
You must need to login..!
Description
স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আলোচিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। ঋণখেলাপির অভিযোগে আজ সকালে সাবেক এই মেয়রের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল আলম। এসময় গণমাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান জাহাঙ্গীর আলম। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান তিনি। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। ব্যাংকের পাওনার ইনস্টলমেন্ট (কিস্তি) জমা দেওয়ার কথা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দি দিয়েছে। তারপরও আপনারা যে কাজটি করলেন, তাতে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে।মনোনয়ন বাতিল করাকে অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনের যে নিরপেক্ষতা ছিল, তারা সেই নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছে। তারা কোন অদৃশ্য শক্তির চাপে সরে গেছে, আমি জানি না, তবে আমি ন্যায়বিচার চাই। আমি আপিল করব।প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টে যাব। আমি সবশেষ লড়ে যাব। আমি দেশবাসীর কাছে জানতে চাই, একজন প্রার্থী হিসেবে, একজন মানুষ হিসেবে ন্যায়বিচার পাব কি না।
জানা গেছে, গাজীপুরে নিউ টাউন সিটি ওয়্যার নামের একটি কোরিয়ান কোম্পানি অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড থেকে ১০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। সেখানে গ্যারান্টার বা জামিনদার হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) সেই ঋণের তথ্য দেয়। সেখানে খেলাপি ঋণ দেখানো হয়। এরপর সেই তথ্যের ভিত্তিতে মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
ঋণের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় কোরিয়ান মালিকানাধীন একটি কম্পোজিট কারখানা রয়েছে। সেই কোম্পানিতে একসময় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। মালিকপক্ষ বেতন দিতে পারে না। ওই কোম্পানির মধ্যে তাঁর কোনো শেয়ার নেই। কোনো লভ্যাংশও পান না। তবুও হাজার হাজার শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে তিনি নিজের সম্পদ দিয়েছেন। ব্যাংকে মর্টগেজ রেখে সেই কোরিয়ান মালিক ঋণ নিয়ে কারখানাটি চলমান রেখেছেন। তিনি ঋণের জামিনদার মাত্র। করোনা মহামারির কারণে কোরিয়ানরা ব্যাংকে যথাসময়ে ওই ঋণের কিস্তি দিতে পারেনি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি প্রার্থী হওয়ার পর ১১ ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল, তা পরিশোধ করেছে। কোরিয়ান কোম্পানি ১৭ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেসব কাগজপত্র আইনজীবী ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়েছে। তারপরও আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিলের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী জাহাঙ্গীর আলম ঋণখেলাপি। তবে জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেছেন, তিনি ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করেছেন। এসংক্রান্ত কাগজও তিনি দাখিল করেছেন। কিন্তু ব্যাংক যে এটি গ্রহণ করেছে, তা যথাযথ মনে হয়নি। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলো। নির্বাচন কমিশনে এ বিষয়ে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তাই তাঁকে আপিল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদুল ইসলাম বলেন, মেয়র পদে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ৩০০ জন সমর্থনকারীর স্বাক্ষরবিহীন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী অলিউর রহমান ও যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
যাচাই-বাছাই শেষে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, স্বতন্ত্র আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল, হারুন অর রশিদ, সরকার শাহানুর ইসলাম ও জায়েদা খাতুন এবং জাকের পার্টির রাজু আহমেদের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।