ময়মনসিংহে ১১ বছরের শিশু মীমকে ধর্ষণ-হত্যায় জড়িত এক শিশুসহ গ্রেফতার ২

ময়মনসিংহে ১১ বছরের শিশু মীমকে ধর্ষণ-হত্যায় জড়িত এক শিশুসহ গ্রেফতার ২

BMTV Desk No Comments

মতিউল আলম, ময়মনসিংহ, 
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় এগারো বছর বয়সী শিশু মীমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়ার মামলায় জড়িত ইউসুফ আলী (২০) ও এক (অপ্রাপ্ত) শিশুসহ ২জনকে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গত ২০ মার্চ ধোবাউড়া থানা এলাকা থেকে ২জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ইউসুফ কলসিন্দুরের (মাইমলপাড়া) গ্রামের ইস্রাফিল আলীর পুত্র। আজ মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপারের কায্যালয়ে পুলিশ সুপার মাছূম আহাম্মেদ ভুইয়া এক প্রেস ব্রিফিয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি আরো জানান, ময়মনসিংহ ধোবাউড়া থানার কলসিন্দুর গ্রামের খোকন মিয়া এর মেয়ে নুসরাত জাহান মীম (১১) গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ী থেকে বের হয়ে রাতে বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা চারদিকে তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। অনেক খোজাখুজি পর রাত ৮টায় দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী নেতাই নদীতে নুসরাত জাহান মীম(১১) এর লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে ধোবাউড়া থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রস্তত করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করে। সুরতহালকালে নুসরাত জাহান মীম (১১ এর যৌনাঙ্গ ও শরীরের স্পর্শকাতর অন্যান্য অঙ্গে ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত জখম ও জোরপূর্বক গনধর্ষণের চিহ্ন পায়। মীমের লাশের গায়ে অন্যান্য চিহ্ন ও আলামতের উপস্থিতি দেখে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি গণধর্ষনের ফলে হত্যা বলে প্রতিয়মান হয়। নুসরাত জাহান মীম (১১) এর বাবা মোঃ খোকন মিয়া (৪০) এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অজ্ঞাতনামা ধর্ষক ও হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানার মামলা নং-১১, তারিখ-২০/০৩/২০২৩ ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(৩)/৩০ তৎসহ পেনাল কোড ২০১ রুজু হয়।
নুসরাত জাহান মীম(১১) সোহাগীপাড়া নুরানী মাদ্রাসায় ৩ জামাতের ছাত্রী ছিল। ঘটনাটি অত্যন্ত জঘন্যতম, ঘৃণ্য ও নৃশংস হওয়ায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষক ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার নিশ্চিত করনের লক্ষ্যে জেলা গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম নিযুক্ত করা হয়।
ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ধর্ষক ইউসুফ আলী (২০) ও জড়িত একজন শিশুকে ধোবাউড়া থানা এলাকা হতে আটক করা হয়। আটককৃতরা কলসিন্দুর আশেপাশের এলাকার স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের ইভটিজিং করে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। আটককৃত ইউসুফ(২০) কে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, বয়সের ব্যবধান থাকলে আটককৃত শিশু তার ঘনিষ্ঠ সহচর। যৌন কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্য ইউসুফ(২০) ও আটককৃত শিশু পরিকল্পিতভাবে ১৮ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় পূর্বে নুসরাত জাহান মীম (১১) এর বাড়ীর পার্শ্ববর্তী স্থানে অন্ধকারে অপেক্ষায় থাকে। মীম বাড়ি হতে বের হয়ে আসলে ইউসুফ ও আইনগত কারণে নাম প্রকাশ না করা শিশুটি নুসরাত জাহান মীম (১১) কে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক বাড়ির পার্শ্ববর্তী কলা বাগানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে ১৮ মার্চ রাত অনুমান পৌণে ৮টার দিকে নুসরাত জাহান মীম (১১) কে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিকটবর্তী নেতাই নদীতে লাশটি ভাসিয়ে দিয়ে ইউসুফ ও শিশুটি পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামি ইউসুফ ও আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশুটি ঘটনার বিষয়ে স্বীকারোক্তিসহ বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেছে।

ঘটনার সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃত শিশুটিকে শিশু আইন২০১৩ এর বিধিবিধান মেনে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আইনগত কারণে শিশুটির নাম পরিচয় প্রকাশ করা সমীচীন নয়। তাই প্রকাশ করা হলোনা।##

মতিউল আলম

LATEST POSTS