ফুলবাড়ীয়ায় ক্যান্সারের প্রাকৃতিক কেমোথেরাপি করোসল চাষ !

ফুলবাড়ীয়ায় ক্যান্সারের প্রাকৃতিক কেমোথেরাপি করোসল চাষ !

BMTV Desk No Comments

এনায়েতুর রহমান,ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) থেকে ঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় ক্যান্সারের প্রাকৃতিক কেমোথেরাপি করোসল ফলের চাষ হচ্ছে। করোসল ক্যান্সার প্রতিরোধী হিসেবে পরিচিত। করোসল অ্যানোনা মিউরিকাটা গোত্রের একটি ফল যা অনেক ক্ষেত্রেই ক্যামো থ্যারাপির কাজ করে থাকে। ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি অন্যতম। উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে ‘কিষাণ সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ ‘ নামের একটি কৃষি খামারের উদ্যোক্তা ড. আবু বকর ছিদ্দিক মূলত, দেশী, বিদেশী ফল বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য বেশ পরিচিতি পেয়েছে।
কৃষি নিয়ে তাঁর বিভিন্ন কর্মকান্ড প্রমাণ করে তিনি এ কাজে গর্ববোধ করেন। কৃষি কাজের পাশাপাশি একটা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক তিনি। তাঁর এ প্রচেষ্টা তরুণদের কৃষিকাজে উৎসাহিত করতে অনুপ্রেরণা যোগায়। প্রায় ছয় একর জমিতে মানবদেহের উপকারি ঔষধি-ফলজ-বনজ ১৬৫ প্রকারের প্রায় ৩ হাজার গাছ রয়েছে। সরজমিনে ড. আবু বকর ছিদ্দিক এর বাগান ঘুড়ে দেখা যায় বিভিন্ন ফলের সমারহ, এ যেন ফলের রাজ্যে এসেছি। প্রতিনিয়ত ৬ জন শ্রমিকের সাথে তিনিও কাজ করেন। ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে এ ফলের পক্ষে বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। অনেক দেশেই এ ফলটি ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল হিসেবে পরিচিত।
ড. আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ২০১৭ সালে আমাকে একজন ফোন করে তার বোনের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য এই করোসল ফলটি চায়। তার বোনের ক্যান্সারের চিকিৎসার পর সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক দেশে নিয়ে কেমোথেরাপি না দিয়ে করোসল ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। আমি নিজেও এই ফল সম্পর্কে কিছু জানতাম না। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েব সাইডে করোসল বিষয়ে কিছুটা জানতে পারি। পরবর্তীতে আমি স্যোসাল মিডিয়ায় চারা বা বীজের সহযোগীতা চেয়ে একটি পোস্ট দেই। আমার এক বন্ধু সাড়া দেয়, তখন সে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছিলেন। থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে এসে আমাকে করোসলের ৪০টি বীজ দেয়। ৪০টি বীজ বপন করায় চল্লিশটি চারা হয় আমি বিনা মুল্যে ৩২টি চারাগাছ বিতরন করি, বাকী ৮টি চারা আমি আমার বাগানে লাগাই।
তিনি আরও বলেন, বাজারে এর দাম ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা কেজি, আমি এই ফল বিক্রি করবো না, চিকিৎসার জন্য যে কেউ চাইলে আমি তাকে দিব। হঠাৎ করে করোসল গাছের পাতার চাহিদা রেড়ে যায়। আমি আজকে পর্যন্ত ৭০ জনের কাছে নিজে টাকা খরচ করে কোরিয়ান সার্ভিসের মাধ্যমে পার্সেল পাঠাই, এখন গাছ মরা গাছের মত হয়ে গেছে আবার গাছও বাঁচাতে হবে। প্রতি গাছে ১২টি পাতা রেখে বাকী সবগুলো পাতা বিতরন করে দিয়েছি।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাঃ হারুন আল মাকসুদ বলেন, আমি চিকিৎসা শাস্ত্রে এমন কিছু পাইনি, তবে করোসল গাছে রয়েছে অ্যানোনাসিয়াস অ্যাস্টোজেনিন নামে এক ধরনের যৌগ। এই যৌগ ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি রুখে দেয়, যা কেমোথেরাপির মত কাজ করে। ফলে ক্যান্সার কোষ আর বাড়তে পারে না। নিয়মিত এই ফল খেতে পারলে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যায়।