বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃপ্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার নাম করে নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের হাতিভাঙ্গা ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দীন। শনিবার উপজেলা পরিষদে ইউএনও এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদের উপস্থিতিতে ওই কর্মকর্তা ৪০ জনের মাঝে তিন লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত দেন।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে প্রথম পর্যায়ে চারটি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩০টি ঘর বরাদ্দ ছিল। তৃতীয় পর্যায়ে ওই ইউনিয়নে ঘর না থাকলেও মো. আলাল উদ্দীন স্থানীয় আমখাওয়া, সরকারপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেন। তার অন্যত্র বদলির খবর পেয়ে গত বুধবার এলাকাবাসীসহ ভুক্তভোগীরা সন্ধ্যা থেকে ওই ভূমি অফিসের সামনে সারারাত বিক্ষোভ এবং পরদিন বৃহস্পতিবার সারাদিন তাকে অবরোধ করে রাখেন। ওই কর্মকর্তা অফিসেরই একটি কক্ষে থাকেন।
পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউএনও এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঘুষের টাকা অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিযুক্ত ওই ভূমি কর্মকর্তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শুধু ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নেননি। তিনি অনেক মানুষের কাছ থেকে খারিজ ও ভূমিহীনদের ভূমি বন্দোবস্তের কথা বলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিন বছর ধরে হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে মো. আলাল উদ্দীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরকারপাড়া গ্রামের মো. জনাব আলীর ছেলে ভুক্তভোগী মো. সোনাহার জানান, বাড়িতে তার থাকার ঘর নেই। ঘর উঠানোর জন্য খাম তৈরি করেছেন তিনি। সে সময় ওই ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দীন ঘর দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। তৈরিকৃত খাম বিক্রি করে টাকা দেন তিনি। ইউএনওর সহায়তায় টাকা ফেরত পেয়েছেন। তিনি এই প্রতারণার বিচার চান।অপর ভুক্তভোগী নাদের মিয়ার স্ত্রী অমিলা জানান, তিনি ভিক্ষে করে চলেন। জমাজমি নেই। খাসজমিতে বসবাস করছেন তিনি। আলাল তার কাছে ঘর দেওয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। তিনি সেই টাকা ফেরত পেয়েছেন। তিনিও তার বিচার চান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দীন বলেন, আমার কাছে লোকজন যে টাকা পাবে, সেই টাকা আমি পাওনাদারদের ফেরত দিয়েছি। যদি আরও কেউ টাকা পেয়ে থাকেন, তবে তাও আমি ফেরত দেব।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, মো. আলাল উদ্দীন ৪০ জন ভুক্তভোগীর মাঝে তিন লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা ফেরত দিয়েছেন। তার কাছে আরও কেউ টাকা পেয়ে থাকলে তবে সেই টাকা তাকে শিগগির পরিশোধ করতে হবে। সুত্র সমকাল