You must need to login..!
Description
এনায়েতুর রহমান,ফুলবাড়ীয়া থেকে ঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৩১শয্যা থেকে ৫০শয্যায় উন্নতি করণ করা হলেও ১১বছরেও চালু হয়নি এর কার্যক্রম। বাধ্য হয়েই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগিরা। এতে করে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগিরা।
উপজেলার ৬ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণে নতুন ভবনটি ২০১১ সালে উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। নির্মানাধীন ভবন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেন। ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও চালু হয়নি ১১ বছরেও। অভিযোগ উঠেছে, লোক দেখানোর নামে সংশি¬ষ্ট কর্মকর্তা ৫০ শয্যায় উন্নীত ভবনটি তরিঘরি করে উদ্ধোধন করান। উন্নীতকরন হাসপাতাল ভবনটি উদ্ধোধনের পর উপজেলাবাসী আশা করেছিল ৫০ শয্যায় উন্নীতকরন ভবন চালু হলে হয়তোবা চিকিৎসা সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ৩১ শয্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। বিভিন্ন সময়ে রোগিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে থেকে নোংরা পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছে। পুরনো ভবনের পাশেই ৫০ শয্যার নতুন ভবনে রয়েছে ১৯টি বেড। আধুনিকভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ভবনটি। এরপরও রোগিরা ৫০ শয্যার স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগির সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রাইভেট হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে গিয়ে তাদের চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই। তাই তারা বাধ্য হয়েই এই হাসপাতালে আসেন। আবার অনেককে এখানে এসেও কাঙ্খিত চিকিৎসা না পেয়ে ফিরতে হয়। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন প্রকার ওষুধ থাকলেও রোগীদের ভাগ্যে জুটে না কিছু।
উপজেলার এনামুল হক বিজয় বলেন, ‘৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রমটি চালু হলে আমরা হয়তো একটু ভালো চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পেতাম।’
৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে সরঞ্জামাদির মধ্যে অত্যাধুনিক একটি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হয়। মেশিনটি তখন থেকেই নতুন ভবনের একটি কক্ষে বাক্সবন্দি রয়েছে এক দিনের জন্যও ব্যবহার হয়নি। ১১ বছর ধরে বাক্সবন্দি থাকায় আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি কখনো সচল হবে কি। প্রায় আড়াই বছর ধরে হাসপাতালের ইসিজি মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ১১ বছর ধরে এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি পরীক্ষা না হওয়ায় হয়রানির স্বীকার হচ্ছে অসহায় রোগিরা, সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরিক্ষায় রোগিদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। আর এতেই উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন বাজারে গড়ে উঠছে ব্যাঙের ছাতার মতো ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ৩৪জন ডাক্তার ও ২৪জন নার্স, এনেসথেশিয়া বাদে প্রায় সকল ডাক্তার কাগজে কলমে বিদ্যমান।
প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি চিকিৎসক ও জনবল থাকার পরও সংকট দেখিয়ে অকারণে অস্ত্রোপাচার কক্ষ (ওটি) বন্ধ রয়েছে প্রায় ১১ বছর ধরে।
প্রতি বছর পরিস্কার পরিছন্নের জন্য মোটা অংকের বরাদ্ধ পাওয়ার পরও বাথরুমের পানি সিঁড়ি বেয়ে বাহিরে আসছে, আউটডোরের একপাশে স্টোর রুম বানিয়ে নোংরা করে রাখা হয়েছে, পয়নিস্কাশনের স্থানগুলো অপরিছন্ন, বিদ্যুৎ লাইট, ফ্যানগুলো ঠিক করার আগেই বিকল, দরজা-জানালায় বিভিন্ন কোম্পানীর স্টিকারে কাঠ ঢেকে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাফিলতির কারণেই হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ডাঃ বিধান চন্দ্র দেবনাথ জানান, কার্যক্রম চলছে করোনার সময় করোনা ওয়ার্ড ছিল, এখন মালামাল রেখে স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুমতি ছাড়া সম্ভব না।