মঞ্জুরুল ইসলাম, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় একদিনে ৫০ শতাংশ (স্থানীয় হিসেবে ৫ কাঠা) জমির বোরো ধান কেটে অবাক করে দিলেন নুরুল আমীন নামে এক শ্রমিক। এ বাবদ ৩ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি পেয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ভোর ৫টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত একাই ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটেন নুরুল। তার ধান কাটা দেখতে ক্ষেতের চারপাশে কয়েকশ মানুষ ভিড় জমান।দিনমজুর নুরুল আমীন নান্দাইল সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটি সাভার গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, নান্দাইল সদর ইউনিয়নের ভাটি সাভার গ্রামে গোরস্থান বাজার এলাকায় চুন্নু মিয়া নামে এক কৃষকের ৫০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন আ. জলিল। অপরদিকে একই গ্রামের দিনমজুর নুরুল আমীন ধান কাটা শ্রমিক হিসেবে পরিচিত। তিনি একাই দৈনিক ২০ থেকে ৩০ শতাংশ জমি অনায়াসে কাটতে পারেন। তার এমন কর্মগুণে এলাকার বাসিন্দারা প্রশংসা করতেন।
আ. জলিল ধান কাটার জন্য শ্রমিক খুঁজছিলেন। এক পর্যায়ে ৭০০ টাকা কাঠায় ৫০ শতাংশ সাড়ে ৩ হাজার টাকায় নুরুল আমীনের সঙ্গে চুক্তি করেন। কিন্তু ৫০ শতাংশ জমির ধান একদিনে কাটার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ও এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে তার ধান কাটা নিয়ে বাজিও ধরেন।

মঙ্গলবার ভোর ৫টায় ধান কাটা শুরু করেন নুরুল আমিন। তার ধান কাটা দেখতে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গা থেকে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে কয়েকশ মানুষ ভিড় করে।স্থানীয় তোফায়েল আহমেদ বলেন, একদিনে ৫০ শতাংশ ধান কাটার রেকর্ড আমাদের এলাকায় নেই। বিষয়টি চারদিক ছড়িয়ে পড়লে নুরুলের ধান কাটা দেখতে কয়েকশ মানুষ জড়ো হন। বিকেলেই ধান কাটা শেষ হয়ে যায়। দেখতে আসা অনেকে নুরুল আমীনকে বকশিসও দিয়েছেন।
ধান কাটা শ্রমিক নুরুল আমীন বলেন, আমার সঙ্গে কেউ বাজি ধরে নাই। এলাকার কিছু মানুষ আমাকে বিরক্ত করতো। এ জেদ থেকে একদিনে ৫০ শতাংশ জমির ধান কেটেছি। পাঁচ কাঠা জমির ধান কাটার জন্য ৩ হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছি। আমি এতে খুশি। আমি চাই, মানুষ যেন আমার জন্য দোয়া করে।
বর্গাচাষি জলিল বলেন, এখানে বাজি ধরার কোনো বিষয় নেই। আমি তাকে ধান কাটার চুক্তি দিয়েছি। তিনি কতদিনে ধান কাটবে তার জন্য কোনো নিয়ম ছিল না। কিন্তু তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে জেদ করে একদিনেই ৫০ শতাংশ জমির ধান কেটে ফেলেছে। তিনি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

নান্দাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আমি নিজেও নুরুল আমীনের ধান কাটা দেখতে গিয়েছি। একদিনে ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটা খুব কঠিন কাজ। যা বিশ্বাসযোগ্য না। তবে নুরুল তা করে দেখিয়েছেন। তার ধান কাটা দেখার জন্য কয়েকশ মানুষ জড়ো হয়। শুনেছি নুরুলের ধান কাটা নিয়ে অনেকে বাজিও ধরেছেন।