You must need to login..!
Description
এফ আই সুমন, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) থেকে-
অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় চলছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডেই পরে আছে ময়লার স্থুপ। ফলে সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ২৮ জন ডাক্তার থাকার পরও সময় দিচ্ছেননা রোগীদের। টিকেট করেও রোগীদের মিলছেনা বহিঃর্বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডাক্তার-কর্মচারীদের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ওই নির্দেশনাকে তোয়াক্কা করছে না ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ অন্যন্যে কর্মচারিগণ। দুপুর ১টার পর সরজমিনে বহিঃর্বিভাগে গিয়ে পাওয়া যায়নি কোনো ডাক্তার। এসময় বহিঃর্বিভাগ, ফার্মেসি, প্যাথলজি, এক্সরে বিভাগ, ল্যাবসহ ডাক্তারদের রুমও ছিলো তালাবদ্ধ অবস্থায়। অথচ এ হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ ২৮জন ডাক্তার রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়। এর মধ্যে ২০ জন মেডিকেল অফিসার ও ৮ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন। অথচ চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগীকে ডাক্তাদের রুমের সামনে দাঁড়িতে থাকতে দেখা যায়। দূর থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা টিকেট কাউন্টার থেকে টিকেট করে প্রায় দুই ঘন্টা অপেক্ষা করেও সেবা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। প্রতিদিনই দূপুর ১টার পর প্রতিটি ডাক্তারের রুমে তালা দেয়া থাকে বলে অভিযোগ করেন অনেক ভুক্তভোগী। এমন অবস্থা দেখে সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা জানান, বিষয়টি নিয়ে তদারকি করার যেনো কেউ নেই।
উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কুর্শীপাড়া গ্রামের অসহায় আখলিমা খাতুন জানান, অনেক দূর থেকে হাসপাতালে এসেছেন তিনি। বেলা ১১ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে হাসপাতালে আসতে আসতে দূপুর হয়ে যায়। তার অসুস্থ্য ৮ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসা করানো জন্যে। কিন্তু হাসপাতালে সব ডাক্তারের রুম বন্ধ থাকায় অসুস্থ্য শিশুটিকে নিয়ে আবার বাড়ি যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না তিনি।
মাইজবাগ ইউনিয়নের বড়জোড়া গ্রামের হাওয়া বেগম জানান, তার শিশু সন্তান পাতলা পায়খানা ও বমি করছে। এমন অবস্থায় দূপুরে হাসপাতালে এসেও কোনো ডাক্তার না পেয়ে দিশেহারা তিনি।
সোহাগী ইউনিয়নের বিনা আক্তার দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন সমস্যায় ভোগছেন। ডাক্তার না পেয়ে নিরুপায় হয়ে বাড়ি চলে যেতে হয় তাকে। এদিকে হাসপাতালের বহিঃর্বিভাগ সহ প্রতিটি ওয়ার্ড এবং টয়লেটগুলোতে ময়লার স্থুপ পরে দূর্গন্ধ ছড়ায় বলেও অনেক রোগীরা অভিযোগ করেছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী বলেন, সবাই নিজ নিজ জায়গায় দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজে ছিলো। পরে আমাদের একটি মিটিংয়ের জন্য সবাই হলরুমে চলে আসছে। এজন্য বহিঃর্বিভাগে কোনো ডাক্তার পাননি। তিনি আরো বলেন, যেহেতু আমি নতুন যোগদান করেছি সেহেতু এ বিষয় গুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. হাফিজা জেসমিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ডাক্তারদের উপস্থিত থাকার কথা। যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে অত্যন্ত দুঃখজনক।