জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে-সরকার

image

You must need to login..!

Description

বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ 

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ব্যাখ্যায় বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সমন্বয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান কমানোসহ পাচার হওয়ার শঙ্কা থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার।

এর আগে, শুক্রবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য (১ লিটার) ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোল ১৩০ টাকা হবে। এতদিন কেরোসিন ও ডিজেল প্রতি লিটার ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা এবং পেট্রোল ৮৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের শনিবারের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘সর্বশেষ গত বছরের ৩ নভেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে কেবল ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধি করে পুনর্নির্ধারণ (ডিজেল ৮০ টাকা ও কেরোসিন ৮০ টাকা) করা হয়। সে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রবণতা সত্ত্বেও অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়নি। ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুর দিকে কোভিড-১৯-এর প্রকোপ কিছুটা কমায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর পরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য আরও বেড়ে যায়।’

‘আন্তর্জাতিক বাজারে যদি ডিজেল প্রতি ব্যারেল ৭৪ দশমিক শূন্য ৪ ডলার এবং অকটেন প্রতি ব্যারেল ৮৪ দশমিক ৮৪ ডলারে নেমে আসে, তবে ডিজেল ও অকটেন প্রতি লিটার যথাক্রমে ৮০ টাকা ও ৮৯ টাকায়, অর্থাৎ বিদ্যমান মূল্যে বিক্রয় করা বিপিসির পক্ষে সম্ভব হতো, যা এখন প্রায় অসম্ভব। একইভাবে ক্রুড অয়েলের মূল্য এ বছরের জুনে ব্যারেলপ্রতি ১১৭ মার্কিন ডলার অতিক্রম করে, যা এখনও অব্যাহত আছে। জ্বালানি তেল আমদানিতে সর্বশেষ গত জুলাই মাসের গড় প্লাস রেট অনুযায়ী বিপিসির দৈনিক লোকসানের পরিমাণ ডিজেলে প্রায় ৭৪ কোটি ৯৪ লাখ ৯২ হাজার ৭০০ টাকা ও অকটেনে প্রায় ২ কোটি ৯২ লাখ ২৩ হাজার ২১৬ টাকা। মোট প্রায় ৭৭ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯১৬ টাকা। গত মে ও জুনে লোকসান ছিল শতাধিক কোটি টাকা।’

বিপিসির বিপুল ভর্তুকি দিতে হচ্ছে জানিয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিপিসির প্রকৃত লোকসান বা ভর্তুকি দাঁড়ায় ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকার বেশি। সর্বশেষ মূল্য সমন্বয়ে ডিজেলের মূল্য ১১৪ টাকা করা হলেও গত জুলাইয়ের গড় হিসাবে প্রতি লিটারে খরচ পড়বে ১২২ দশমিক ১৩ টাকা, অর্থাৎ প্রতি লিটারে তার পরও ৮ দশমিক ১৩ টাকা লোকসান বিপিসিকে বহন করতে হবে। গত ১২ জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতায় ডিজেল লিটারপ্রতি ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি বা সমতুল্য ১১৪ দশমিক শূন্য ৯ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে, যা বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩৪ দশমিক শূন্য ৯ টাকা বেশি এবং পেট্রোল লিটারপ্রতি ১০৬ দশমিক শূন্য ৩ রুপি বা সমতুল্য ১৩০ দশমিক ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা বাংলাদেশ থেকে ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা বেশি। এ পার্থক্যের কারণে বহু কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে আমদানিকৃত জ্বালানি পণ্য পাচার হওয়ার আশঙ্কা বিদ্যমান। তাই মূল্য সমন্বয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের জ্বালানি পণ্যের মূল্যের পার্থক্যজনিত পাচার রোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।’