You must need to login..!
Description
মতিউল আলম, বিএমটিভি নিউজঃ সেনাবাহিনীর অফিসার ও সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেয়ার অভিযোগে ২ প্রতারককে নগদ ২লাখ ২০হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবির ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান এর নির্দেশে গতকাল ১১ মে সন্ধ্যায় কোতোয়ালী থানার গনেশ্যামপুর মনতলা বাজার থেকে প্রতারক ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সেনা সদস্য পরিচয়দানকারী কোতোয়ালী থানার গনেশ্যামপুর (মনতলা) মৃত-আঃ রশিদের ছেলে আইনুদ্দিন (৫০) ও সেনা অফিসার পরিচয়দানকারী মুক্তাগাছা থানার গোয়ারি গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২৮)। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। টাকার জন্য জিম্মি করে রাখা সৈনিক পদে চাকুরী প্রত্যাশী নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার পাইকপাড়া গ্রামের সোহেল মিয়া ও মামলার বাদী সোহেল মিয়ার পিতা মঞ্জুরুল হক (৬০)কে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ গতকাল গ্রেফতারকৃতদেরকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।
পুলিশ ও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ৬এপ্রিল সৈনিক পদে চাকুরী প্রার্থী নেত্রকোনার দুর্গাপুরের মঞ্জুরুল হকের পুত্র সোহেল মিয়া সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকুরীর জন্য টাংগাইল ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে অপেক্ষমান তালিকাভুক্ত হয়। সোহেল মিয়া অপেক্ষমান তালিকায় রয়েছে জানতে পেরে প্রতারক মোঃ আইনুদ্দিন (৫০), ও মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২৮) চাকুরী প্রার্থী সোহেল এর মোবাইল নাম্বারে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার হতে ফোন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরি পাইয়ে দিবে বলে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা চূড়ান্ত করতে চাকুরী প্রার্থীকে ময়মনসিংহে এসে তাদের সাথে কথা বলতে বলে। আসামি মোঃ আইনুদ্দিন (৫০) নিজকে সেনা সদস্য এবং আসামি মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২৮) নিজকে আর্মি অফিসার হিসেবে পরিচয় দেয়। সোহেল এর চাকুরীটা খুব প্রয়োজন থাকায় গত ২৩ এপ্রিল উক্ত আসামিদের সাথে কথা বলার জন্য সোহেল ও তার মামা জনি মিয়া (২০)কে সাথে দিয়ে ময়মনসিংহ আসে। বাদীর ছেলে সোহেল মিয়া এর চাকুরীর জন্য আসামিদ্বয় সাত লক্ষ টাকার বিনিময়ে
সোহেলকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকুরি পাইয়ে দেবার কথা চূড়ান্ত করে এবং শর্তানুযায়ী গত ২৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ সদরের গনেশ্যামপুর (মনতলা বাজার) মোঃ বিল্লাল হোসেন এর মনোহরী দোকানের ভিতরে আসামিদ্বয়কে নগদ ২,০০,০০০/-(দুই লক্ষ) টাকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করে। আসামিরা বাদীর ছেলে নিকট হতে কৌশলে মূল সার্টিফিকেট ও চাকুরী সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেখে দেয়। আসামিদের শর্ত অনুযায়ী ১১ মে অবশিষ্ট পাঁচ লক্ষটাকা দেওয়ার কথা থাকলেও বাদী পুরোপুরি টাকা সংগ্রহ করিতে না পেরে জমি বিক্রয়ের (দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা নিয়ে বাদীর ছেলে সোহেল মিয়া সংগীয় মোঃ জলিল মিয়াকে সাথে নিয়ে ময়মনসিংহে আসে। আসামিদের শর্ত অনুযায়ী ১১মে অবশিষ্ট পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও বাদী পুরোপুরি টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে জমি বিক্রয়ের দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা নিয়ে বাদীর ছেলে সোহেল মিয়া সংগীয় মোঃ জলিল মিয়াকে সাথে নিয়ে ময়মনসিংহে আসে। আসামি মোঃ আইনুদ্দিন (৫০) ও মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২৮) ফোন করে পূর্বে জায়গায় চলে যেতে বললে বাদী তার ছেলে ও সংগীয় ইউপি সদস্যসহ কোতোয়ালী থানার গনেশ্যামপুর (মনতলা বাজার) মোঃ বিল্লাল হোসেন এর মনোহরী দোকানের সামনে যান। ১১মে বিকাল অনুমান সাড়ে ৪টায় ঘটিকার সময় ঘটনাস্থলে পৌছিলে আসামিরা বাদী, বাদীর ছেলে ও সংগীয় ইউপি সদস্য ডেকে নিয়ে দোকানের ভিতর বসায়। বাদীর নিয়ে আসা দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা আসামি দেলোয়ার হোসেন এর হাতে তুলে দিলে সে এক লক্ষ টাকা আসামী আইনুদ্দিনকে এবং লক্ষ বিশ হাজার টাকা তার নিজের পকেটে রেখে দেয়। আসামিরা আকস্মিক বাদীকে ও বাদীর ছেলেকে দোকানের অভ্যান্তরে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং আরো পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা প্রদান করতে না পারলে, তাদের নিকট থাকা বাদীর ছেলের মূল সার্টিফিকেট ও চাকুরী সংক্রান্ত কাগজপত্র বিনষ্ট করে দিবে মর্মে হুমকি দেয়।
ডিবি পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যদেরকে আটক করে এবং চাকুরী প্রার্থী ও বাদীকে উদ্ধার করে। প্রতারকদের নিকট হতে চাকুরী প্রার্থীর নিকট নেওয়া দুই লক্ষ টাকা ও প্রার্থীর সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। এই সংক্রান্তে বাদী থানায় অভিযোগ করলে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৪৮, তাং ১২-০৫-২০২২ খ্রিঃ ধারা- ধারা-৩৪২/৩৮৫/১৭১/৪০৬/৪২০ পেনাল কোড রুজু হয়।