ময়মনসিংহে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ৭ বছর পর গ্রেফতার

ময়মনসিংহে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ৭ বছর পর গ্রেফতার

BMTV Desk No Comments

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানার চাঞ্চল্যকর শাহজাহান হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ সেকান্দার আলী (৪০) কে র‌্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ গ্রেফতার করেছে। আজ ১৮ মে ২০২৩ রাত আড়াইটার সময় র‌্যাব-১৪, সিপিএসসি, টিটিসি, ময়মনসিংহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার কাশিমপুুর থানার জিরানী এলাকা হতে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানার চাঞ্চল্যকর শাহজাহান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী সেকান্দার আলী (৪০)কে গ্রেফতার করে।

উল্লেখ্য, ফুলবাড়ীয়া থানার শ্রীপুর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে নিহত শাহজাহান (৫৫) ২য় বিয়ে করে একই থানার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে ২য় স্ত্রী নিয়ে বসবাস করতেন। ভিকটিম শাহজাহানের ২য় বিয়েকে কেন্দ্র করে তার প্রথম স্ত্রী সাজেদা খাতুনের সাথে দীর্ঘদিন থেকে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। উক্ত দ্বন্দের জেরে সাজেদা খাতুন গ্রেফতারকৃত আসামী সেকান্দার আলীকে টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে গত ০৫ আগস্ট ২০১৬খ্রি. তারিখ সন্ধ্যায় ৭টার সময় ভিকটিমের বসবাসরত রাঙ্গামাটিয়ার বাড়ীতে কৌশলে প্রবেশ করে এলোপাতারি কুপিয়ে ভিকটিম শাহজাহানের হত্যা নিশ্চিত করে লাশ বাড়ীর পাশের একটি পুরাতন কূপের মধ্যে ফেলে ঘটনাস্থল হতে চলে যায়।

উক্ত হত্যাকান্ড অন্যদিকে প্রভাবিত করার জন্য ভিকটিমের প্রথম স্ত্রী সাজেদা খাতুন নিজেই বাদী হয়ে ২য় স্ত্রী এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। জেলা গোয়েন্দা শাখা, ময়মনসিংহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ সেকান্দার আলীকে গ্রেফতার করেন। সেকান্দার আলীর দেওয়া তথ্য মতে ঘটনার তিন মাস পর ভিটিমের লাশ কূপ থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেন এবং আসামী সেকান্দার আলী উক্ত হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।

পরবর্তীতে এই মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আসামী সেকান্দার আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান এবং হত্যা করে লাশ গুম করার অপরাধে আরো ০৭ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। আসামী জামিনে মুক্তি পেয়ে দীর্ঘ ০৭ (সাত) বছর যাবৎ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের পরিচয় গোপন করে গাঁ ঢাকা দিয়ে ছদ্মবেশে পালিয়ে ছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনার তিনমাস পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে মূল রহস্য উদঘাটন করে। সে সময় ঘটনার সাথে জড়িত সেকান্দার গ্রেপ্তার হন। সেকান্দার আলীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহজাহানের মরদেহ কুয়া থেকে উদ্ধার করা হয়। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দেন তিনি।
‘তবে ওই বছরই সেকান্দার জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এদিকে সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং হত্যা করে মরদেহ গুম করার অপরাধে আরও সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।’

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেকান্দারকে গ্রেপ্তার করতে র‌্যাবের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছিল। বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে দীর্ঘ সাত বছর দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের পরিচয় গোপন করে গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে ছিল।’

সেকান্দার আলীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।