের প্রশ্ন করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন আমি ঢালাওভাবে সবাইকে বলছি না। অনেকেই ভালো কাজ করছেন। আবার আনেকের কাজে হতাশ হচ্ছি আমরা। আমাদেরও কাছে পুরা দেশের খবর আছে। আমি তৃণমূল থেথে ওঠে আসা রাজনৈকিত কর্মী। আমার সাথে দীর্ঘদিন সাংবাদিকতার সূত্রে সাংবাদিকদেরও একটা যোগাযোগ আছে। কাজেই রাস্তায় কোখায় কী আবস্থা আমি নিয়েমিত ফিডবেক পাই।
বিআরটিসি’র বাইরে নতুন করে দেড় হাজারের বেশী বাস ও ট্রাক যুক্ত করেছেন শেখ হাসিনার সরকার। এসব পরিবহন লীজ প্রদানে স্বচ্ছতার পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের বকেয়া এবং লোকসান কমিয়ে আনার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। আর কতকাল আমরা অর্থ মন্ত্রলালয়ের দ্বারস্থ হবো ভর্তুকির জন্যে।
মন্ত্রী সড়ক জোনের প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রকল্পের তাজ যথাসময়ে শেষ করতে হবে। তা নাহলে কেউ এর দায় এড়াতে পারবেন না এমনকি আমিও পারিনা, মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে।
ইটনা-মিটামইন-অষ্টগ্রামে হাওরের বুক চিরে সফলভাবে সাবমার্সিবল ও ফ্লেক্সিবল সড়ক নির্মাণণের জন্য সওজ কিশোরগঞ্জ বিভাগসহ ময়মনসিংহ জোনের প্রকৌশলীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন মন্ত্রী। নিঃসন্দেহে এই প্রকল্পের কাজটি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। ইতিমধ্যেই দৃষ্টিনন্দন এই সড়কটি পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। হাওরের মানুষের অকৃত্তিম বন্ধু ভাটিবাংলার প্রাণপুরুষ, যার হৃদয় হাওরের দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশির মত উদার আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং আমাদের সফল প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ব শেখ হাসিনার একান্ত আগ্রহে এই সড়কগুলো নির্মিত করেছে সড়ক বিভাগ। ভাটিবাংলার অপ্রত্যাশিত এই উপহার প্রদানের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সড়ক পরিহবন মন্ত্রী।
মন্ত্রণালয়ের সকলকে সতর্ক করে মন্ত্রী বিনয়ের সাথে বলেন, দয়া করে লোভের বশবর্তী হয়ে কেই অনিয়ম করবেন না। কারো কোনো আর্থিক সমস্যা থাকলে গোপনে আমাকে (মন্ত্রী) জানবেন। আমি দেখব আপনার ব্যক্তিগত সমস্যা। কিন্তু অনিয়ম করবেন না। বিভাগের কে কী করছেন সব খবর আমার কাছে আছে। সরকার অনিয়মের বিরদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
সড়ক জোনের আওতায় বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কসমূহ দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। সারাদেশের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পাঠানো প্রতিবেদনে অন্যান্য জোনের তুলনায় ময়মনসিংহ জোনে অধিক সংখ্যক সড়ক উন্নয়নের জন্য প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এগুলো বিবেচনা করে যৌক্তিকীকরণ এবং অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশাপাশি জেল সড়কগুলোক্ওে বিশেষ নজর দিতে হবে। নেত্রকোণার বিরিশিরি- দুর্গাপুর এলাকা। করোনার পর বিপুল সংখ্যক পর্যটক যাবেন ওই এলাকায়। তাই যে কোনো মূল্যে ওই সড়ক পরিপাটি কওে রাখার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।