ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্রদলের ১০ নেতাকর্মীরা আহত

image

You must need to login..!

Description

বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসে ছাত্রলীগের হামলার মুখে পড়েছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। হামলায় ছাত্রদলের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাবি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় দুইজনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

এদিকে প্রায় একই সময় ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঢাবি ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিকেল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রদল। বিকেল ৪টায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কমিটির নেতাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত কর্মসূচির শুরুর অনেক আগে থেকেই ক্যাম্পাসের প্রতিটি পয়েন্টে ছাত্রলীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নিতে থাকেন। শহীদ মিনার, টিএসসি, ভিসি চত্বর সিনেটসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন।

বিকেল চারটার পর নিজেদের কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে নীলক্ষেত মোড়ে জড়ো হতে থাকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এরপর বেলা সাড়ে চারটার দিকে সংগঠনের ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে সিনেট ভবনের দিকে এগুতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এফ রহমান হলের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা লাঠি সোটা নিয়ে ছাত্রদলের উপর আক্রমণ করে। এতে সংগঠনটির কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে পালাতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে যাওয়া ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে লাঠি দিয়ে বেদম পেটায় ছাত্রলীগ।প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বিকেল ৪টা ২৮ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে ঢুকছিলেন সংগঠনের ৩০ থেকে ৩৫ নেতাকর্মী। এ সময় স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে যান। ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে তার ধাক্কাধাক্কি ও তর্কাতর্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে উপাচার্যের জন্য ছাত্রদলের আনা ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলেন ওই কর্মী। পরে এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল নেতা-কর্মী দৌড়ে এসে লাঠিসোঁটা ও স্ট্যাম্প দিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পেটাতে শুরু করেন। আরেকটি অংশ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। এতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চলে যাওয়ার পর নীলক্ষেত মোড়ে আসেন কবি জসীম উদদীন হল শাখা ছাত্রলীগ ও বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়ার পর কবি জসীম উদদীন হল শাখা ছাত্রলীগ, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগ এবং এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ১৫ মিনিটের মতো ছাত্রদলবিরোধী স্লোগান দেয়ার পর তারা ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ছাত্রলীগের হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

তবে এ হমলায় ছাত্রলীগ জড়িত নয় বলে দাবি করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, সাধারণ জনতা ও শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলকে প্রতিহত করেছে। ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেছি। বাইরে মিথ্যাচার করা হচ্ছে যে তাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আসলে তারা (ছাত্রদল) যেখানে মার খায় সেখানেই মনে করে ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমরা শুনেছি সাধারণ জনতা ও শিক্ষার্থীরা মিলে তাদেরকে গণধোলাই দিয়েছে। আমাদের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোনো কাজ করে না।