You must need to login..!
Description
বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন জোরদার করছে রাশিয়া। শহরগুলোতে বৃষ্টির মতো বোমা ফেলছে রুশ বাহিনী। যেভাবেই হোক দ্রুততার সঙ্গে রাজধানী কিয়েভ দখলে বধ্যপরিকর তারা। এরইমধ্যে কিয়েভে সর্বোচ্চ আক্রমণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শহর থেকে মাত্র পাঁচ কিলো দূরেই অবস্থান নিয়েছে রাশিয়ার সৈন্যরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি শহর দখলে তীব্র লড়াই চলছে। ১৬ দিন ধরে চলা এই আগ্রাসনে পুরোপুরি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের কয়েকটি শহর। সঙ্গে দিনিপ্রো ও লুৎস্ক নামের আরও দু’টি শহর প্রথমবারের মতো রুশ হামলার শিকার হয়েছে।
দেশটির নেতারা এখন বলছেন, কোনো শহরই আর নিরাপদ নেই। তারপরেও রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধে লড়াই চালিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তারা।
বিবিসির খবরে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় রুশ বাহিনী কিয়েভের একদম কাছাকাছি চলে এসেছে। বর্তমানে কিয়েভ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে তারা। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবির ভিত্তিতে এই সেনা অবস্থান নিশ্চিত করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারাও। ছবিতে একটি রুশ সেনাবহর দেখা গেছে, যা কিয়েভ আক্রমণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে কিয়েভের আশেপাশের অঞ্চলে রুশ বাহিনীকে পুনরায় মোতায়েন হতে দেখা গেছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই কিয়েভ দখলের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। যে কোনো সময় শুরু হতে পারে ভয়াবহ আক্রমণ। কিয়েভের দিকে উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব থেকে নতুন সেনা বহর এগিয়ে আসছে। উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এগিয়ে আসা রাশিয়ান বাহিনী শহর থেকে ২৫ মাইল বা ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এরইমধ্যে কিয়েভের অর্ধেক বাসিন্দা শহর ছেড়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার মেয়র। পুরো শহর এখন দুর্গের মতো হয়ে গেছে। শহরের মানুষ প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, তারা কিছুতেই রুশ সেনাদের কিয়েভ অধিকার করতে দেবেন না। সাবেক বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ক্লিচকো জানান, প্রতিটি রাস্তা, প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি চেকপয়েন্ট দুর্গের চেহারা নিয়েছে। সাধারণ মানুষ ইউনিফর্ম পরে মেশিনগান হাতে নিয়ে তা পাহারা দিচ্ছেন।
এদিকে ইউক্রেনের অন্য শহরগুলোতে হামলা বৃদ্ধি করেছে রাশিয়া। পশ্চিম ইউক্রেনের ইভানো ফ্র্যাঙ্কিভস্ক শহরে আকাশ থেকে বোমা ফেলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর-পশ্চিমের শহর লুৎস্কে প্রথমবারের মতো আক্রমণ হয়েছে। নতুন করে হামলা হয়েছে দিনিপ্রোতেও। এই দুই শহরে বিস্ফোরণের আগে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে বিমান হামলার সতর্কতা জানিয়ে সাইরেন বাজানো হয়। রাশিয়ার দাবি, নির্ভুল আঘাত করতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ইউক্রেনের পশ্চিমে দু’টি সেনা ঘাঁটিতে আক্রমণ করা হয়েছে।
রাশিয়ার এই তা-ব প্রসঙ্গে দেশটির পার্লামেন্ট সদস্য ইনা সভসুন বলেন, ইউক্রেনে এখন কোনো নিরাপদ শহর নেই। গত দুই সপ্তাহে আমরা দৈনিক সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা করে ঘুমাতে পেরেছি। আমরা আমাদের শিশুদের জীবন নিয়ে আতঙ্কিত। কিন্তু আমাদের করার তেমন কিছু নেই। আমরা আত্মসমর্পণ করতে পারি না, আমরা তাদেরকে দখলও করতে দিতে পারি না। তিনি বলেন, আমাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের তেমন কিছু করার নেই, তা যতই আতঙ্কের হোক না কেন।
ইউক্রেনের অন্য শহরগুলো দখলে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে রুশ বাহিনী। যদিও ইউক্রেনীয় সেনারা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে রেখেছে। কিন্তু রুশ সেনারা শহরগুলো ঘিরে ফেলতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে উত্তরের শহর চেরনিহিভ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। লড়াই চলছে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে। সেখানে রাতভর বিমান থেকে হামলা চলছে। বেসামরিক মানুষের হতাহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। জানা গেছে, বিমান হামলার পাশাপাশি মিসাইল ছুড়ছে রাশিয়া। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ৭৭৫ মিসাইল ছুঁড়েছে দেশটি।