ভাঙ্গারীর দোকানে মাধ্যমিকের ৫৩০ কেজি নতুন বই !

image

You must need to login..!

Description

এনায়েতুর রহমান,ফুলবাড়ীয়া থেকেঃ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী হুকুমচাঁদা গ্রামে ভাঙ্গারীর দোকানে ২০২২ শিক্ষা বর্ষের ৫৩০ কেজি অব্যহৃত (নতুন) বই পাওয়া গেছে। ভাঙ্গারীর দোকানী জানান, ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেনীর নতুন বই ২০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি উপজেলার সীমান্তবর্তী ত্রিশাল উপজেলার রওশন আরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ক্রয় করেছেন। প্রধান শিক্ষক স্বীকার করেছেন বই গুলো অবহৃত (নতুন) বই গুলো বিদ্যালয় থেকে বিক্রি করা হয়েছিল। অভিভাবকদের অভিযোগ নতুন বইগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ না করে কেজি দরে বিক্রি করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আন্ধারিয়াপাড়া হুকুমচাঁদা গ্রামের আজিজুলের বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে ৮ বস্তা মাধ্যমিকের অব্যবহৃত বই মওজুত করে রাখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ত্রিশাল উপজেলার রওশন আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৩৯ টাকা কেজি ধরে ৫৩০ কেজি বই ক্রয় করেন আজিজুল। বই বুঝে আনার সময় স্কুলের সহকারী শিক্ষক হুমায়ুন, রোকন ও অফিস সহকারী দেলোয়ারসহ অন্যান স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন। হুমায়ুন স্যারের কাছে ৩৯ টাকা ধরে ৫৩০ কেজি বইয়ের সর্বমোট ২০হাজার টাকা প্রদান করে বই ও খাতা কিনেন তিনি। ঐ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুলে উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুতুবখানা বাজারের পশ্চিমে হুমুকচাঁদা গ্রামে আজিজুল নিজ বাড়ীতে ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন। সেখানে প্লাস্টিকের ৮টি বস্তায় প্যাকেট করা বই। মুখ খুলতেই দেখা যায় বইয়ের মলাট ছিড়া কিন্তু বইয়ের পাতায় পাতায় লেখা ২০২২। অনেক বস্তায় ২০২১ সালের বই একদম আস্ত (নতুন) দেখা যায়।
ভাঙ্গারির ব্যবসায়ী আজিজুল জানান, বইগুলো স্যার ও কেরানীদের উপস্থিতিতে আমাকে মাপ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ঐ সময় থেকে বইয়ের কভার পৃষ্টা ছিড়া। কোন সনের বই আমি জানিনা। তারা আমাকে নগদ টাকায় বই খাতা বুঝিয়ে দিয়েছে। আমার কাছে ৮ বস্তা বই আছে।
৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক রাজু মিয়া জানান, আমার মেয়ে সবগুলা বই পায় নাই। আমার চাচাতো বোন এর পুরাতন বই এনে আমার মেয়ে পড়ছে।
কমিটির অভিভাবক সদস্য কফিল উদ্দিন, সুলতান মিয়া ও আজিজুল হক বলেন, এমনিতেই সারাদেশে বইয়ের সংকট অথচ আমাদের ম্যাডাম মেয়েদের বই না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এই বিষয়ে মিটিং এ কোন দিন উঠায় নাই। সে বেশি বেশি চাহিদা দিয়ে বইয়ের সংকট তৈয়ার করতে চায়।
প্রধান শিক্ষক আছমা আক্তার এর কাছে স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ২০২২ সালের বইয়ের চাহিদার পরিসংখ্যান জানতে চাইলে পাওয়া যায়নি। তবে বিক্রি বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠিয়ে দিবেন বলে জানান তিনি।
ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মফিজুল ইসলাম বলেন, আমাকে হেড মাস্টার রাতে ফোন দিয়ে পুরাতন বই বিক্রি করার নিয়ম জানতে চাইছিল। আমি তাকে বলেছি অব্যাবহৃত বই থাকলে সেগুলো উপজেলায় জমা দিতে দিবে। সেগুলো উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। যদি পুরাতন খাতার সাথে বই চলে গিয়ে থাকে তাহলে ফেরত নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান ঐ কর্মকর্তা।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার