৩ বছরে ৬১ কোটি টাকার মাদক, ৪৪টি হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে রেকর্ড গড়েছে ডিবির ওসি

image

You must need to login..!

Description

মতিউল আলম ও শফিকুল ইসলাম,  বিএমটিভি নিউজঃ  ৩ বছরে ৬১ কোটি টাকার মাদক, ৪৪টি হত্যার রহস্য উন্মোচন করে রেকর্ড গড়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ। গত তিন বছরে জেলায় যতগুলো চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে.সেই সব মামলার তদন্তভার ডিবি’র উপর ন্যাস্ত হওয়ায়,খুব দ্রুত সেসব ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন শাহ কামাল হোসেন আকন্দ। সদিচ্ছা থাকলে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। অপরাধীরা যত শক্তিশালী হোক না কেন, পুলিশ যদি আন্তরিক থাকে,তবে কেউ অপরাধ করে পাড় পাবে না,এটাই সত্য। যার জলন্ত প্রমান দিয়েছেন (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ।

এসময়ে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে ২ টি পদক, বিভাগীয় ১৮টি  ও জেলা পর্যায়ে ২২টি  শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে পুরস্কার লাভ করেছেন।  তিনি শুধু অপরাধ দমনেই পারদর্শী নন। মানব সেবায় করোনাকালীন সময়ে মানুষকে ঘরে থাকতে উদ্ধুদ্ধ করতে বিশেষ উদ্যেগ নেন। পুলিশ বিভাগে এত পুরস্কার লাভের ঘটনা বিরল। সামাজিক এবং মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

প্রায় ৩ বছর আগে শাহ কামাল হোসেন আকন্দ ময়মনসিংহ ডিবিতে ওসি হিসেবে যোগ দেন। সে সময় এ জেলায় অপরাধ ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। নগরবাসীর ঘুম ভাঙ্গলেই শোনা যেত খুন,ডাকাতি,মাদকের রমরমা ব্যবসা। নড়েচড়ে বসেন শাহ কামাল হোসেন আকন্দ। তিনি পুলিশ সুপারের পরামর্শে একটি শক্তিশালী ডিবি টিম গঠন করে শুরু করেন অপরাধীদের বিরুদ্ধে তৎপরতা। শুরু হয় এ্যাকশন। তিনি তার সময়ে ৪৪টি হত্যার রহস্য উন্মোচনই শুধু করেননি। এসব ঘটনায় জড়িত ৭৬জনকে গ্রেফতারে সক্ষম হন। যাদের অধিকাংশ আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। কয়েকটি উল্লেখ্য করতে চাই ,ব্রীজের কাছে লাশের তিন টুকরা,মাথা নেই। এই নৃশংস মার্ডার নিয়ে জেলাবাসী যখন আতংকে,ডিবি তখন রহস্য উদঘাটনে তৎপর। অবশেষে শুধু মাথা উদ্ধার নয়, ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে আটক ও স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী আদায় করে মানুষের মন থেকে ভীতি দূর করতে সক্ষম হন। এ ঘটনায় নগরবাসী তাকে ব্যাপক প্রশংসা করেছেন। চাঞ্চল্যকর কুলেস মামলার মধ্যে ব্রীজের মোড়ে ট্রলি ব্যাগে লাশের খন্ডিত টুকরা, গফরগাঁয়ের পাগলায় অটোচালক শিহাব হত্যা, গৌরীপুরে যুবলীগ নেতা শাহীনুর হত্যা, গার্মেন্টস কর্মী হত্যা, রুবেল হত্যা।


গত তিন বছরে ৬০ কোটি ৮২ লাখ ৮৬হাজার ৪০০শত টাকার মাদক উদ্ধার করেন। এরমধ্যে আছে ১০কেজি ২৭২ গ্রাম হেরোইন, ১লাখ ১হাজার ১৭১পিস ইয়াবা ট্যাবলেট,২৭৭ কেজি ২৮৫ গ্রাম গাঁজা, ৮০৭ বোতল ফেন্সিডিল, ১৫৮৭টি নেশার ইনজেকশন, ১৯ বোতল বিদেশী মদ, প্রায় ১৭০০লিটার দেশী মদ। যার সব মিলিয়ে মুল্য প্রায় ৬১ কোটি টাকা।
এ সময় চুরি যাওয়া ৩টি প্রাইভেট কার, ২৮টি মোটর সাইকেল, ১টি পিকআপ, ৩৭টি অটোরিক্সা উদ্ধার করেন। যার মুল্য ৫৫লাখ ৪০হাজার টাকা, ১৮রাউন্ড গুলী সহ ৮টি বিদেশী পিস্তল, ১১টি পাইপগান, ৪৩টি কার্তুজ উদ্ধার করেন। ১০টি স্বর্নের চেইন উদ্ধার হয় এ সময়।


চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলার মধ্যে মুক্তাগাছায় আরব এগ্রো ফার্ম,চায়না মোড়ে গরুর গাড়ী ডাকাতিও দোলাদিয়ায় ইউনিভার কোম্পানী সহ ১৯টি ডাকাতি মামলার রহস্য উন্মোচন এবং এসব ঘটনায় জড়িত ৫৭জনকে আটক করতে সক্ষম হন।
১৪টি সাইবার অপরাধ মামলার নিস্পত্তি হয় এই তিন বছরে। ৫৫৯জন জুয়ারী, ১১৩জন ছিনতাইকারী, ১৪০জন চোর ও ভিকটিম উদ্ধার করেন ৪২জন। এই তিন বছরে ১৩০৮টি মামলায় ২৫০০ আসামী গ্রেফতার হয়।

এসময় অসহায়দের মাঝে খাদ্য বিতরন,মাক্স বিতরন,রান্না করা খাবার বিতরন করে সাধারন মানুষের কাছে একজন আস্থা ভাজন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন। রোজার সময় ৫ টাকায় ইফতার বিতরন করে অনেক অসহায় রোজাদের ইফতারী করতে উদ্যোগ নেন।
গত তিন বছরে এ জেলার মানুষ ডিবির উপর ব্যাপক আস্থা রেখেছেন। কোন মামলা ডিবিতে গেলেই তার রহস্য উদঘাটন এবং আসামী গ্রেফতার করে তিনি প্রমান রেখেছেন ইচ্ছা থাকলে উপায় হবেই। গত তিন বছরে তার সাফল্যর নেপথ্য কি জানতে চাইলে বলেন,পুলিশ সুপারের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও নির্দেশে তিনি এসব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছেন। এখন তার ডিবি থেকে বিদায়ের পালা। তিনি বলেন উর্দ্ধতনদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে অপরাধ  দমনে আরো অবদান রাখতে পারবেন। ভাল কাজের স্বীকৃতি হিসেবে রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপার শাহ কামাল আকন্দ ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে বদলী করেছেন। নগরবাসী আশা করছেন অপরাধ দমনে তিনি বলিষ্ট রাখবেন।##