বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার পূর্ব বতিহালা গ্ৰামের ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩। এ মামলা থেকে চারজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। দণ্ড পাওয়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো.মনির কামাল এই রায় ঘোষণা করেন। ৯ বছর আগে ২০১৩ সালের ২৭ মার্চ এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নওশাদ, শাহাবুদ্দিন এবং সবুজ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মরন, মহিম, কারিম, জসিম মিয়া হোসেন এবং জালাল উদ্দিন। দণ্ডের পাশাপাশি সব আসামিকে ২০ টাকার অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইসলাম, এমদাদুল, কুদরত আলী ও হাছেন আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। আসামি রশিদ মামলার বিচার চলাকালে মারা যান।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, উজ্জল মিয়ার সাথে আসামিদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। ২০১৩ সালের ২৭ মার্চ রাত ৯টার দিকে পাশের এলাকা থেকে বার্ষিক দোলযাত্রা মেলা থেকে মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন উজ্জল মিয়া। তার সঙ্গে ছিলেন নজর আলী ও কালাম। বতিহালা এবতেদায়ী মাদরাসার কাছে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উজ্জলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাকে মারাত্মক জখম করে, দুই পা ভেঙে দেয়।
উজ্জল ও সঙ্গীয়দের ডাক চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়। উজ্জলকে ধোবাউড়া হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ৩০ মার্চ ধোবাউড়া থানায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলাটিতে ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন সিআইডির সাব-ইন্সপেক্টর পরিমল চন্দ্র সরকার।
মামলার বিচার চলাকালে ট্রাইব্যুনাল ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউর মাহবুবুর রহমান। আসামিদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী কাজী মো. নজীব উল্লাহ হিরু, এম.এ ছালাম প্রধান।
নিহতের বড়ভাই মামলার বাদী কুরদত আলী বিএমটিভি নিউজকে জানান, মামলায় তারা ন্যায় বিচার পেয়েছেন। নিহতের উজ্জলের স্ত্রী নাজনীন সন্তষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এখন দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করার অনুরোধ করব। আমার একমাত্র মেয়ে বাবা হারিয়ে আজ সে অসহায়।