সেপ্টেম্বর মাস থেকে পাবনা-ঢাকা রুটে সরাসরি ট্রেন চালুর ঘোষণা- রাষ্ট্রপতির

image

You must need to login..!

Description

আঃ খালেক খান পিভিএম পাবনা থেকে,

আগামী সেপ্টেম্বর মাসে পাবনা-ঢাকা রুটে সরাসরি ট্রেন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পাবনাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনাদের দাবি-দাওয়া পূরণ শুরু হবে পাবনা থেকে ঢাকা রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু দিয়ে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে পাবনাবাসী ট্রেনে উঠে সরাসরি ঢাকায় যেতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা করা হবে। এতদিন পাবনা থেকে ঢাকা যেতে হলে ঈশ্বরদী হয়ে যেতে হতো। পাবনা-ঢাকা এক্সপ্রেস ট্রেনের নাম আপনারা ঠিক করেন। আপনাদের আমি এ দায়িত্ব দিয়ে গেলাম। এটা আগে করবেন আপনারা।এ ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন। ধাপে ধাপে পাবনাবাসীর বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আমার আগমন ঘিরে পাবনায় যে এইভাবে আয়োজন হবে তা কল্পনাও করিনি। পাবনাবাসীর এই উচ্ছ্বাসের ঋণ আমি কীভাবে শোধ করবো? আমি চির কৃতজ্ঞ। এই আয়োজন আমি জীবনেও ভুলবো না। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের স্মৃতিবিজড়িত এই ঐতিহাসিক মাঠে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আপনাদের এতো ভালোভাসা ও সম্মান পেয়ে আমি আবেগাপ্লুত আনন্দিত। ঢাকার বাহিরে প্রথম সফরেই নিজ জন্মস্থান পাবনায় আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এডওয়ার্ড কলেজের স্মৃতিবিজড়িত এই ঐতিহাসিক মাঠে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। কলেজে পড়াশোনা অবস্থায় কলেজ মাঠের অনেক স্মৃতি এখন মনে পড়ছে। এখান থেকে আমি ছাত্র রাজনীতি করেছি।

এর আগে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শুরু হওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির কাছে পাবনাবাসীর দীর্ঘ দিনের অপূর্ণ দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জাতীয় সংসদ সদস্যরা। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল পাবনা মেডিকেল কলেজকে হাসপাতালে রূপান্তর, পাবনা-ঢাকা রুটে সরাসরি ট্রেন চালু ও ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুর দাবি জানান।সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি পাবনার কাজিরহাট, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া দিয়ে ওয়াই সিস্টেমে সেতু এবং সরকারি এডওয়ার্ড কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি তুলে ধরেন। পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস ঈশ্বরদী সুগার মিল ও বিমানবন্দর চালুসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন,আমি ভেসে আসিনি,পাবনার রাজপথ থেকে বঙ্গভবনে গিয়েছি।আমি বঙ্গবন্ধুর ছোয়া পেয়েছি।আমাকে কারাগারে যেতে হয়েছে।চরম অত্যাচারিত হয়েছি।রাতের আঁধারে তুলে নেয়া হয়েছে। ডান্ডাবেড়ি পড়ানো হয়েছে। রাজপথের সক্রিয় হয়ে আমি বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাকশালের পাবনার জয়েন্ট সেক্রেটারি হয়েছিলাম।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গত ১৪ বছরের নানা অগ্রগতি ও পূর্বের অবস্থা মূল্যায়ন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা মুক্তিযুদ্ধের অসম্প্রদায়িক চেতনা ধ্বংস করেছিলেন।কিন্তু পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক চেতনা আবার ফিরে এসেছে।তিনি বলেন,পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে পরাস্ত করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। অনেক মন্ত্রী আমার কাছে এসে বিশ্বব্যাংকের দাবি মেনে নিতে বলেছিলেন।কিন্তু আমি রাজি হয়নি।এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল।স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল।কিন্তু আমি শক্ত হাতে মোকাবেলা করেছি।
এসময় তিনি পাবনা থেকে ঢাকায় সরাসরি ট্রেন চলাচলের ঘোষণা দেন‌।সঙ্গে সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন।ধাপে ধাপে পাবনাবাসীর দাবি পূরণে আশ্বাস দেন রাষ্ট্রপতি।পাবনার স্বর্ণসন্তান মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন,আমার আগমন ঘিরে পাবনায় যে এভাবে আয়োজন হবে তা কল্পনাও করিনি।পাবনাবাসীর এই উচ্ছ্বাসের ঋণ আমি কিভাবে শোধ করবো? আমি চির কৃতজ্ঞ হয়ে থাকো।এই আয়োজন আমি জীবনেও ভুলবো না।পাবনা এ্ডওয়ার্ড কলেজের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক মাঠে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আপনাদের এত ভালোবাসা পেয়ে আমি আবেগাপ্লুত আনন্দিত। ঢাকার বাহিরে প্রথম সফরেই নিজ জন্মস্থান পাবনায় আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।তিনি বলেন, স্বাধীনতা বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন।এর পেছনে রয়েছে অনেক সংগ্রামের ইতিহাস,যার নেতৃত্বে ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ এই পাবনার টাউন হল ময়দানে আমরা বাংলাদেশের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে আমি যোগ দেই মুক্তিযুদ্ধে।মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করেই যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছি।ত্রিশ লক্ষ মানুষ আর দুই লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা,পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ,একটি লাল-সবুজ পতাকা।এর আগে ৩টা ২৪ মিনিটে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন রাষ্ট্রপতি।এসময় দাঁড়িয়ে হাতে তালিয়ে কৃতিসন্তানকে বরণ করেন পাবনাবাসী।পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতসহ ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে ১৬ মে বিকেল ৩টা ২৭ মিনিটে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী ফাস্টলেডি রেবেকা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু,পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স,পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন,পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির,নারী সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি,পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল,নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অঞ্জন চৌধুরী,সদস্য সচিব-১ অধ্যাপক শিবজিত নাগ, সদস্য সচিব-২ আব্দুল মতীন খান এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.হাফিজা খাতুন।এর আগে চার দিনের সফরের দ্বিতীয় দিনে বেলা ১১টার দিকে পাবনার বিসিক শিল্পনগরীতে স্কয়ার সায়েন্স এন্ড লাইফ প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি।পরে দুপুর ১২টার দিকে পাবনা প্রেসক্লাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।