ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে উত্তেজনাঃ একই দিনে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশ

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ 
জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, হত্যা, হামলা ও মামলার প্রতিবাদে এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে একই দিনের জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর বিএনপি আগামীকাল শনিবার সমাবেশ করার জন্য আবেদন জানালেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রশাসনের অনুমোদন মেলেনি। আজ শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম খানসহ বিভাগীয় নেতারা জানান, আজ দুপুরে পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতি পাননি।
অপরদিকে আজ শুক্র ও শনিবার জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছে। বিএনপি চাইছে তাদের কর্মসূচিতে রেকর্ডসংখ্যক লোক সমাবেশ করতে। আওয়ামী লীগ বলছে নৈরাজ্য করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। এদিকে দু’পক্ষের সমাবেশকে ঘিরে সাধারণ মানুষের যেন ক্ষতি না হয় সেই দাবি জানিয়েছেন জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল আমিন কালাম।

বিএনপির গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশ সফল করতে ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ নেত্রকোনা, জামালপুর, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জে প্রস্তুতি সভা, উপজেলাগুলোতে ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রচারপত্র বিতরণ, জনসংযোগ, পথসভা করছেন নেতাকর্মীরা। সব জেলা থেকে জনসমাগম করা হবে ময়মনসিংহে। নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়ে বিএনপি আবেদন করেছে।

অন্যদিকে আজ বিকেল ৩টায় মহানগর আওয়ামী লীগ এবং আগামীকাল জেলা আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ সমাবেশ করবে। সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে দলটি। নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে সমাবেশ করতে অনুমতি নিয়েছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। সমাবেশ সফল করতে প্রচারও চালানো হচ্ছে।

ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গণসমাবেশে জনস্রোত সকল রেকর্ড ভঙ্গ করবে। সার্কিট হাউস মাঠে সমাবেশের অনুমোদন এখনও দেওয়া হয়নি। তবে মানাও করেনি প্রশাসন। পাল্টা কর্মসূচির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বিশৃঙ্খলা করলে দায়িত্ব তাদের নিতে হবে।

ময়মনসিংহ জেলা (উত্তর) বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার বলেন, সব সময় সভা করলে প্রশাসন সহযোগিতা করে। তবে গণসমাবেশস্থলের অনুমতির বিষয়ে তাঁদের এখনও জানানো হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘সরকার গাড়ি বন্ধের অঘোষিত হরতাল দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে শুনতে পাচ্ছি। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের চর্চা করে না। তাই তারা পাল্টা কর্মসূচি নিয়েছে। যত বাধাই দিক জনগণ এখন বিএনপির পক্ষে। জনবিক্ষোভে সরকারের পতন হবে।’

ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহ্‌তেশামুল আলম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নামে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তারা সন্ত্রাস, নৈরাজ্য চালিয়ে, নিজেরা লোক খুন করে সরকারের ওপর দোষ দিচ্ছে। বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে তাঁরা বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন। তিনি আরও বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলে স্বাগত জানাব। নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের বাড়ি-ঘর ছাড়া করা হবে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, সমাবেশের জন্য তাঁরা রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরের অনুমতি নিয়েছেন। বিএনপি ভাঙচুর, জানমালের ক্ষতি, পুলিশের ওপর হামলা করলে প্রতিহত করব। বিভিন্ন স্থানে আমাদের অবস্থান থাকবে। কিন্তু আমরা কোনো ঝামেলায় যাব না।

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, যে কেউ গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিতে পারে। সেটা যদি শান্তিপূর্ণ হয় তাহলে সমস্যা নেই। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও জানমালের নিরাপত্তার হুমকি হলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচির বিষয় তাদের বিবেচনায় রয়েছে।##