You must need to login..!
Description
উবায়দুল হক, অতিথি প্রতিবেদক বিএমটিভি নিউজঃ , চাকরির সুবাদে তুরস্কের সুন্দরী তরুণী আয়েশা ওজতেকিনের সঙ্গে পরিচয় ময়মনসিংহের তরুণ হুমায়ুন কবিরের। ধীরে ধীরে হয় মনের লেনাদেনা। মনের লেনাদেনা এক সময় রুপ নেয় প্রেমে। আর সেই প্রেমের টানে প্রেমিকের হাত ধরে তুরস্ক থেকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ছুটে এসেছেন আয়েশা। বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তুর্কি কন্যা এখন বাংলার নববধূ।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে মুক্তাগাছা পৌর এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে বাঙালি আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় আয়েশা-হুমায়ুনের বিয়ের আয়োজন।কথা বলে জানা গেছে, হুমায়ুন রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে ২০১০ সালে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যান তুরস্কে। আনকারা শহরের হাজেত্তেপে ইউনিভার্সিটিতে মেডিসিন বিভাগে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। পরে ২০১৮ সাল থেকে আনতালিয়া শহরের লাইফ হসপিটালে শুরু হয় তার কর্মজীবন। ওই হাসপাতালের প্রধান হিসাবরক্ষক ছিলেন তুর্কি তরুণী আয়েশা ওজতেকিন। সেই চাকরির সুবাদে পরিচয় দুজনের। পরিচয় থেকেই কাছে আসেন এবং জড়ান প্রেমের সম্পর্কে। অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতেই সারাজীবনের সঙ্গী করে নেন একে অপরকে।
হুমায়ুন কবির বলেন, তুরস্কে সাধারণত এই উপমহাদেশের মানুষ খুব কম থাকে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি জানার আগ্রহ থেকেই মূলত আমার সঙ্গে পরিচয় তার। নিয়মিত নানা বিষয়ে কথাবার্তা হতো। সেই থেকেই আস্তে আস্তে প্রেম এবং অবশেষে বিয়ে।তিনি বলেন, প্রেম এবং বিয়ের ক্ষেত্রে আয়েশার আগ্রহটাই বেশি ছিল। আসলে এমন কিছুর জন্য তো কোনো পরিকল্পনা থাকে না। দেশের বাইরের কারও সঙ্গে প্রেম-সম্পর্ক কিংবা বিয়ের বিষয়টি অবশ্যই একটু রিস্কি। তবে তার যেহেতু আগ্রহটা বেশি ছিল তাই আমিও রাজি হয়েছি। বাবা প্রথমে রাজি না থাকলেও মা তাকে খুব পছন্দ করেছিলেন। পরে বাবাও রাজি হয়েছেন। অবশেষে আমরা সারাজীবনের জন্য এক হতে পেরেছি। বাংলাদেশে এসে খুব সহজেই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া সবার সঙ্গে সহজেই মিশতে পারে ও। এরই মধ্যে বাবা-মায়ের মন জয় করে নিয়েছে সে।
তুর্কি কন্যা আয়েশা ওজতেকিন বলেন, প্রথমত বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় অনেক নরম। তাদের মাঝে ভালোবাসাটা একটু বেশি, অনেক আবেগী তারা। এ কারণে আমি হুমায়ুনের প্রতি আকৃষ্ট হই। তার গুণ বলে শেষ করা যাবে না। আমি তাকে খুব ভালবাসি।তিনি আরও বলেন, প্রথমে বাবা রাজি ছিলেন না। পরে মা বাবাকে রাজি করিয়েছেন। আমার মা অনেক বছর দেশের বাইরে থাকায় অন্যদেশের মানুষের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হয়নি। হুমায়ুনকে দেখার পর আমার মা-বাবা দুজনেরই পছন্দ হয়। তাই তারা এ সম্পর্ক মেনে নিয়েছেন।আয়েশা ময়মনসিংহে এসে এখানকার মানুষের আতিথিয়তায় মুগ্ধ এবং অভিভূত। বলেন, ময়মনসিংহ তো আমার খুব ভালো লাগছে। এখানকার মানুষ অনেক আন্তরিক। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে অনেক আদর করেন। এখানে আসার পর সব সময়ই প্রতিবেশি আমাকে দেখতে আসছেন। যখন বিমানবন্দরে এসে নেমেছিলাম তখন প্রায় ৫০-৬০ জন মানুষ আমাকে আনতে গিয়েছিল। এটা আমার কাছে খুবই আনন্দের ছিল এবং অবাক হয়েছিলাম।
হুমায়ুন কবির ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা পৌর এলাকার হাসান আলী ও হোসনে আরা দম্পতির ছেলে। আর আয়েশা ওজতেকিন তুরস্কের আনতালিয়া শহরের মাহমুদ ওজতেকিন ও সেফদা ওজতেকিন দম্পতির মেয়ে।
হুমায়ুনের বাবা হাসান আলী বলেন, কয়েকদিন হলো সে এখানে এসেছে। ভিন্ন সংস্কৃতির মেয়ে হয়ে কয়েকদিনেই সে যেভাবে আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে তা সত্যিই অকল্পনীয়। পুত্রবধু হিসেবে তাকে পেয়ে আমরা খুশি এবং তাদের দুজনের উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
মা হোসনে আরা বলেন, ছেলের সঙ্গে যখন থেকে আয়েশার সম্পর্ক তখন থেকেই তার সঙ্গে আমি কথা বলতাম ভিডি কলে। তাকে আমার খুবই ভালো লাগত। এখানে এসে আমাদের সঙ্গে যতটা মিশেছে, একজন বাঙালি মেয়েও এতটা মিশতে পারে না।