You must need to login..!
Description
বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ নেপালকে হারিয়ে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এত বড় অর্জনের পর সাবিনাদের জন্য সরাসরি কোনো পুরস্কার ঘোষণা করেনি বাফুফে। আজ মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাজী সালাউদ্দিন সাবিনাদের প্রশংসা করলেও অর্থ পুরস্কার নিয়ে কিছু বলেননি। ক্রীড়ামোদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই ক্রীড়াঙ্গনের সাফল্যে পুরস্কার দিয়েছেন। সাফ জয়ী নারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, ‘আমাদের মেয়েরা ভালো করলে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে থেকে ডেকেই তাদের উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী ভালো করেই জানেন মেয়েরা এটা করেছে। আশা করছি, ওনার কাছ থেকে একটা ভালো উপহার ও সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হবে। এর সঙ্গে আরও কিছু কিছু জায়গা থেকে স্পন্সররা আলাপ করছে। এসব কিছু আসার পরে আমার বিশ্বাস মেয়েরা খুশি হবে।’
মেয়েদের এত বড় অর্জনের পর সাবিনাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়বে কি না জানতে চাইলে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি তো চাই টাকা থাকলে প্রত্যেকটা মেয়েকে ২ কোটি টাকা করে দিয়ে দিতে। তবে আমার কাছে তো সেই টাকাটা থাকতে হবে। যা আনতে পারব, সেগুলো এই মেয়েদেরকেই দেব। কারণ তাদের যত দেব, ততই আমরা পাব।’
ক্রীড়াঙ্গনে নারী পুরুষের সম্মানীর বৈষম্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকেই। বাংলাদেশের নারীরাও খুব সামান্য অর্থ পান। এই বিষয়ে সভাপতি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের সমান পারিশ্রমিক হতে পারে না ফুটবল দুনিয়ায়। এমবাপ্পের সাইনিং মানি ৩০০ মিলিয়ন। মেয়েদের সেরা খেলোয়াড় পায় ৪ মিলিয়ন।’
মেয়েদের এই অর্জনের জন্য তিনি বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাফুফে নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকে, ‘ধন্যবাদ জানাই নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনেক কষ্ট করেছেন, সময় দিয়েছেন। পরিকল্পনায় ছিলাম আমি, কিরণ ও টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। এরপর মেয়েদের ছোটনকে কোচ হিসেবে নিয়েছি টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের সঙ্গে মিলে কাজ করার জন্য। তাদের অধীনে ট্রেনিং করেছে। আমরা ওদের থাকা-খাওয়া, মাসিক ভাতা দিয়েছি। মেয়েদের রিলিজ করতে কোনো টাকা বাফুফে নেয়নি। যাতে ক্লাব থেকে যা পায় তা যাতে তারাই পায়। আমরা সব ধরনের সহায়তা দিয়েছি।’
সাফ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়েদের হাতে ট্রফি তুলে দেয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের। ভয়ে মেয়েদের ফাইনাল দেখতে নেপাল যাননি বাফুফে বস। এমনকি ফাইনাল চলাকালীন কারো সঙ্গে কথাও বলেনি তিনি। শিরোপা জয়ের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন সালাউদ্দিন। জানিয়েছেন নেপাল না যাওয়ার কারণ। আগামীকাল বিমানবন্দরে মেয়েদের বরণে উপস্থিত থাকবেন না তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বড়লোক হলে বিমান চালিয়ে সেখানে চলে যেতাম। তবে আমি ট্রফি নিলাম কী নিলাম না সেটা বড় বিষয় নয়। মেয়েরা জিতেছে, সেটাই বড় বিষয়।’ ফাইনালে কেন থাকলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে বাফুফের এই কর্তা বলেন, ‘আমি গেলে ভালো হতে পারে, খারাপও হতে পারে। বাড়তি চাপ হতে পারে ভেবে ফাইনালে যাইনি।’ সংবাদ সম্মেলনের প্রথম দিকে মেয়েদের সাফ জয় নিয়ে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল মেয়েরা ২০২৪ সালে জিতবে।
তখন তাদের বয়স ২২, ২৪ হবে। কিন্তু তারা দুই বছর আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে। মেয়েদের নিয়ে নতুন পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বলেছি বাজেটের জন্য। যাতে মেয়েরা ফিফা উইন্ডোতে খেলতে পারে। আশা করছি এই বছর ফান্ডিং পেয়ে যাবো।’ সাফ ফুটবলের শিরোপা নিয়ে আজ দেশে ফিরবে জাতীয় নারী দল। সারাদেশ চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত হয়ে আছে।
দেশবাসীর দাবির মুখে প্রস্তুত করা হচ্ছে ছাদ খোলা দ্বিতল বাস। সেই বাসে করেই মেয়েরা ট্রফি নিয়ে ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করবে। তবে মেয়েদের বরণ করতে কাল বিমানবন্দরে যাচ্ছেন না বাফুফে বস। সেখানে না যাওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাল (বুধবার) এয়ারপোর্টে যাবে বাফুফের নির্বাহী কমিটি, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী; উনারা যাবেন দলকে রিসিভ করতে। আরো অনেকেই যাবে। আমি দলকে রিসিভ করবো এখানে (বাফুফে কার্যালয়)। কেন আমি সেখানে (বিমানবন্দরে) রিসিভ করবো না, সেটা বলি। আমার খুব ইচ্ছা ছিল সেখানে যাওয়ার, চ্যাম্পিয়ন হয়ে কাপ নিয়ে আসছে প্রথমবার। আমি যদি ওখানে যাই, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) আমাকে নানা প্রশ্ন করবেন। তাতে হবে কি, আমাদের মেয়েরা যে লাইমলাইট পেত, সেটা ভাগ হয়ে যাবে। এটা মেয়েদের দিন। এটা প্রেসিডেন্টেরও দিন না, সেক্রেটারিরও দিন না, ভাইস প্রেসিডেন্টেরও দিন না। এটা মেয়েদের দিন। আমি চাই মেয়েরা এক্সক্লুসিভলি আপনাদের (মিডিয়া) আদরটা পাক, মিডিয়া কাভারেজটা পাক। ’