গুলিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ : বাড়ছে লাশের সারি, নিহত ১৬

image

You must need to login..!

Description

 বিএমটিভি নিউজ ডেস্কঃ  রাজধানীর ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে সিদ্দিক বাজার এলাকায় এক ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন দুই শতাধিক লোক। আর এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে আরও হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান ও আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার আগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন জানান, ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে সিদ্দিক বাজার এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ৭টি ইউনিট কাজ করছে। ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়।শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। যে ভবনে বিস্ফোরন হয়েছে সেটি ৫ তলা ভবন। নিচতলায় সেনেটারী দোকান এবং বাকি ৪টি ফ্লোর ব্র্যাক ব্যাংকের অফিস।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, ভবনটি বাণিজ্যিক হওয়ায় ভেতরে অনেকের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভবনটির ভেতরে আরও আহত কেউ আটকা পড়েছে কি না, তা খুঁজে দেখছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-মিডিয়া) শাহজাহান সিকদার জানান, ফায়ার সার্ভিসের ৭ ইউনিট ভবন থেকে অনেককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।

ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাজাহান শিকদার জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে গুলিস্তান বিআরটিসি কাউন্টারের দক্ষিণ পাশে ৫তলা ভবন (নিচতলায় সেনিটারি দোকান, বাকি ফ্লোরগুলো ব্র্যাক ব্যাংকের অফিস) এবং তার পাশের ৭ তলা একটি সেনেটারি মার্কেট ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো ভবনই ধসে পড়েনি।

বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।আল আমিন নামে পাশের মার্কেটের এক কর্মী বলেন, হঠাৎ বিস্ফোরণের পর বের হয়ে দেখি রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন বহু মানুষ। ৮ জনকে আমি নিজে ভ্যানে উঠিয়ে মেডিকেলে পাঠিয়েছি। তারা সবাই মারা গেছেন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।

এছাড়া আরও বহু লোক আহত হয়ে পড়ে ছিলেন। যে যেভাবে পেরেছে তাদের মেডিকেলে পাঠিয়েছে। রাস্তায় থাকা সব গাড়ি, পথচারী, রিকশা, ভ্যান- সবকিছুই বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান আল আমিন।বিস্ফোরণের ঘটনায় সদরঘাট থেকে সাভারগামী একটি বাস চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে থাকা ওয়াহিদুজ্জামান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাসটি সদরঘাট থেকে সাভার যাচ্ছিল। এটি বিস্ফোরণের সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। বাসটির নাম সাভার পরিবহন। এর নম্বর ঢাকা মেট্রো গ ১৫-৪৩২৮। বাসটিতে ৪০-৫০ জন যাত্রী ছিলেন। ভেতরে থাকা প্রায় সবাই আহত হয়েছেন।

একই সময় রাস্তার উল্টো পাশে যত গাড়ি ছিল সব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান ওয়াহিদুজ্জামান।সুন্দরবন কুরিয়ার অফিসে কাজ করেন তোফাজ্জল ও আল আমিন। কাজ শেষে অফিস থেকে নিচে নামতেই আকস্মিক বিস্ফোরণ। এতে তারা দুজন উড়ে গিয়ে পড়েন রাস্তায়। এরপর তারা আর কিছুই বলতে পারেন না। তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফিরিয়ে আনা হয় বিআরটিসি অফিসের সামনে একটি মার্কেটে। সেখানে কথা হয় তাদের সঙ্গে।

আকস্মিক বিস্ফোরণের ঘটনায় বাকরুদ্ধ আল আমিন ও তোফাজ্জল কিছুই বলছিলেন না।

তবে তাদের উদ্ধারকারী এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দুজনই ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল। চারদিকে শুধু কান্নার আহাজারি। আল আমিন ও তোফাজ্জল আমার পূর্ব পরিচিত। তাই ওদের আগে উদ্ধার করি। ভ্যানে করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ড্রেসিং শেষে দোকানে নিয়ে আসি। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মালিক ঘটনাস্থলে আসছেন। তাদের কাছে আহত দুজনকে হস্তান্তর করা হবে।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার