স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় ও যানযট নিরসনের জন্য সরকারি অফিসের সময়সূচি পরিবর্তন করে সকাল ৯টার পরিবর্তে ৮ টায় করা হয়েছে।ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আসছেন না প্রায় অনেক কর্মকর্তারা। নিজ নিজ দপ্তরের পিওন দিয়ে দপ্তর খুলে রাখছেন তারা। এতে করে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এদিকে নির্ধারিত সময়ের পর অফিসে আসার কারণ জানতে চাইলে নানান অজুহাত দাঁড় করাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কাজে এসেছিলেন সুজন মিয়া নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘শুনেছি সকাল সকাল অফিস শুরু তাই সকালেই এসেছি। কিন্তু এসে কাউকেই পাইনি। ৯ টা ১৫ মিনিট বেজে গেলেও এখনও কেউ নেই অফিসের পিয়ন ছাড়া। ভাবছিলাম এখানে কাজ শেষে অন্য কাজে যাবো। কিন্তু সেটা আর হলো না।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মূল গেইট খোলা হয়েছে সকাল ৯টায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি অফিস করছেন না। এছাড়া সকাল সাড়ে ৯টায় দিকেও আসেননি উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপজেলা স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর প্রকৌশলী, সমবায় কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা। এসব দপ্তরের দু একজন পিয়ন ও অফিস সহকারী ছাড়া অন্য কর্মকর্তাদের নির্ধারিত সময়ে অফিসে আসতে দেখা যায়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সদর উপজেলা কার্যালয়ের কার্যসহকারী মনিরুজ্জামান এসেছেন সকাল ৮টা ২৭ মিনিটে। তিনি জানান, উপজেলা প্রকৌশলী হয়তো ফিল্ড ভিজিটে আছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের অফিস সহকারী নুরুল ইসলামের কাছে মৎস্য কর্মকর্তা কখন আসবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘স্যার কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবেন।’
উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসের হিসাব রক্ষক যথাসময়ে অফিসে এসেছেন। তার কাছে পল্লী উন্নয়ন অফিসার নজরুল ইসলামের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যার কোনো তদন্তের জন্য ফিল্ডে আছেন।’
সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে এসেছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তা। সমাজসেবা কর্মকর্তা মাকসুদা খাতুন বলেন, ‘জেলা অফিসে গিয়েছিলাম অফিসিয়াল কাজে তাই অফিসে আসতে দেরি হয়েছে।’
পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘ফিল্ড ভিজিট শেষ করে অফিসে এসেছি।’
তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার ও একজন পিয়ন সকাল ৮টায় অফিসে আসলেও যথাসময়ে আসেনি অন্য কোনো কর্মকর্তা ও স্টাফ।
তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যথাসময়ে অফিস করি।’ অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবাই কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবেন।’
এদিকে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ৮টায় অফিস খোলার খবর শুনে সদর উপজেলায় হাজির হন বেশ কয়েকজন সেবা গ্রহীতা। কিন্তু কোন অফিসে কর্মকর্তা ঠিক সময়ে না আসায় অপেক্ষা করতে হয় তাদের।
সরকারি কর্মকর্তারা দেরিতে অফিস করছেন এ বিষয়টি জানতে চাইলে মুঠোফোনে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে মাসিক মিটিংয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। সরকারি নির্দেশনা মানতে সবাইকে সাবধান করা হবে।’